ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে পৌনে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, চেক জালিয়াতি এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী।
গ্রেফতাররা হলেন- দেওয়ান এএসএম রেজাউর রহমান, মো. শাহাজাহান এবং কাজী ওহিদুল হোসেন বাপ্পী।
সোমবার রাতে সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সোনালী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রার্থীদের প্রতারিত করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাত করেছে। পরে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতা দেওয়ান এএসএম রেজাউর রহমানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মো. কামরুজ্জামান জানান, দেওয়ান এ এস এম রেজাউর রহমান এই প্রতারক চক্রের মূলহোতা। তার সঙ্গে ২০২০ সালের এপ্রিলে মাকসুদ আলম নামে এক যুবকের পরিচয় হয়। তখন রেজাউর রহমান মাকসুদকে জানান, সোনালী ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার পদে লোক নিয়োগ করা হবে। তিনি সেখানে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারবেন। তবে এতে জনপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে রেজাউর রহমানকে।
প্রতারক রেজাউর রহমানের কথায় বিশ্বাস করে মাকসুদ আলম তার ভাগ্নে মো. হাসান ও তাদের পরিচিত মফিজুর রহমানের চাকরি দেওয়ার জন্য মোট পৌনে ১৩ লাখ টাকা দেন। ওই টাকার নেওয়ার সময়ে জমানত হিসেবে রেজাউর রহমান তার ব্যাংকের হিসাব নম্বরের ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকার একটি চেক দেন।
২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ভাইভা হবে বলে ডেকে এনে প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে একটি হোটেলে বসিয়ে ভাইভা নেন। এছাড়াও ওই বছরের ২ ডিসেম্বর মতিঝিল প্রিন্সিপাল শাখায় যোগদানের জন্য তিনজনকে তিনটি ভুয়া নিয়োগপত্র দেয় চক্রটি।
এরপর মাকসুদ, হাসান ও মফিজুর ওই নিয়োগপত্র নিয়ে যোগদানের জন্য মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চাকরিতে যোগদান করতে যান। তখন তারা জানতে পারেন, তাদেরকে দেওয়া তিনটি নিয়োগপত্রই ভুয়া। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন, এমন ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে আরও ১০ থেকে ১২ জন ভুক্তভোগী ব্যাংকে যোগদান করতে এসে ফিরে গেছেন।
এরপরই তারা বুঝতে পারেন যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তখন ভুক্তভোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন সময় ফোন করে চাকরির বিষয়ে বলেন। তবে তারা একেক সময় একেক কথা বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে টাকা দিতে অস্বীকার করে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাকসুদ আলম রামপুরা থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত করে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনজন গ্রেফতারকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।, সূএ:জাগো নিউজ