সংগৃহীত ছবি
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীবাহী নৌকা ও সেনা ঘাঁটিতে পৃথক এই হামলার ঘটনায় ৬৪ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪৯ জন বেসামরিক নাগরিক। বাকি ১৫ জন সেনা সদস্য।
এই ঘটনায় তিনদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে দেশটিতে।
দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা উত্তর-পূর্ব মালির একটি নদীতে নৌকায় হামলা চালিয়ে অন্তত ৪৯ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। এছাড়া একই জঙ্গিরা একটি সেনা ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ১৫ জন সৈন্যকে হত্যা করে।
হামলার সময় প্রায় ৫০ জন জঙ্গিও মারা গেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় সরকার তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ান ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সৈন্যরা দেশটির অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মোড় সেনাবাহিনীর দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে বলে সামরিক বাহিনীর দাবি সত্ত্বেও সেখানে এখনও জঙ্গিদের হুমকি বাড়ছে। মালির উত্তরাঞ্চলীয় শহর টিমবুকটু গত মাসের শেষের দিক থেকে অবরোধের মধ্যে রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে পরিবহনেও বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে।
জানা গেছে, নাইজার নদীতে গাও শহর থেকে মোপ্তির দিকে যাওয়ার সময় জঙ্গিরা বেসামরিক নাগরিকদের বহনকারী একটি নৌকায় হামলা চালায়। পরে গাও অঞ্চলের বুরেম সার্কেলে একটি সেনা ক্যাম্পেও হামলা চালায় জঙ্গিরা।
মালির সেনাবাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছে, বেলা ১১টার দিকে ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ নৌকাটিতে আক্রমণ করে।
হামলার শিকার নৌকাটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কোমানভ নামক সংস্থা জানিয়েছে, নৌকাটির ইঞ্জিন লক্ষ্য করে অন্তত তিনটি রকেট হামলা চালানো হয়েছে। অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোমনাভের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, নৌকাটি নদীতে স্থির অবস্থায় ছিল এবং সেনাবাহিনী যাত্রীদের সরিয়ে নিতে গিয়েছিল।
২০২০ সাল থেকে মালি শাসন করছে সামরিক জান্তা। নিরাপত্তাহীনতা বাড়তে থাকায় দেশটিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে পরপর দুটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের পর জান্তা যখন ক্ষমতা দখল করে তখন তাদের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন ছিল।
মূলত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিতর্কিত নির্বাচন এবং দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তাহীনতায় ক্ষুব্ধ ছিল জনগণ। এরপর থেকে মালির সামরিক সরকার দেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণকারী ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সূত্র: বিবিসি