নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েও স্বাভাবিক ছিলেন অনজিৎ-অসীত!

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ফার্মেসির ভেতরে প্রবাসীর স্ত্রীর ছয় টুকরা লাশের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

 

এ ঘটনায় জড়িত মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরেই হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপ (৩৬)।

 

জগন্নাথপুর পৌর শহরের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে এখন প্রশ্ন-কী করে একজন নারীকে কেটে ছয় টুকরা করে হত্যার পরও অতি স্বাভাবিকভাবে সংঘটিত ক্রাইম স্পটের পাশেই ব্যবসা পরিচালনা করছে খুনিরা! আতঙ্কের কোনো ছাপ ছিল না তাদের চেহারায়। এ তো সিনেমা বা নাটকের গল্পকেও হার মানায়। এসব কথা এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার ওষুধ কেনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী।

 

পরদিন পৌর শহরের একটি তালাবদ্ধ ফার্মেসি থেকে ওই নারীর ছয় টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয় হত্যাকাণ্ডের কারণ। জড়িত তিনজনের মধ্যে জিতেশ ঘটনার পর পলাতক ছিল। তাকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকায় গ্রেফতার করে সিআইডি। অপর গ্রেফতারকৃত অনজিৎ গোপ ও অসীত এ দু’জন বীভৎস হত্যাকাণ্ডের পরও স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছিল নিজ নিজ দোকানে।

 

এ বিষয়ে জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধারের সময় ফার্মেসির পাশেই নিজ মুদি দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করছিল অনজিৎ গোপ। অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল সে। তার মতোই স্বাভাবিক ছিল পাশের দোকানের অরূপ ফার্মেসির মালিক অসীত গোপও। শুক্রবার রাতে দু’জনকে সিআইডি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডে এ দুজন জড়িত-এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হতবাক হয়ে যায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।

 

স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‌’মরদেহ উদ্ধারের সময় ফার্মেসির পাশেই মুদি দোকানে অনজিৎকে দেখেছি একদম স্বাভাবিক। জিতেশ ঘটনার রাতে সাড়ে ৯টার দিকে তার দোকান থেকে আলু কিনে নিয়ে গেছে অনজিৎ। এ খুনের ঘটনায় অনজিৎও জড়িত শুনে হতবাক আমি। কী করে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থেকেও মানুষ অতি স্বাভাবিক থাকতে পারে!’

গোবিন্দ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় অসীতও তার ওষুধের দোকানে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। একটি বীভৎস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে এত স্বাভাবিক থাকতে পারা বিশ্বাসই হয় না। এমন ঘটনায় সিনেমাকেও হার মানায়।

জগন্নাথপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহির উদ্দিন বলেন, ‘লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করছি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» জঙ্গিবাদের সন্দেহে বাংলাদেশি নাগরিকদের তদন্তে সহযোগিতা করবে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ

» এবার মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখলেন সাকিব

» মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ৪জন গ্রেফতার

» ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা নিহত

» সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

» ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা

» কখনো বিবর্তন

» সন্ত্রাস দমনে সরকারকে সহযোগিতায় সর্বদা প্রস্তুত বিএনপি : মাহদী আমিন

» সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে আগুন ধরিয়ে দিল ইসরায়েলি বাহিনী

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েও স্বাভাবিক ছিলেন অনজিৎ-অসীত!

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ফার্মেসির ভেতরে প্রবাসীর স্ত্রীর ছয় টুকরা লাশের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

 

এ ঘটনায় জড়িত মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরেই হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপ (৩৬)।

 

জগন্নাথপুর পৌর শহরের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে এখন প্রশ্ন-কী করে একজন নারীকে কেটে ছয় টুকরা করে হত্যার পরও অতি স্বাভাবিকভাবে সংঘটিত ক্রাইম স্পটের পাশেই ব্যবসা পরিচালনা করছে খুনিরা! আতঙ্কের কোনো ছাপ ছিল না তাদের চেহারায়। এ তো সিনেমা বা নাটকের গল্পকেও হার মানায়। এসব কথা এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার ওষুধ কেনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক সৌদিপ্রবাসীর স্ত্রী।

 

পরদিন পৌর শহরের একটি তালাবদ্ধ ফার্মেসি থেকে ওই নারীর ছয় টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয় হত্যাকাণ্ডের কারণ। জড়িত তিনজনের মধ্যে জিতেশ ঘটনার পর পলাতক ছিল। তাকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকায় গ্রেফতার করে সিআইডি। অপর গ্রেফতারকৃত অনজিৎ গোপ ও অসীত এ দু’জন বীভৎস হত্যাকাণ্ডের পরও স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছিল নিজ নিজ দোকানে।

 

এ বিষয়ে জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধারের সময় ফার্মেসির পাশেই নিজ মুদি দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করছিল অনজিৎ গোপ। অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল সে। তার মতোই স্বাভাবিক ছিল পাশের দোকানের অরূপ ফার্মেসির মালিক অসীত গোপও। শুক্রবার রাতে দু’জনকে সিআইডি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডে এ দুজন জড়িত-এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হতবাক হয়ে যায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।

 

স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‌’মরদেহ উদ্ধারের সময় ফার্মেসির পাশেই মুদি দোকানে অনজিৎকে দেখেছি একদম স্বাভাবিক। জিতেশ ঘটনার রাতে সাড়ে ৯টার দিকে তার দোকান থেকে আলু কিনে নিয়ে গেছে অনজিৎ। এ খুনের ঘটনায় অনজিৎও জড়িত শুনে হতবাক আমি। কী করে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থেকেও মানুষ অতি স্বাভাবিক থাকতে পারে!’

গোবিন্দ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় অসীতও তার ওষুধের দোকানে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। একটি বীভৎস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে এত স্বাভাবিক থাকতে পারা বিশ্বাসই হয় না। এমন ঘটনায় সিনেমাকেও হার মানায়।

জগন্নাথপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহির উদ্দিন বলেন, ‘লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করছি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com