মরক্কো ভূমিকম্প: পুরোপুরি মাটিতে মিশে গেছে যে গ্রাম

সংগৃহীত ছবি

শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর পশ্চিম ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল। ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুই হাজার ১২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় এখনও নিখোঁজ দুই হাজার চার শতাধিক।

 

ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে দেশটির গ্রামের পর গ্রাম ও শহরের পর শহর।

 

তেমনই একটি গ্রাম তিখত। ভূমিকম্পে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় ১০০ পরিবার অধ্যুষিত গ্রামটি। উদ্ধারকর্মীরা ওই গ্রামের ধ্বংসস্তুপ সরানোর কাজ শুরু করেছেন। রবিবার তেমনই ধ্বংসস্তুপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী ওমর এইত এমবেরেক। কাঁদতে পারছিলেন না তিনি। কিন্তু তীব্র কষ্টে সজল হয়ে ওঠা চোখে উদ্ধার তৎপরতা দেখছিলেন তিনি। 

আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা ‘এএফপি’ প্রতিবেদক তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে প্রথমে সাড়া দেননি ওমর। একপর্যায়ে তিনি বলেন, “আপনি আমার কাছে কী জানতে চান? আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

 

পরে ধীরে ধীরে তিনি জানান, এখন তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন— সেটি তার বাগদত্তা মিনা এইত বিহির বাড়ি। আর এক সপ্তাহ পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাদের।

 

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ভূমিকম্প হওয়ার আগমুহূর্তেও মোবাইল ফোনে ওমরের সঙ্গে কথা বলছিলেন মিনা। ভূমিকম্প শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তাদের মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

 

উদ্ধারকারী বাহিনীর কর্মীরা তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তুপ থেকে মিনার মরদেহ উদ্ধার করেছে। ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা সরিয়ে যখন মিনাকে উদ্ধার করা হয়, সেসময়ও তার হাতে মোবাইল ফোন ধরা ছিল। সেই ফোনটি ওমরকে হস্তান্তর করেছেন কর্মীরা।

 

ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া মরক্কোর বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের মতো তিখতও এখন ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা, ভাঙাচোরা বাসন-কোসন, পরিত্যক্ত জুতা প্রভৃতি নানা জঞ্জালে ভর্তি।

 

ভূমিকম্পে নিজের পরিবারের সদস্যদের হারানো তিখতের আরেক বাসিন্দা মহসিন আকসুম (৩৩) বলেন, “এখানে জীবন শেষ হয়ে গেছে। এই গ্রাম এখন মৃত।” সূত্র: আরব নিউজ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাতের অন্ধকারে ‘জিনের আসর’ বসিয়ে নেতা নির্বাচন করে জামায়াত: আজিজুল বারী হেলাল

» ক্ষমতায় গেলে নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করবে জামায়াত

» কেউ যেন বিএনপির নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পারে: তারেক রহমান

» বুক ফুলিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন করুন: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপদেষ্টা

» জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল আন্দোলন নয়, ন্যায় প্রতিষ্ঠারও সংগ্রাম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» বসুন্ধরা টয়লেট্রিজ লিমিটেডের সেলস মিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত

» সাসটেইনেবল এসএমই ফাইন্যান্সিয়ার অব দ্য ইয়ার সম্মাননা পেলো ব্র্যাক ব্যাংক

» ইসলামপুরে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি এড. মোহাম্মদ সেলিম মিয়া’র গণ সংযোগ লিফলেট বিতরণ

» অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার দায় নিতে হচ্ছে এনসিপিকে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

» দেশের অর্থনীতি ‘ফোকলা’ করে দিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ: মঈন খান

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মরক্কো ভূমিকম্প: পুরোপুরি মাটিতে মিশে গেছে যে গ্রাম

সংগৃহীত ছবি

শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর পশ্চিম ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল। ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুই হাজার ১২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় এখনও নিখোঁজ দুই হাজার চার শতাধিক।

 

ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে দেশটির গ্রামের পর গ্রাম ও শহরের পর শহর।

 

তেমনই একটি গ্রাম তিখত। ভূমিকম্পে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় ১০০ পরিবার অধ্যুষিত গ্রামটি। উদ্ধারকর্মীরা ওই গ্রামের ধ্বংসস্তুপ সরানোর কাজ শুরু করেছেন। রবিবার তেমনই ধ্বংসস্তুপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী ওমর এইত এমবেরেক। কাঁদতে পারছিলেন না তিনি। কিন্তু তীব্র কষ্টে সজল হয়ে ওঠা চোখে উদ্ধার তৎপরতা দেখছিলেন তিনি। 

আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা ‘এএফপি’ প্রতিবেদক তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে প্রথমে সাড়া দেননি ওমর। একপর্যায়ে তিনি বলেন, “আপনি আমার কাছে কী জানতে চান? আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

 

পরে ধীরে ধীরে তিনি জানান, এখন তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন— সেটি তার বাগদত্তা মিনা এইত বিহির বাড়ি। আর এক সপ্তাহ পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাদের।

 

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ভূমিকম্প হওয়ার আগমুহূর্তেও মোবাইল ফোনে ওমরের সঙ্গে কথা বলছিলেন মিনা। ভূমিকম্প শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তাদের মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

 

উদ্ধারকারী বাহিনীর কর্মীরা তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তুপ থেকে মিনার মরদেহ উদ্ধার করেছে। ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা সরিয়ে যখন মিনাকে উদ্ধার করা হয়, সেসময়ও তার হাতে মোবাইল ফোন ধরা ছিল। সেই ফোনটি ওমরকে হস্তান্তর করেছেন কর্মীরা।

 

ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া মরক্কোর বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের মতো তিখতও এখন ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা, ভাঙাচোরা বাসন-কোসন, পরিত্যক্ত জুতা প্রভৃতি নানা জঞ্জালে ভর্তি।

 

ভূমিকম্পে নিজের পরিবারের সদস্যদের হারানো তিখতের আরেক বাসিন্দা মহসিন আকসুম (৩৩) বলেন, “এখানে জীবন শেষ হয়ে গেছে। এই গ্রাম এখন মৃত।” সূত্র: আরব নিউজ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com