পুতিন বিরোধী রুশ মডেলকে যেভাবে হত্যা করা হয়

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পাগল’ বলার পর নিখোঁজ ২৩ বছর বয়সী রুশ মডেল গ্রেটা ভেদলার মরদেহ একটি স্যুটকেটে পাওয়া গেছে। রাশিয়ায় বেশ জনপ্রিয় মডেল ছিলেন গ্রেটা ভেদলা। নামি-দামি অনেক প্রতিষ্ঠানেরই মডেল হয়েছিলেন তিনি।

 

২০২১ সালে এই মডেল ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পাগল’ বলেছিলেন। রাশিয়াসহ অন্য দেশেও বিষয়টি ভাইরাল হয়েছিল। এরপরই তিনি নিখোঁজ হন। সম্প্রতি তার মরদেহ পাওয়া যায়।

 

রুশ পুলিশের দাবি, মডেল গ্রেটার সাবেক প্রেমিক দিমিত্রি কোরোভিন তাকে খুন করেছেন। পুলিশের কাছে তা স্বীকারও করেছেন তিনি।

 

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কোরোভিন বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অর্থ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়ার পর হাতাহাতিও হয়। এরপরই তাকে পরিকল্পনা করে খুন করেন। এই খুনের পেছনে গ্রেটার রাজনৈতিক বা পুতিনবিরোধী কোনো কিছুর সঙ্গে সম্পর্ক নেই।

 

গেল সপ্তাহে ওই গাড়ি থেকে গ্রেটার মরদেহ উদ্ধারের খবর প্রকাশ করে রুশ সংবাদমাধ্যম।

 

কীভাবে কোরেভিন তার প্রেমিকাকে হত্যা করেছেন এবং অপরাধ স্বীকার করেছেন—এ বিষয়ে একটি ভিডিও তৈরি করে রুশ তদন্ত দলের সদস্যরা। সেখানে পুরো হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি তুলে ধরা হয়।

 

প্রেমিকাকে হত্যার পর কোরোভিন সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রেটার অনেক ছবি ও বার্তা পোস্ট করতে থাকেন, যাতে তিনি বেঁচে আছেন—এমন একটি ‘মিথ্যা ধারণা’ তৈরি করতে পারেন। তবে সেই পোস্ট দেখে সন্দেহ জাগে ইউজেনি ফস্টার নামে গ্রেটার এক বন্ধুর। চলমান ইউক্রেনের যুদ্ধে যে খারকিভ শহর প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা ইউজেনি। পুলিশের কাছে গ্রেটার পোস্ট সন্দেহ প্রকাশ করে একটি অভিযোগ করেন তিনি। পরে রাশিয়ার মস্কোর এক বন্ধুর সাহায্যে পুলিশের কাছে যান ইউজেনি।

 

গ্রেটাকে কীভাবে খুন করা হয়েছে—এর একটি বর্ণনাও দেন কোরোভিন। পুলিশকে তিনি বলেন, গ্রেটাকে খুন করার পর একটি হোটেলের ঘরে তার মরদেহের সঙ্গে তিন রাত কাটিয়েছেন। এরপর গাড়িতে করে মস্কো থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে লিপেৎসক অঞ্চলে গ্রেটার মরদেহ নিয়ে যান। ওই গাড়ির পেছনে মালপত্র রাখার জায়গায় একটি স্যুটকেসের মধ্যে রাখা ছিল গ্রেটার মরদেহ। সেই গাড়ি সেখানে ফেলে পালিয়ে আসেন তিনি।

 

গ্রেটা মডেলিংয়ের পাশপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মুখ্যজবাব দিতেন। এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কোন কর্মকাণ্ড পছন্দ না হলে তিনি তা নিয়ে যোগাযোগমাধ্যম গুলোতে নিয়মিত পোস্ট দিতেন। তাই গ্রেটার মৃত্যুর এমন খবরে তার ভক্তরা সামাজিক মাধ্যম গুলোতে সরব য়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন আদৌ কি গ্রেটাকে তার সাবেক প্রেমিক খুন করেছে? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোন রহস্য!

সূত্র : ডেইলিমেইল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপি নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান রিজভীর

» বাংলাদেশ ভ্রমণে কানাডার সতর্কতা জারি

» জনগণের ৭০ ভাগ পিআরের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে: মতিউর রহমান আকন্দ

» বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বহু রাজনীতিবীদের শিক্ষক: মির্জা ফখরুল

» বিএনপি সেই গণতন্ত্রের কথা বলে, যে গণতন্ত্রে মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে  : ড. মঈন খান

» সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটে শাপলা বিক্রি করেই চলছে দিনমজুর হানিফের সংসার, সরকারী সহায়তা বঞ্চিত!

» লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রস্তুত ৪ শত ৬৮ টি পূজা মন্ডব

» আগৈলঝাড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ ললিতা সরকার শিক্ষা ও নৃত্যকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত

» ঢাকা থেকে জামালপুরের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

» গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল না করলে সরকারকে বাধ্য করার হুমকি ওলামা পরিষদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পুতিন বিরোধী রুশ মডেলকে যেভাবে হত্যা করা হয়

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পাগল’ বলার পর নিখোঁজ ২৩ বছর বয়সী রুশ মডেল গ্রেটা ভেদলার মরদেহ একটি স্যুটকেটে পাওয়া গেছে। রাশিয়ায় বেশ জনপ্রিয় মডেল ছিলেন গ্রেটা ভেদলা। নামি-দামি অনেক প্রতিষ্ঠানেরই মডেল হয়েছিলেন তিনি।

 

২০২১ সালে এই মডেল ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘পাগল’ বলেছিলেন। রাশিয়াসহ অন্য দেশেও বিষয়টি ভাইরাল হয়েছিল। এরপরই তিনি নিখোঁজ হন। সম্প্রতি তার মরদেহ পাওয়া যায়।

 

রুশ পুলিশের দাবি, মডেল গ্রেটার সাবেক প্রেমিক দিমিত্রি কোরোভিন তাকে খুন করেছেন। পুলিশের কাছে তা স্বীকারও করেছেন তিনি।

 

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কোরোভিন বলেন, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অর্থ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়ার পর হাতাহাতিও হয়। এরপরই তাকে পরিকল্পনা করে খুন করেন। এই খুনের পেছনে গ্রেটার রাজনৈতিক বা পুতিনবিরোধী কোনো কিছুর সঙ্গে সম্পর্ক নেই।

 

গেল সপ্তাহে ওই গাড়ি থেকে গ্রেটার মরদেহ উদ্ধারের খবর প্রকাশ করে রুশ সংবাদমাধ্যম।

 

কীভাবে কোরেভিন তার প্রেমিকাকে হত্যা করেছেন এবং অপরাধ স্বীকার করেছেন—এ বিষয়ে একটি ভিডিও তৈরি করে রুশ তদন্ত দলের সদস্যরা। সেখানে পুরো হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি তুলে ধরা হয়।

 

প্রেমিকাকে হত্যার পর কোরোভিন সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রেটার অনেক ছবি ও বার্তা পোস্ট করতে থাকেন, যাতে তিনি বেঁচে আছেন—এমন একটি ‘মিথ্যা ধারণা’ তৈরি করতে পারেন। তবে সেই পোস্ট দেখে সন্দেহ জাগে ইউজেনি ফস্টার নামে গ্রেটার এক বন্ধুর। চলমান ইউক্রেনের যুদ্ধে যে খারকিভ শহর প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা ইউজেনি। পুলিশের কাছে গ্রেটার পোস্ট সন্দেহ প্রকাশ করে একটি অভিযোগ করেন তিনি। পরে রাশিয়ার মস্কোর এক বন্ধুর সাহায্যে পুলিশের কাছে যান ইউজেনি।

 

গ্রেটাকে কীভাবে খুন করা হয়েছে—এর একটি বর্ণনাও দেন কোরোভিন। পুলিশকে তিনি বলেন, গ্রেটাকে খুন করার পর একটি হোটেলের ঘরে তার মরদেহের সঙ্গে তিন রাত কাটিয়েছেন। এরপর গাড়িতে করে মস্কো থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে লিপেৎসক অঞ্চলে গ্রেটার মরদেহ নিয়ে যান। ওই গাড়ির পেছনে মালপত্র রাখার জায়গায় একটি স্যুটকেসের মধ্যে রাখা ছিল গ্রেটার মরদেহ। সেই গাড়ি সেখানে ফেলে পালিয়ে আসেন তিনি।

 

গ্রেটা মডেলিংয়ের পাশপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মুখ্যজবাব দিতেন। এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কোন কর্মকাণ্ড পছন্দ না হলে তিনি তা নিয়ে যোগাযোগমাধ্যম গুলোতে নিয়মিত পোস্ট দিতেন। তাই গ্রেটার মৃত্যুর এমন খবরে তার ভক্তরা সামাজিক মাধ্যম গুলোতে সরব য়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন আদৌ কি গ্রেটাকে তার সাবেক প্রেমিক খুন করেছে? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোন রহস্য!

সূত্র : ডেইলিমেইল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com