দখলদারদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দখলদারদের কারাদণ্ড দেওয়া হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।
সাপ্তাহিক নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুরে নগরীর শ্যামপুর এলাকায় শ্যামপুর খাল পরিষ্কার কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, দখল ঢাকাবাসীর জন্য একটি বড় সমস্যা। দখলদারদের বিরুদ্ধে আমরা ভবিষ্যতে আরও কঠোর হবো। প্রয়োজন হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে কারাদণ্ড দিতে বাধ্য হবো।
সড়কের ওপর বিভিন্ন জায়গায় দখলদারদের স্থায়ী পার্কিং বাণিজ্য নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ তাপস বলেন, আমরা যেখানেই দখল পাচ্ছি সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা সপ্তাহে পাঁচদিনই দখলমুক্ত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ঢাকা শহরে এতো জনগোষ্ঠী, এতো জনসংখ্যার চাপ যে, দখল বাণিজ্য অত্যন্ত সংকট হিসেবে পরিণত হয়েছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলছি। এই আগ্রাসনের জন্য ঢাকাবাসীর জীবন নাভিশ্বাস হয়ে ওঠছে। তারপরও আমরা বলিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবো। এতে সকলের সহযোগিতা চাই, ঢাকাবাসীর সহযোগিতা চাই। ঢাকাবাসী যেন আমাদেরকে এ বিষয়গুলো অবগত করেন। তারাও যেন কিছু ভূমিকা নেন। আপনার দোকানের সামনে আপনি বসতে দেবেন কেন? রাস্তার উপরে যেখানে-সেখানে পার্কিং করতে দেবেন কেন? এই বিষয়গুলোতে সকলেই আরও সচেতন হয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করলে, তাহলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হবো।
খাল সংরক্ষণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো খালগুলোকে সম্পূর্ণরূপে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা, রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা। যাতে করে বছর বছর নতুন করে খনন বা এগুলো অপসারণ করতে না হয়। সেই লক্ষ্যে আমরা একটি প্রকল্প জমা দিয়েছি। প্রকল্পটি প্লানিং কমিশন থেকে কিছু মতামত দিয়ে পাঠিয়েছে। আমরা সেগুলো আবার বিচার-বিশ্লেষণ-পর্যালোচনা করে জমা দেবো। আমরা আশাবাদী যে, এই প্রকল্পটা পাস হলে স্থায়ীভাবে সমাধানের দিকে আগাতে পারবো। সঙ্গে সঙ্গে খালগুলোর সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখলদার মুক্ত করা এবং সেই সীমানা বেষ্টনীগুলো স্থায়ীভাবে স্থাপন করা। এগুলো অত্যন্ত জরুরি। এগুলো যদি করতে পারি তাহলে আমরা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে যেতে পারবো।
জলাবদ্ধতা নিরসনে গতবারের চাইতে এবার আরও বেশি সুফল ঢাকাবাসীকে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মেয়র আতিক বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন, জলাবদ্ধতা ঢাকাবাসীর জন্য অত্যন্ত দূরুহ সমস্যা। আমরা গতবছর কিছুটা সুফল দিতে পেরেছি। এবার আমরা আশাবাদী, আরেকটু বেশি সুফল দিতে পারবো এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দিকে আগাতে পারবো।
আজকের পরিদর্শন কার্যক্রমে মেয়র করপোরেশনের অঞ্চল ২ ও ৫ এর আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন কাজের নির্দেশনা দেন। মেয়র বিবির বাগিচা এলাকায় সুতিখালপাড় থেকে কাজলার পাড় পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে উন্নয়নমূলক কাজ এবং নগরীর ডেমরায় খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্য স্থান ও সড়ক পরিদর্শন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলসমূহের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।