বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখান থেকে প্রমাণিত হয়ে গেছে যে শুধু কুমিল্লা নয় সারাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে এই সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং নির্বাচন প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করে ফেলেছে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঠাকুরগাঁওয়ের কালিবাড়িস্থ তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছেন না। এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে অনেকের মধ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের আশার সঞ্চার হয়েছিল কিন্তু সেটির কোনোটাই হয়নি। সরকারের কারণেই আজকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের দলীয় এমপি নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন। নির্বাচন কমিশন তাকে চিঠি দেওয়ার পরেও তিনি সেখান থেকে বের হননি। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে পুরো নির্বাচন কমিশন তারা তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়ে গেছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন শুধু নয় গোটা বাংলাদেশের যে নির্বাচন ব্যবস্থা সেটি সম্পূর্ণভাবে এই সরকার তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং নির্বাচন প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন সময়ে যদি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশন যেই থাকুক না কেন তাকে দিয়ে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না। এটি শুধু আমাদের কথা নয় দেশের অন্যান্য সকল বিরোধী দলের দাবি এটি। এ নিয়ে কিছুদিন আগে বৈঠক বসেছিল এতে সাবেক নির্বাচন কমিশনসহ সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সবাই বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের যে রাজনীতির সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতিতে কখনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার খুব বেশি প্রয়োজন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে না হয় তাহলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কারণ নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যেখানে একজন মানুষ ভোট প্রদান করতে পারেন না। ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন না। যদি ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে তাহলে মানুষ ভোট দেবে কিভাবে। আর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলেও সে ভোট সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণে করে নেয়। ভোট ইভিএম বা ব্যালটের মাধ্যমে হোক না কেন তার নিজেদের পক্ষে নিয়ে নেয়। এটা আমরা কোনো মতেই গ্রহণ করব না ও এই ব্যবস্থাতে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না।
বিএনপির এ শীর্ষ নেতা আরও বলেন, এজন্য আমরা আপত্তি জানাচ্ছি ও প্রতিবাদ করছি। যখন সময় আসবে তখন আমরা আরও বড় আন্দোলনে যাব। আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করছি। সবাই আমাদের সাথে একমত যে এই সরকারের আমলে কখনোই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্ভব না।
এ সময় মির্জা ফখরুলের সাথে উপস্থিত ছিলেন— ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তৈমুর রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি আবনুর চৌধুরীসহ দলটির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা।