টিকিট কিনতে আজও স্টেশনে উপচেপড়া ভিড়, ভোগান্তি চরমে

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের চতুর্থ দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে উপচেপড়া ভিড়। টিকিটের জন্য ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। সশরীরে স্টেশনে সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় চাপ বেড়েছে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও।

 

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টারগুলোতে দীর্ঘ সারি। গরমের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন কয়েক হাজার যাত্রী। আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার (২৫ মার্চ) ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে তারা টিকিট কিনতে ভিড় করেছেন। শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকায় অনেকে ঢাকার বাইরে যেতে ট্রেনের টিকিট পেতে মরিয়া। ফলে অন্য দিনের চেয়েও স্টেশনে আজ ভিড় বেশি।

ময়মনসিংহে যাবেন সজিব নামে এক যুবক। তিনি ওই রুটের তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকিট কিনতে ভোর ৬টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরু হলেও এখনো টিকিট পাননি তিনি। তার সামনে শতাধিক যাত্রী রয়েছেন।

 

সজিব বলেন, ‘সেই ভোরে এসেছি। তিন ঘণ্টা হলো টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়াইছি। এখন টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তবে লাইন তেমন এগোচ্ছে না। টিকিট দিতে সময় লাগছে। গরমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। টিকিট পাবো কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

 

রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসের টিকিট কিনতে আসা মজিদ আল রাজি বলেন, ‘আগে পাঁচদিনের অগ্রিম টিকিট দিতো। আগে টিকিট করে রেখে নির্ধারিত দিনে ভ্রমণ করা যেতো। ব্যাপারটা স্বাচ্ছন্দ্যের ছিল। অনলাইনে এভাবে হুট করে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়াটা যৌক্তিক নয়।’

অলিউর রহমান নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘সিল্কসিটির টিকিট নিতে এসেছি। গতকালও (বুধবার) এসেছিলাম। লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্টে কাউন্টারে সিরিয়াল পেয়েছিলাম। তখন জানতে পারলাম, শুক্রবারের টিকিট বৃহস্পতিবার দেবে। এজন্য আজ সকালে আবার এসে দাঁড়িয়েছি।

 

নাম প্রকাশ না করে কাউন্টারের একজন নারী বুকিং সহকারী বলেন, ‘মেনুয়্যালি টিকিট বিক্রি করতে গেলে কিছুটা সময় লাগে। অনেকে এসে ট্রেনের নাম বলতে পারেন না। কয়টা টিকিট লাগবে, কোন স্টেশনে যাবেন, তা নিশ্চিত করতে সময় নেন। এরপর সিট নম্বর নিয়ে টানাহেঁচড়া, টাকা দেওয়ার সময় খুচরা না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে একজনকে টিকিট দিতে বেশ সময় লেগে যায়।’

 

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. আফছার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় স্টেশনে ব্যাপক চাপ পড়ছে। এতে যাত্রীদের যেমন ভোগান্তি, আমাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আশা করি দ্রুত এ ভোগান্তি দূর হবে।

 

গত ১৪ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ২১-২৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ওইদিন মন্ত্রী বলেন, টিকিট বিক্রিতে অভ্যন্তরীণ সেটআপের জন্য পাঁচদিন সময় নিয়েছে ‘সহজ’। ২৬ মার্চ থেকে তারা ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করবে।

 

তিনি আরও বলেন, আগে পাঁচদিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হতো, এসময়ে সেটা দেওয়া হবে না। কাউন্টার থেকে আজ ও আগামীকালের টিকিট দেওয়া হবে। এখানে কোনো কোটা বা আসন সংরক্ষণ থাকবে না।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপি নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান রিজভীর

» বাংলাদেশ ভ্রমণে কানাডার সতর্কতা জারি

» জনগণের ৭০ ভাগ পিআরের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে: মতিউর রহমান আকন্দ

» বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বহু রাজনীতিবীদের শিক্ষক: মির্জা ফখরুল

» বিএনপি সেই গণতন্ত্রের কথা বলে, যে গণতন্ত্রে মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে  : ড. মঈন খান

» সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটে শাপলা বিক্রি করেই চলছে দিনমজুর হানিফের সংসার, সরকারী সহায়তা বঞ্চিত!

» লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রস্তুত ৪ শত ৬৮ টি পূজা মন্ডব

» আগৈলঝাড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ ললিতা সরকার শিক্ষা ও নৃত্যকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত

» ঢাকা থেকে জামালপুরের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

» গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল না করলে সরকারকে বাধ্য করার হুমকি ওলামা পরিষদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

টিকিট কিনতে আজও স্টেশনে উপচেপড়া ভিড়, ভোগান্তি চরমে

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের চতুর্থ দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে উপচেপড়া ভিড়। টিকিটের জন্য ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। সশরীরে স্টেশনে সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় চাপ বেড়েছে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও।

 

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, কাউন্টারগুলোতে দীর্ঘ সারি। গরমের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন কয়েক হাজার যাত্রী। আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার (২৫ মার্চ) ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে তারা টিকিট কিনতে ভিড় করেছেন। শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকায় অনেকে ঢাকার বাইরে যেতে ট্রেনের টিকিট পেতে মরিয়া। ফলে অন্য দিনের চেয়েও স্টেশনে আজ ভিড় বেশি।

ময়মনসিংহে যাবেন সজিব নামে এক যুবক। তিনি ওই রুটের তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকিট কিনতে ভোর ৬টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরু হলেও এখনো টিকিট পাননি তিনি। তার সামনে শতাধিক যাত্রী রয়েছেন।

 

সজিব বলেন, ‘সেই ভোরে এসেছি। তিন ঘণ্টা হলো টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়াইছি। এখন টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তবে লাইন তেমন এগোচ্ছে না। টিকিট দিতে সময় লাগছে। গরমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। টিকিট পাবো কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

 

রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসের টিকিট কিনতে আসা মজিদ আল রাজি বলেন, ‘আগে পাঁচদিনের অগ্রিম টিকিট দিতো। আগে টিকিট করে রেখে নির্ধারিত দিনে ভ্রমণ করা যেতো। ব্যাপারটা স্বাচ্ছন্দ্যের ছিল। অনলাইনে এভাবে হুট করে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেওয়াটা যৌক্তিক নয়।’

অলিউর রহমান নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘সিল্কসিটির টিকিট নিতে এসেছি। গতকালও (বুধবার) এসেছিলাম। লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্টে কাউন্টারে সিরিয়াল পেয়েছিলাম। তখন জানতে পারলাম, শুক্রবারের টিকিট বৃহস্পতিবার দেবে। এজন্য আজ সকালে আবার এসে দাঁড়িয়েছি।

 

নাম প্রকাশ না করে কাউন্টারের একজন নারী বুকিং সহকারী বলেন, ‘মেনুয়্যালি টিকিট বিক্রি করতে গেলে কিছুটা সময় লাগে। অনেকে এসে ট্রেনের নাম বলতে পারেন না। কয়টা টিকিট লাগবে, কোন স্টেশনে যাবেন, তা নিশ্চিত করতে সময় নেন। এরপর সিট নম্বর নিয়ে টানাহেঁচড়া, টাকা দেওয়ার সময় খুচরা না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে একজনকে টিকিট দিতে বেশ সময় লেগে যায়।’

 

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. আফছার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় স্টেশনে ব্যাপক চাপ পড়ছে। এতে যাত্রীদের যেমন ভোগান্তি, আমাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আশা করি দ্রুত এ ভোগান্তি দূর হবে।

 

গত ১৪ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ২১-২৫ মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ওইদিন মন্ত্রী বলেন, টিকিট বিক্রিতে অভ্যন্তরীণ সেটআপের জন্য পাঁচদিন সময় নিয়েছে ‘সহজ’। ২৬ মার্চ থেকে তারা ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করবে।

 

তিনি আরও বলেন, আগে পাঁচদিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হতো, এসময়ে সেটা দেওয়া হবে না। কাউন্টার থেকে আজ ও আগামীকালের টিকিট দেওয়া হবে। এখানে কোনো কোটা বা আসন সংরক্ষণ থাকবে না।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com