বিচার কার্যে দুর্নীতির আশ্রয়ে যে পরিণতি

যেকোনো বিষয়ে ইসলামের সিদ্ধান্ত বা রায়কে বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগ করাকে ইসলামের বিচার ব্যবস্থার মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে।

 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالأَنفَ بِالأَنفِ وَالأُذُنَ بِالأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَّهُ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

‘আমি এ গ্রন্থে তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং যখম সমূহের বিনিময়ে সমান যখম। অতঃপর যে ক্ষমা করে, সে গোনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম।’ (সূরা: মায়েদা, আয়াত: ৪৫)।

 

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, ‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুসারে বিচার ও শাসন করে না,তারা ফাসেক।’ (সূরা মায়েদা-৪৭)।

 

তারহা বিন ওবায়দুল্লাহ বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে বিচারক বা শাসক আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অনুসারে ফায়সালা করে না, আল্লাহ তার নামাজ কবুল করে না। (হাকেম)।

 

হজরত যুবায়দা (রা) বর্ননা করেন: রাসূল (সা.) বলেন, ‘বিচারক তিন প্রকারের: তন্মধ্যে দুই প্রকারের যাবে জাহান্নামে। আর এক প্রকার যাবে জান্নাতে। যে বিচারক সত্য ও ইনসাফ কী, তা জানে এবং তদনুযায়ী বিচার করে সে জান্নাতে যাবে। আর যে বিচারক সত্য ইনসাফ কী, তা জানে না, জানলেও সেই অনুযায়ী বিচার করে না, অথবা স্বীয় প্রবৃত্তির তাড়নায় বিচার করে, এরা উভয়েই জাহান্নামী। জিজ্ঞাসা করা হলো যে, সে জানেনা তার কী দোষ?’ (হাকেম, আবু দাউদ, তিরমিযী)।

 

আবু হুরায়রা (রা) বলেন, ‘যাকে বিচারক নিয়োগ দেয়া হলো তাকে যেন ছুরি ছাড়াই যবাই করা হলো।’ হজরত ফযীল বিন ইয়ায বলেন, ‘একজন বিচারপতির উচিত একদিন বিচারকার্য পরিচালনা করা। আর এক দিন নিজের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করে কান্নাকাটি করা।’ ইমাম মুহাম্মাদ বিন ওয়াসে (রহ.) বলেন, কিয়ামতের দিন সবার আগে বিচারকদেরকেই হিসাবের জন্য ডাকা হবে।’

 

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দুর্নীতি পরায়ণ বিচারক জান্নাত থেকে বহু দূরে জাহান্নামের পিচ্ছিল স্থানে জীবন যাপন করবে।’

হজরত আলী (রা.) বলেন, রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক শাসক ও বিচারককে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে পুলসিরাতে দাঁড় করিয়ে সমগ্র মানব জাতির কাছে তার গোপন  আমলনামা পাঠ করা হবে। অতঃপর সে যদি ন্যায়বিচারক সাবস্ত্য হয়, তবে তাকে আল্লাহ মুক্তি দেবেন। নচেত পুলসিরাতসহ সে জাহান্নামে পতিত হবে।

সূূূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ দুর্গাপূজা এক মণ্ডপে ২০০-র বেশি প্রতিমা-বিগ্রহ! লাখো ভক্তের সমাগমের প্রস্তুতি

» সিটি ব্যাংক ও গার্ডিয়ানের অংশীদারিত্বে প্রথমবারের মত ব্যাংকিং অ্যাপ থেকে ইন্স্যুরেন্স পলিসি কিনতে পারবেন গ্রাহকেরা

» ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিজিটাল বীমা পলিসি ডক্যুমেন্ট প্রদানের সেবা চালু করল মেটলাইফ বাংলাদেশ

» নওগাঁয় মহিলাসহ ৪ ভুয়া পুলিশ আটক

» প্রাইম ব্যাংক ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স-এর মধ্যে পেরোল ব্যাংকিং চুক্তি স্বাক্ষর

» ইসির ২ আইন সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন

» কল্কির সিক্যুয়েল থেকেও বাদ পড়লেন দীপিকা

» সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন

» বাংলাদেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করেছে: টুকু

» বায়তুল মোকাররম এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ শুরু

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিচার কার্যে দুর্নীতির আশ্রয়ে যে পরিণতি

যেকোনো বিষয়ে ইসলামের সিদ্ধান্ত বা রায়কে বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগ করাকে ইসলামের বিচার ব্যবস্থার মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে।

 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالأَنفَ بِالأَنفِ وَالأُذُنَ بِالأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَّهُ وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أنزَلَ اللّهُ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

‘আমি এ গ্রন্থে তাদের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং যখম সমূহের বিনিময়ে সমান যখম। অতঃপর যে ক্ষমা করে, সে গোনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম।’ (সূরা: মায়েদা, আয়াত: ৪৫)।

 

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, ‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুসারে বিচার ও শাসন করে না,তারা ফাসেক।’ (সূরা মায়েদা-৪৭)।

 

তারহা বিন ওবায়দুল্লাহ বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে বিচারক বা শাসক আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অনুসারে ফায়সালা করে না, আল্লাহ তার নামাজ কবুল করে না। (হাকেম)।

 

হজরত যুবায়দা (রা) বর্ননা করেন: রাসূল (সা.) বলেন, ‘বিচারক তিন প্রকারের: তন্মধ্যে দুই প্রকারের যাবে জাহান্নামে। আর এক প্রকার যাবে জান্নাতে। যে বিচারক সত্য ও ইনসাফ কী, তা জানে এবং তদনুযায়ী বিচার করে সে জান্নাতে যাবে। আর যে বিচারক সত্য ইনসাফ কী, তা জানে না, জানলেও সেই অনুযায়ী বিচার করে না, অথবা স্বীয় প্রবৃত্তির তাড়নায় বিচার করে, এরা উভয়েই জাহান্নামী। জিজ্ঞাসা করা হলো যে, সে জানেনা তার কী দোষ?’ (হাকেম, আবু দাউদ, তিরমিযী)।

 

আবু হুরায়রা (রা) বলেন, ‘যাকে বিচারক নিয়োগ দেয়া হলো তাকে যেন ছুরি ছাড়াই যবাই করা হলো।’ হজরত ফযীল বিন ইয়ায বলেন, ‘একজন বিচারপতির উচিত একদিন বিচারকার্য পরিচালনা করা। আর এক দিন নিজের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করে কান্নাকাটি করা।’ ইমাম মুহাম্মাদ বিন ওয়াসে (রহ.) বলেন, কিয়ামতের দিন সবার আগে বিচারকদেরকেই হিসাবের জন্য ডাকা হবে।’

 

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দুর্নীতি পরায়ণ বিচারক জান্নাত থেকে বহু দূরে জাহান্নামের পিচ্ছিল স্থানে জীবন যাপন করবে।’

হজরত আলী (রা.) বলেন, রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক শাসক ও বিচারককে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে পুলসিরাতে দাঁড় করিয়ে সমগ্র মানব জাতির কাছে তার গোপন  আমলনামা পাঠ করা হবে। অতঃপর সে যদি ন্যায়বিচারক সাবস্ত্য হয়, তবে তাকে আল্লাহ মুক্তি দেবেন। নচেত পুলসিরাতসহ সে জাহান্নামে পতিত হবে।

সূূূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com