রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের জোনাল টিম। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রুপনগর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জাহিদুল ইসলাম এখন কারাগারে আছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো পুলিশ সদস্যের দায় বাহিনী নেয় না।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
এর আগে, বুধবার (২০ জুলাই) রাতে রাজধানীর সদরঘাট ও মেরাদিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মো. সোহেল আহম্মেদ পল্লব (৪৮), মো. পলাশ শেখ (৩৪), মো. মাসুদ রানা (৪৬) ও রবিন হালদার পরেশ (৫০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট করা স্বর্ণালঙ্কারসহ বিক্রয়লব্ধ পাঁচ লাখ টাকা ও আনুমানিক ২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
হারুন অর রশীদ বলেন, ভিকটিম টিটু প্রধানীয়া রাজধানীর কোতয়ালী থানাধীন তাঁতী বাজারস্থ ধানসিড়ি চেইন অ্যান্ড বল হাউজ নামক স্বর্ণের দোকানের একজন কর্মচারী। সে স্বর্ণের দোকানে তৈরি করা গহনা দেশের বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে ডেলিভারি দিয়ে থাকে।
‘গত ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ভিকটিম স্বর্ণের গহনা নিয়ে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর ও সখিপুর থানা এলাকার বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মোটরসাইকেল যোগে রওনা হন।’
‘মোটরসাইকেলে করে গাবতলী বাস টার্মিনালে পৌঁছে তিনি টাঙ্গাইলের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি তার কাছে এসে নিজেকে ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার নাম-ঠিকানা ও পেশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। ভিকটিম নাম-ঠিকানা বলার পর আসামি ব্যাগের মধ্যে কী আছে জানতে চায়।
‘অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়ার কারণে ভিকটিম আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ব্যাগে ৩৮ ভরি ১৪ আনা স্বর্ণের তৈরি বল চেইন, চেইন জুমকা, বল জুমকা, লকেট, আংটি ও রিস্টলেট আছে বলে জানান।
‘তিনি বিশেষ কায়দায় মোড়ানো দুটি প্যাকেটে করে খাকি রংয়ের একটি স্কুল ব্যাগের মধ্যে ভরে ওইসব স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর আরও অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজন লোক এসে সেখানে যোগ দেয় এবং তারা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ভিকটিমের কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কারের ব্যাগ, স্বর্ণের ভাউচার, দোকানের ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট ও তার ব্যবহৃত টেকনো টাচ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।’
‘এরপর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ভিকটিমকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলে (ঢাকা মেট্রো-ল-৫৬-৬৪৩৮) বসিয়ে গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর একটি সিএনজিতে উঠিয়ে বিজয় সরণি মোড়ে ট্রাফিক সিগনালে সিএনজিটি থামলে ভিকটিমকে রেখে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হারুন অর রশীদ জানান, গ্রেফতাররা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিমের পথরোধ করে জোরপূর্বক তার জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনার সঙ্গে রুপনগর থানার একজন এএসআইয়ের সম্পৃক্ততা নিয়ে হারুন বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নেই। দুই লাখের উপরে পুলিশ বাহিনী। কোনো ব্যক্তির দায় পুলিশ বাহিনী নেয় না। যদি ডাকাতিতে কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত থাকে, তাহলে তার শাস্তি সে পাবে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। তবে তাদের নাম আমরা বলছি না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এ কাজে আর কারা কারা জড়িত ছিল এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম