পুরান ঢাকার বাহারি ইফতারিতে ফিরেছে রাজধানীবাসী

দীর্ঘ দুই বছর পর করোনা থেকে মুক্ত হয়ে সশরীরে মাহে রমজানের সব অনুষঙ্গ পালন করতে পারায় এই রমজান আগের মতো উৎসবে পরিণত হয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে। সেই সঙ্গে পুরান ঢাকার বাহারি ইফতারে ফিরেছে নগরবাসী, যা গত দুই বছরে করোনার কারণে দেখা যায়নি।

 

মুসলমানদের সিয়াম সাধনার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষঙ্গ ইফতারি। রোজার প্রথম দিকে রাজধানীর অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে পাড়া-মহল্লার টং দোকান পর্যন্ত সর্বত্র রকমারি ইফতারি।

 

গত বছর মসজিদে মুসল্লিরা পাঁচজনের বেশি নামাজ পড়তে পারেনি। কোথাও কোথাও ইফতার বা সেহরি পার্টি ছিল না। গত রোজায় কিছুটা শিথিল হলেও পুরোপুরি ছিল না। তবে এবার করোনার প্রকোপও কম, নেই বিধিনিষেধও। এ কারণে এবার রোজায় সবাই সমবেতভাবে তারাবি যেমন পড়তে পারছেন, সেই সঙ্গে জমেছে ইফতার-সেহরি অনুষ্ঠানের সংস্কৃতিও।

 

পবিত্র রমজানের দ্বিতীয়দিন সোমবার পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই ইফতারকে ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠেছে। এই ইফতার বাজারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ঠোঙ্গা ভরে নিয়ে যায়, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। ৩৬টি উপাদান ও ১৮টি মশলা দিয়ে তৈরি করা হয় এ খাবার। এর মধ্যে গরুর মগজ, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুঁচি, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, ডিম, আলু, ঘি, বুটের ডাল এবং চিড়া অন্যতম। আর খাশির মাংস দিয়ে তৈরি সুতি কাবাব ১২শ’ টাকা এবং গরুর মাংসের তৈরি কাবাব বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।

বাজার ঘুরে আরে দেখা গেছে, দুপুরের পরপরই পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মজাদার সব ইফতার সামগ্রী কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। বেলা যতই গড়ায়, ততই বাড়ে ক্রেতার সমাগম। ফুটপাত, রেস্টুরেন্ট, পাড়া-মহল্লার গলিপথেও ইফতারির ছোট-বড় দোকান বসে। কোথাও কোথাও রাস্তা দখল করে বসানো হয়েছে ইফতারির দোকান। বাঁশ আর টেবিল বসিয়ে পুরো ফুটপাত দখলে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সর্বত্রই ক্রেতাদের আকর্ষণে চলছে বাহারি রং আর স্বাদের ইফতারি আইটেম তৈরির প্রতিযোগিতা। দুপুর থেকে ইফতারির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ইফতারের নগরীতে পরিণত হয়েছে চকবাজার।

 

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ইফতার বাজার একেবারেই মন্দা গেছে। কিন্তু এবারের রোজায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সবমিলে এবার ইফতার বাজার গত দুইবারের তুলনায় ভালো যাবে বলে আশা করছেন চকবাজার ইফতারের দোকানীরা।

 

রোজাদারদের ইফতারের আয়োজন করতে রাজধানীজুড়ে এখন এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবার রোজা গরমের সময় হওয়ায় ইফতারিতে বিভিন্ন পদ যোগ হচ্ছে।

 

চকবাজারের আপেল কনফেকশনারির ম্যানেজার মো.কাউসার বলেন,গতদুই বছরে পরে পুরান ইফতারে বাজার আবার জমে ওঠেছে। এবছরে ইফতারির গরমের কারণে এ বছর তালিকায় লেবু এবং টকজাতীয় কয়েকটি আইটেম যোগ হবে। এগুলো মোটামুটি ভালো চলছে,এর মধ্যে দইবড়া বেশি বিক্রি হচ্ছে।

 

হালিম মিয়া চকবাজারে গত ৩০ বছর ধরে বাহারি ইফতার বিক্রি করেন। তিনি বলেন, গরুর মাংস দিয়ে তৈরি এই কাবাব প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা, খাশির মাংস দিয়ে তৈরি কাবাব ১২শত টাকায় বিক্রি। এ বছর সবকিছুর দাম একটু বেশি তাই কাস্টমার কম মনে হচ্ছে।

 

আমি গত ৩০ বছর যাবৎ রমজানে এই সুতি কাবাব বিক্রি করছি। শুরুতে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলেও দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় ৩০ বছর পর এখন ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সামনে আরো বিক্রি আরো বাড়বে বলে আমি আশা করি।

 

চকবাজারের ফুটপাতের দোকানদার জহির বলেন, গরুর মাংসের দাম বেশি। ফলে এই মাংস দিয়ে যেসব খাবার তৈরি হয়, সেগুলোর দাম একটু বেশি।, চকবাজারের ইফতারিতে এমন কিছু পদ আছে যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এ ছাড়া এখানকার খাবারের মধ্যে এক ধরনের মুঘল আমলের নবাবি স্বাদ ও আমেজ রয়েছে। এখানকার ইফতারের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। তবে ঐতিহ্যেরও একটা মূল্য আছে।

 

ধানমন্ডি থেকে ইফতারি কিনতে আসা সাইফুল্লাহ করিম বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারে কিনতে আসলাম প্রচুর জ্যাম ঢেলে। কিন্তু সবকিছুর দাম এতো বেশি যে, কোন জিনিস কিনবো আর কোন জিনিস কিনবো না তাই ভাবছি। কিছু দুইবড়া কিনলাম আর কিছু বড় বাপের পোলায় খায় কিনবো,ঝালি কবাব, জিলাপি কিনবো।

 

মিষ্টিজাতীয় ইফতারের মধ্যে রয়েছে শাহী জিলাপি। প্রতি কেজির দাম ২০০ টাকা। এছাড়া আরো রয়েছে ছানার মিষ্টি, ফিরনি, মিষ্টি সিঙ্গাড়া, জর্দা। শরবতের মধ্যে রয়েছে কাশ্মীরি শরবত, বোরহানি, লাবাঙ, লাচ্ছি ও লেবুর শরবত।

চকবাজারের বাহারি ইফতারের মধ্যে রয়েছে:

চকবাজারের ইফতার বিক্রেতারা বড় বাপের পোলায় খায়, দইবড়া, সুতি কাবাব, ঝালফ্রাই, গরুর কালিয়া, হালিম, জালি কাবাব, টানা পরোটা, জাফরানি শরবত, মালাইসমুচা, মালাইচপ, শিক কাবাব, হালিম, ফুলুরি, খাসির রান, মুরগি, কোয়েল ও কবুতরের রোস্ট, পনিরের পেটিস ও রোল, চিকেন টোস্ট, ভেজিটেবল রোল, নিমকি, ছোলা বুট, কাঁচা বুট, কিমা পরোটা, সিঙ্গাড়া, সমুচা, বেগুনি, আলু ও ডিমের চপ, পেঁয়াজু, টিকিয়া, ঘুগনি ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করছেন।

 

চকবাজার ছাড়াও রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজারগুলোর মধ্যে রয়েছে: ঐতিহ্যবাহী ইফতারির কথা বললে সবার আগে আসে চকবাজারের নাম। এরপর রয়েছে বেইলি রোড, ধানমণ্ডি, গুলশান, বনানীর বিভিন্ন ইফতার বাজার। এছাড়া ফুটপাত থেকে পাঁচ তারকা হোটেল পর্যন্ত সর্বত্রই পাওয়া যায়। প্রায় প্রতিটি রেস্তোরাঁয় পার্সেলের পাশাপাশি র‌য়ে‌ছে ইফতার করারও সুব্যবস্থা। ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দামেও দোকান-ভেদে ভিন্নতা দেখা গেছে।

চকবাজারে নামিদামি ইফতারের দাম:

চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতারির নাম ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। ৩৬টি উপাদান ও ১৮টি মশলা দিয়ে তৈরি করা হয় এ খাবার। এটির প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খাবারের মধ্যে রয়েছে আস্ত খাসির রোস্ট। দাম ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খাসির রানের রোস্ট এক হাজার টাকা, বিভিন্ন ধরনের কাবাব ৪০-৮০ টাকা, টানা পরোটা ২০-৩৫ টাকা, দইবড়া হাফ ১০০ টাকা, ফুল ২০০ টাকা, হালিম বাটি ছোট ৩০০ টাকা, মাঝারি ৫০০ টাকা, বড় এক হাজার টাকা। ডিমচপ ১৫-২৫ টাকা, সমুচা ১৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সূএ: ঢাকাটাইমস ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন শিক্ষা দিয়েছে রাজনীতিতে দম্ভের পতন অনিবার্য: রুহুল আমিন হাওলাদার

» জাকসুতেও শিবিরের জয়জয়কার

» ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে রাকসু ভোট গণনাসহ ১২ দফা দাবি ছাত্রদলসহ ২ প্যানেলের

» জাকসু নির্বাচনে বিজয়ীদের ফল প্রকাশ, ভিপি জিতু ও জিএস মাজহারুল ইসলাম

» দেশে গণতন্ত্র না থাকায় অনেকের মধ্যে অসহিষ্ণুতা জন্ম নিয়েছে : তারেক রহমান

» জনগণ রায় দিলে দেশকে ৫ বছরেই ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করা সম্ভব: জামায়াত আমির

» পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন নয়: চরমোনাই পীর

» ‘সরকার-উপদেষ্টারা মাহফুজদের ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে’: নাহিদ ইসলাম

» ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে: আলী রীয়াজ

» আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, কোনো সন্দেহ নেই: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পুরান ঢাকার বাহারি ইফতারিতে ফিরেছে রাজধানীবাসী

দীর্ঘ দুই বছর পর করোনা থেকে মুক্ত হয়ে সশরীরে মাহে রমজানের সব অনুষঙ্গ পালন করতে পারায় এই রমজান আগের মতো উৎসবে পরিণত হয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে। সেই সঙ্গে পুরান ঢাকার বাহারি ইফতারে ফিরেছে নগরবাসী, যা গত দুই বছরে করোনার কারণে দেখা যায়নি।

 

মুসলমানদের সিয়াম সাধনার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষঙ্গ ইফতারি। রোজার প্রথম দিকে রাজধানীর অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে পাড়া-মহল্লার টং দোকান পর্যন্ত সর্বত্র রকমারি ইফতারি।

 

গত বছর মসজিদে মুসল্লিরা পাঁচজনের বেশি নামাজ পড়তে পারেনি। কোথাও কোথাও ইফতার বা সেহরি পার্টি ছিল না। গত রোজায় কিছুটা শিথিল হলেও পুরোপুরি ছিল না। তবে এবার করোনার প্রকোপও কম, নেই বিধিনিষেধও। এ কারণে এবার রোজায় সবাই সমবেতভাবে তারাবি যেমন পড়তে পারছেন, সেই সঙ্গে জমেছে ইফতার-সেহরি অনুষ্ঠানের সংস্কৃতিও।

 

পবিত্র রমজানের দ্বিতীয়দিন সোমবার পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই ইফতারকে ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠেছে। এই ইফতার বাজারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ঠোঙ্গা ভরে নিয়ে যায়, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। ৩৬টি উপাদান ও ১৮টি মশলা দিয়ে তৈরি করা হয় এ খাবার। এর মধ্যে গরুর মগজ, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুঁচি, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, ডিম, আলু, ঘি, বুটের ডাল এবং চিড়া অন্যতম। আর খাশির মাংস দিয়ে তৈরি সুতি কাবাব ১২শ’ টাকা এবং গরুর মাংসের তৈরি কাবাব বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।

বাজার ঘুরে আরে দেখা গেছে, দুপুরের পরপরই পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মজাদার সব ইফতার সামগ্রী কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। বেলা যতই গড়ায়, ততই বাড়ে ক্রেতার সমাগম। ফুটপাত, রেস্টুরেন্ট, পাড়া-মহল্লার গলিপথেও ইফতারির ছোট-বড় দোকান বসে। কোথাও কোথাও রাস্তা দখল করে বসানো হয়েছে ইফতারির দোকান। বাঁশ আর টেবিল বসিয়ে পুরো ফুটপাত দখলে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সর্বত্রই ক্রেতাদের আকর্ষণে চলছে বাহারি রং আর স্বাদের ইফতারি আইটেম তৈরির প্রতিযোগিতা। দুপুর থেকে ইফতারির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ইফতারের নগরীতে পরিণত হয়েছে চকবাজার।

 

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ইফতার বাজার একেবারেই মন্দা গেছে। কিন্তু এবারের রোজায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সবমিলে এবার ইফতার বাজার গত দুইবারের তুলনায় ভালো যাবে বলে আশা করছেন চকবাজার ইফতারের দোকানীরা।

 

রোজাদারদের ইফতারের আয়োজন করতে রাজধানীজুড়ে এখন এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবার রোজা গরমের সময় হওয়ায় ইফতারিতে বিভিন্ন পদ যোগ হচ্ছে।

 

চকবাজারের আপেল কনফেকশনারির ম্যানেজার মো.কাউসার বলেন,গতদুই বছরে পরে পুরান ইফতারে বাজার আবার জমে ওঠেছে। এবছরে ইফতারির গরমের কারণে এ বছর তালিকায় লেবু এবং টকজাতীয় কয়েকটি আইটেম যোগ হবে। এগুলো মোটামুটি ভালো চলছে,এর মধ্যে দইবড়া বেশি বিক্রি হচ্ছে।

 

হালিম মিয়া চকবাজারে গত ৩০ বছর ধরে বাহারি ইফতার বিক্রি করেন। তিনি বলেন, গরুর মাংস দিয়ে তৈরি এই কাবাব প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা, খাশির মাংস দিয়ে তৈরি কাবাব ১২শত টাকায় বিক্রি। এ বছর সবকিছুর দাম একটু বেশি তাই কাস্টমার কম মনে হচ্ছে।

 

আমি গত ৩০ বছর যাবৎ রমজানে এই সুতি কাবাব বিক্রি করছি। শুরুতে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলেও দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় ৩০ বছর পর এখন ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সামনে আরো বিক্রি আরো বাড়বে বলে আমি আশা করি।

 

চকবাজারের ফুটপাতের দোকানদার জহির বলেন, গরুর মাংসের দাম বেশি। ফলে এই মাংস দিয়ে যেসব খাবার তৈরি হয়, সেগুলোর দাম একটু বেশি।, চকবাজারের ইফতারিতে এমন কিছু পদ আছে যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এ ছাড়া এখানকার খাবারের মধ্যে এক ধরনের মুঘল আমলের নবাবি স্বাদ ও আমেজ রয়েছে। এখানকার ইফতারের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। তবে ঐতিহ্যেরও একটা মূল্য আছে।

 

ধানমন্ডি থেকে ইফতারি কিনতে আসা সাইফুল্লাহ করিম বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারে কিনতে আসলাম প্রচুর জ্যাম ঢেলে। কিন্তু সবকিছুর দাম এতো বেশি যে, কোন জিনিস কিনবো আর কোন জিনিস কিনবো না তাই ভাবছি। কিছু দুইবড়া কিনলাম আর কিছু বড় বাপের পোলায় খায় কিনবো,ঝালি কবাব, জিলাপি কিনবো।

 

মিষ্টিজাতীয় ইফতারের মধ্যে রয়েছে শাহী জিলাপি। প্রতি কেজির দাম ২০০ টাকা। এছাড়া আরো রয়েছে ছানার মিষ্টি, ফিরনি, মিষ্টি সিঙ্গাড়া, জর্দা। শরবতের মধ্যে রয়েছে কাশ্মীরি শরবত, বোরহানি, লাবাঙ, লাচ্ছি ও লেবুর শরবত।

চকবাজারের বাহারি ইফতারের মধ্যে রয়েছে:

চকবাজারের ইফতার বিক্রেতারা বড় বাপের পোলায় খায়, দইবড়া, সুতি কাবাব, ঝালফ্রাই, গরুর কালিয়া, হালিম, জালি কাবাব, টানা পরোটা, জাফরানি শরবত, মালাইসমুচা, মালাইচপ, শিক কাবাব, হালিম, ফুলুরি, খাসির রান, মুরগি, কোয়েল ও কবুতরের রোস্ট, পনিরের পেটিস ও রোল, চিকেন টোস্ট, ভেজিটেবল রোল, নিমকি, ছোলা বুট, কাঁচা বুট, কিমা পরোটা, সিঙ্গাড়া, সমুচা, বেগুনি, আলু ও ডিমের চপ, পেঁয়াজু, টিকিয়া, ঘুগনি ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করছেন।

 

চকবাজার ছাড়াও রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজারগুলোর মধ্যে রয়েছে: ঐতিহ্যবাহী ইফতারির কথা বললে সবার আগে আসে চকবাজারের নাম। এরপর রয়েছে বেইলি রোড, ধানমণ্ডি, গুলশান, বনানীর বিভিন্ন ইফতার বাজার। এছাড়া ফুটপাত থেকে পাঁচ তারকা হোটেল পর্যন্ত সর্বত্রই পাওয়া যায়। প্রায় প্রতিটি রেস্তোরাঁয় পার্সেলের পাশাপাশি র‌য়ে‌ছে ইফতার করারও সুব্যবস্থা। ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দামেও দোকান-ভেদে ভিন্নতা দেখা গেছে।

চকবাজারে নামিদামি ইফতারের দাম:

চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতারির নাম ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। ৩৬টি উপাদান ও ১৮টি মশলা দিয়ে তৈরি করা হয় এ খাবার। এটির প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খাবারের মধ্যে রয়েছে আস্ত খাসির রোস্ট। দাম ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খাসির রানের রোস্ট এক হাজার টাকা, বিভিন্ন ধরনের কাবাব ৪০-৮০ টাকা, টানা পরোটা ২০-৩৫ টাকা, দইবড়া হাফ ১০০ টাকা, ফুল ২০০ টাকা, হালিম বাটি ছোট ৩০০ টাকা, মাঝারি ৫০০ টাকা, বড় এক হাজার টাকা। ডিমচপ ১৫-২৫ টাকা, সমুচা ১৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সূএ: ঢাকাটাইমস ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com