রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আজ (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘অগ্নি-সন্ত্রাসের আর্তনাদ : স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার দাবি’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত পুরো দেশে আগুন-সন্ত্রাস চালিয়ে নিরীহ মানুষদেরকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে বিএনপি পুনরায় পুলিশের ওপর বোমা হামলা ও জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।
বিএনপি-জামায়াত তাদের পুরোনো চেহারায় ফিরে গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এরা এদের পুরোনো চেহারায় ফিরে গেছে। বিএনপি-জামায়াতের এসব আগুন সন্ত্রাসীদেরকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এদের সেই অগ্নি-সন্ত্রাস আর যেন কখনো ফিরে না আসে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজনীতির নামে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি-সন্ত্রাস এবং নৃশংস বর্বরতা এদেশের মানুষ কখনোই ভুলবে না। সেই নৃশংস বর্বরতার ঘটনা দেশবাসী যেন ভুলে না যায় এবং সেই দিন যেন কখনোই ফিরে না আসে, সেজন্য সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিএম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমান, অ্যাড. খোদেজা নাসরিন, শহীদ খালেদ মোশাররফের বোন রীণা মোশাররফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, রুহুল আমিন মজুমদার, দেওয়ান কামাল প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি-সন্ত্রাসের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। প্রায় ২০ জন আগুনে দগ্ধ ব্যক্তি উপস্থিত থেকে বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা বর্ণনা করেন।
আলোচনা সভা ও অগ্নি-সন্ত্রাসের তথ্যচিত্র প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো-
১। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে দেশব্যাপী পুলিশের ওপর বোমা হামলা, ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত হাজার হাজার গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ, ৫০০ জন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, অগ্নি-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপরাধে বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা ও দলীয় নিবন্ধন বাতিলসহ এদের রাজনীতি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
২। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, অগ্নি-সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদেরকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে।
৩। কমিশন গঠনের মাধ্যমে ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিক হত্যার অপরাধে অবৈধ সামরিক শাসক খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।
৪। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আন্দোলনের নামে পুরো দেশে আগুন দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অপরাধে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদেরকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে।
৫। জঙ্গিবাদ, অগ্নি-সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ধর্ষণ ও বোমা হামলার মদদদাতা বিদেশে পলাতক আসামি খাম্বা তারেক রহমানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে।