দুই বছর বন্ধ থাকার পর  আবার চেনা রূপে ফিরেছে রাজগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো

উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর অফিস।। দীর্ঘ দুই বছর পর যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সেই চেনা রূপ দেখা যাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ফিরেছে আলাদা উচ্ছ্বাস ও প্রাণচাঞ্চল্য।
এ যেনো এক অন্যরকম পরিবেশ। সারা দেশের ন্যায় রাজগঞ্জেও এখন প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক সব পর্যায়ে পুরোদমে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। পুরোদমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় গত ১৫ মার্চ-২০২২, মঙ্গলবার সকাল থেকেই সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজিরা দিচ্ছে নিয়মিত। শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে সব কিছু নতুন আঙ্গিকে পেয়ে তারা খুশি। দেখাগেছে- সকালে ফুরফুরে মনে আনন্দ নিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, তাঁদের ক্লাশ রুমে প্রবেশ করছে। সময় হলেই ঘন্টা পড়ছে। তারপর শুরু হচ্ছে ক্লাশ। শিক্ষকরাও ক্লাশ নিচ্ছে ঠিক ঠিক। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলেন- করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে থাকে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার। সশরীরে ক্লাস শুরু হয় মাধ্যমিক পর্যায়ে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। সবার পরে সশরীরে ক্লাস শুরু হলো প্রাথমিকে। করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে এক মাস। সরেজমিনে রাজগঞ্জ এলাকার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস ও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিলো চোখে পড়ার মতো। অনেকদিন পর ক্লাসে ফিরতে পারায় তাদের চোখেমুখে ছিলো আনন্দের ছাপ। সবমিলিয়ে আবার চেনা রূপে ফিরেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে। তারা এ প্রতিনিধিকে বলেন- স্কুল খুলে দেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। এখন সবাই মিলে, এক সঙ্গে ক্লাস করতে পারবো। সবাই মিলে এক সঙ্গে খেলাধূলা করতে পারবো, হৈচৈ করতে পারবো। অনেক মজা। রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোছাঃ রেবা আখতার বলেন- ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ায় মনোযোগি ছিলো না। স্কুলের চাপ না থাকায় বসে বসে অলস সময় কাটাতো। এখন থেকে শিক্ষার্থীরা হৈচৈ করে ক্লাস করতে পারবে ভেবে খুব ভালো লাগছে। রাজগঞ্জ এলাকার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক তোফাজ্জল হোসেন বলেন- বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অনেক কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। অনেক বলেও পড়ার টেবিলে তাদের বসানো যেতো না। দিনের বেলা খেলাধূলা আর হৈচৈ করেই তারা সময় কাটাতো। সন্ধ্যার পরেই ঘুমিয়ে পড়তো। ক্লাস শুরু হওয়ায় মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ কামাল তুষার বলেন- বর্তমান সরকার অনেক চিন্তা-ভাবনা করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মুখি।
শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখোর বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দ, হৈচৈ চোখে পড়ার মতো। ক্লাসে আগের মতো আবারো পাঠদান চলছে। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাশ নিতে পেরে আমাদেরও ভালো লাগছে। তিনি আরও বলেন- বিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য হাত ধোয়া ও মাস্কের ব্যবস্থা করা আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পাঠদান করা হচ্ছে।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল হলে সব পক্ষ উপকৃত হবে: তথ্যমন্ত্রী

» এবার ম্যারাডোনা, পেলের পাশে বসলেন মেসি

» নির্বাচনে সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের বাধা দিলে ৭ বছর পর্যন্ত জেল

» আগামীকাল থেকে থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় ভূমি সম্মেলন

» ‘গ্র্যান্ড ইফতার টেকঅ্যাওয়ে ফেস্ট’ শুরু করেছে ফুডপ্যান্ডা

» ২ এপ্রিল বাজারে আসছে ৬৪ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার রিয়েলমি সি৫৫

» বিএনপির আন্দোলন আগেও বিফলে গেছে, আবারও বিফলে যাবে : হানিফ

» ব্রয়লার মুরগির কেজি নামলো ২০০ টাকায়

» ছোট্ট এই ছিদ্র না থাকলে স্মার্টফোনই অচল, এর কাজ কি জানেন?

» বলিউড ছাড়ার আসল কারণ জানালেন প্রিয়াংকা

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দুই বছর বন্ধ থাকার পর  আবার চেনা রূপে ফিরেছে রাজগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো

উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর অফিস।। দীর্ঘ দুই বছর পর যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সেই চেনা রূপ দেখা যাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ফিরেছে আলাদা উচ্ছ্বাস ও প্রাণচাঞ্চল্য।
এ যেনো এক অন্যরকম পরিবেশ। সারা দেশের ন্যায় রাজগঞ্জেও এখন প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক সব পর্যায়ে পুরোদমে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। পুরোদমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় গত ১৫ মার্চ-২০২২, মঙ্গলবার সকাল থেকেই সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজিরা দিচ্ছে নিয়মিত। শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে সব কিছু নতুন আঙ্গিকে পেয়ে তারা খুশি। দেখাগেছে- সকালে ফুরফুরে মনে আনন্দ নিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, তাঁদের ক্লাশ রুমে প্রবেশ করছে। সময় হলেই ঘন্টা পড়ছে। তারপর শুরু হচ্ছে ক্লাশ। শিক্ষকরাও ক্লাশ নিচ্ছে ঠিক ঠিক। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলেন- করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে খুলতে থাকে শিক্ষাঙ্গনের দুয়ার। সশরীরে ক্লাস শুরু হয় মাধ্যমিক পর্যায়ে। এরপর কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। সবার পরে সশরীরে ক্লাস শুরু হলো প্রাথমিকে। করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয় গত ২১ জানুয়ারি। এ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে এক মাস। সরেজমিনে রাজগঞ্জ এলাকার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস ও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিলো চোখে পড়ার মতো। অনেকদিন পর ক্লাসে ফিরতে পারায় তাদের চোখেমুখে ছিলো আনন্দের ছাপ। সবমিলিয়ে আবার চেনা রূপে ফিরেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে। তারা এ প্রতিনিধিকে বলেন- স্কুল খুলে দেওয়ায় আমরা অনেক খুশি। এখন সবাই মিলে, এক সঙ্গে ক্লাস করতে পারবো। সবাই মিলে এক সঙ্গে খেলাধূলা করতে পারবো, হৈচৈ করতে পারবো। অনেক মজা। রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোছাঃ রেবা আখতার বলেন- ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ায় মনোযোগি ছিলো না। স্কুলের চাপ না থাকায় বসে বসে অলস সময় কাটাতো। এখন থেকে শিক্ষার্থীরা হৈচৈ করে ক্লাস করতে পারবে ভেবে খুব ভালো লাগছে। রাজগঞ্জ এলাকার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক তোফাজ্জল হোসেন বলেন- বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অনেক কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। অনেক বলেও পড়ার টেবিলে তাদের বসানো যেতো না। দিনের বেলা খেলাধূলা আর হৈচৈ করেই তারা সময় কাটাতো। সন্ধ্যার পরেই ঘুমিয়ে পড়তো। ক্লাস শুরু হওয়ায় মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ কামাল তুষার বলেন- বর্তমান সরকার অনেক চিন্তা-ভাবনা করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মুখি।
শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখোর বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দ, হৈচৈ চোখে পড়ার মতো। ক্লাসে আগের মতো আবারো পাঠদান চলছে। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাশ নিতে পেরে আমাদেরও ভালো লাগছে। তিনি আরও বলেন- বিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য হাত ধোয়া ও মাস্কের ব্যবস্থা করা আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পাঠদান করা হচ্ছে।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com