বরগুনা-ঢাকা রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

 

ঢাকা-বরগুনা রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রী সংকটের কারণে আজ থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচলরত এম কে শিপিং লাইন্সের বরগুনা ঘাটের ম্যানেজার মো. এনায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর বরগুনা থেকে সড়কপথে মাত্র ছয় ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। কিন্তু লঞ্চে সময় লাগে বেশি। এ কারণে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর থেকেই আমরা যাত্রী সংকটে ভুগছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় দিনের পর দিন আমরা লোকসান গুনেছি। কিন্তু এখন আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তাই নিরুপায় হয়ে লাগাতার লোকসান এড়ানোর জন্যই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় এ রুটে চলাচলরত যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করার পাশাপাশি কম ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করা হতো। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিকল্প মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করতে হবে ব্যবসায়ীদের। এতে বহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বরগুনা বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে আমরা নিয়মিত লঞ্চে পণ্য পরিবহন করে থাকি। লঞ্চে পণ্য পরিবহন যেমন নিরাপদ ঠিক তেমনি ভাড়াও কম। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বিকল্প পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন করতে হবে। এতে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। তাই পণ্যের দামও বেড়ে যাবে।

বরগুনা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আল-আমিন তালুকদার বলেন, আমি বাসে যাতায়াত করতে পারি না। বাসে যাতায়াত করলে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই নিয়মিত লঞ্চে যাতায়াত করি। আমার মতো এরকম অসংখ্য যাত্রী রয়েছেন যারা বাসে যাতায়াত করতে পারেন না। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেসব যাত্রীর ভোগান্তি কয়েকগুণে বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও অনেক অসুস্থ রোগী আছেন যাদেরকে বরগুনা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা যেতে হয়। বাসে যেতে পারেন না বলে তাদেরকে লঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। সেইসব রোগীও ভোগান্তিতে পড়বেন।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, বরগুনার ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে লঞ্চ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শুধু কম ভাড়াই নয়, লঞ্চ ভ্রমণ একটি আনন্দদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণও। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমাদের সবাইকে সহনশীল হতে হবে : রিজভী

» সাংবাদিকদের সত্য উদ্ঘাটন ও প্রকাশে নির্ভীক হতে হবে: কাদের গনি চৌধুরী

» জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সবাইকে কাজ করার আহ্বান তারেক রহমানের

» ঐকমত্য কমিশনের ১১৩ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত এনসিপি

» প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে চুক্তি নয়, সমঝোতা স্মারক সই হবে

» ‘দারিদ্র্য নিরসনে জাকাত সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা’

» জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানে সেনাবাহিনীর ইফতার

» নতুন বাংলাদেশ গড়তে সঠিক তথ্য জানতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

» বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় জামালপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের দোয়া মাহফিল

» ডিসি এসপি পরিচয়ে মোবাইল কোর্ট প্রতারক মনির হোসেন জুইস পুলিশের হাতে আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বরগুনা-ঢাকা রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

 

ঢাকা-বরগুনা রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রী সংকটের কারণে আজ থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচলরত এম কে শিপিং লাইন্সের বরগুনা ঘাটের ম্যানেজার মো. এনায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর বরগুনা থেকে সড়কপথে মাত্র ছয় ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। কিন্তু লঞ্চে সময় লাগে বেশি। এ কারণে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর থেকেই আমরা যাত্রী সংকটে ভুগছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় দিনের পর দিন আমরা লোকসান গুনেছি। কিন্তু এখন আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তাই নিরুপায় হয়ে লাগাতার লোকসান এড়ানোর জন্যই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় এ রুটে চলাচলরত যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করার পাশাপাশি কম ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করা হতো। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিকল্প মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করতে হবে ব্যবসায়ীদের। এতে বহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বরগুনা বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ঢাকা থেকে আমরা নিয়মিত লঞ্চে পণ্য পরিবহন করে থাকি। লঞ্চে পণ্য পরিবহন যেমন নিরাপদ ঠিক তেমনি ভাড়াও কম। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বিকল্প পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন করতে হবে। এতে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। তাই পণ্যের দামও বেড়ে যাবে।

বরগুনা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আল-আমিন তালুকদার বলেন, আমি বাসে যাতায়াত করতে পারি না। বাসে যাতায়াত করলে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই নিয়মিত লঞ্চে যাতায়াত করি। আমার মতো এরকম অসংখ্য যাত্রী রয়েছেন যারা বাসে যাতায়াত করতে পারেন না। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেসব যাত্রীর ভোগান্তি কয়েকগুণে বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও অনেক অসুস্থ রোগী আছেন যাদেরকে বরগুনা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা যেতে হয়। বাসে যেতে পারেন না বলে তাদেরকে লঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। সেইসব রোগীও ভোগান্তিতে পড়বেন।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, বরগুনার ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে লঞ্চ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শুধু কম ভাড়াই নয়, লঞ্চ ভ্রমণ একটি আনন্দদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণও। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com