জান্নাতুল নাঈমের গল্প: একজন মায়ের স্বপ্ন

আমার ছেলের নাম বিশুদ্ধ। ওর বাবা সোহেলের সাথে নাম নিয়ে জল্পনা-কল্পনা এক বিশাল উপ্যাখ্যান। সোহেল অবশ্য আমার দেওয়া নামটিই মেনে নিলো।
বিশুদ্ধকে কোলে নিয়ে সোহেলকে বললাম, বলো তো, আমি কেন বিশুদ্ধ নামটা রেখেছি?
সোহেল বলল, ওর নামের মতো করে ও বিশুদ্ধ মানুষ হবে, তাই।
আমি চোখের ভাসা ভাসা পানি আটকে না রেখে বললাম, একদমই তাই।
সুপ্তি, কেঁদো না তো। তুমি ছোটবেলা থেকে নিশ্চয়ই এমনভাবে মানুষ করবে, দেখবে ও একদম তোমার স্বপ্নের সমান বড় হবে।

বিশুদ্ধ তখন প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। সে ছবি আঁকছে।
আমি বললাম, বাবা, তোমার ক’টা বন্ধু হয়েছে?
মা, বন্ধু মানে কী?
বন্ধু মানে, সে তোমার সঙ্গী হবে। যার সাথে তুমি সময় কাটাবে। খেলাধুলা করবে।
আমি কি বন্ধু বানাবো?
আমি মাথা নেড়ে বললাম, নিশ্চয়ই। তবে তোমার বন্ধু কারা এবং তোমাকে কী বলছে, সব আমাকে জানাবে কিন্তু।
বিশুদ্ধ বলল, আচ্ছা মা।

বিশুদ্ধ একদিন বলল, মা, আমার দুটো বন্ধু হয়েছে। আজ আমরা স্কুলের মাঠে হাঁটতে গিয়ে আদিল পড়ে গিয়েছিল। সবাই হেসেছিল।
আমি বললাম, কেউ যদি পড়ে যায়, তাকে হাত ধরে ওঠাবে। কিন্তু কখনো হেসো না।

কয়েক বছর পর। আমার ছেলে কলেজে উঠে গেল। আমি সেদিন রাতে ওকে ডেকে আনলাম। ওর বাবা আমার সামনেই বসে আছে।
আমি বললাম, জানো বিশুদ্ধ! আমি তোমাকে একটা স্বপ্ন নিয়ে বড় করেছি।
জ্বি মা, জানি তো।
বলো তো, কী সেটা?
মা, সেটা হলো আমি ভালো পড়াশোনা করবো। একজন বিচারক হবো।
না বাবা, পেশার স্বপ্ন জীবনের প্রয়োজনে। কিন্তু আমার-তোমার সব মানুষের ভালোর জন্য আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। আমি তোমাকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখেছি। তুমি একজন বিশুদ্ধ মানুষ হবে। এতটাই বিশুদ্ধ হবে, যাতে কখনো তোমার মধ্যে অনুশোচনাবোধ না আসে। আমি এটাও চাই, কারো এক ফোটা কান্নার কারণ তুমি না হও। তুমি মানবিক মানুষ হও।
মা, আমি তো এখনো ভালো ছেলে হয়ে আছি।
আমি মুচকি হেসে বললাম, আমার লক্ষ্মী ছেলেটা। শোনো, তোমার এখন বয়ঃসন্ধিকাল। অনেক ভুলের শিকার হতে পারো। যা-ই যা করো, বাবা-মাকে বলবে। কখন কার সাথে মিশছো, কে তোমাকে কী বলেছে; তা-ও আমাদের জানাবে।
আমি যথেষ্ট বড় হয়েছি তো মা।
আমি হাতে হাত রেখে বললাম, না বাবা না। এখনো তুমি সব বুঝতে শেখোনি। তুমি ভয় পেয়ো না। এমনকি কোনো মেয়েকে ভালো লাগলে, সেটাও বলবে। আমাদের তোমার বন্ধু ভেবে নাও।

আমার ছেলেটা সবচেয়ে সুখী। দেখলাম, আগের চেয়েও প্রাণবন্ত হয়ে যাচ্ছে। সে আমাকে সব খুলে বলছে। যা কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, আমাকে আর সোহেলকে জানাচ্ছে।
বিশুদ্ধ পড়া শেষ করলে আমরা একসাথে খেতে বসি। প্রতিনিয়ত কষ্টের স্মৃতিচারণ করি। বিশুদ্ধ মনোযোগ দিয়ে শোনে। মাঝে মাঝে সোহেল আর বিশুদ্ধকে বলি, চলো আমরা চাঁদ দেখি।
বিশুদ্ধ তখন বলে, তোমার পছন্দের গ্রিন টি বানিয়ে আনি।
আমি সুখে কেঁদে ফেলি।

মাঝে মাঝে বিশুদ্ধকে নিয়ে বেড়াতে যাই। যখন আমি ওর হাত ধরে হাঁটতে যাই। হেসে বলে, মা, তুমি আমার হাত ধরো কেন? আমি বরং তোমাকে হাত ধরে উঠাই।
আমি আনন্দে কেঁদে ফেলি।
সোহেল বলে, এই দেখো, কিছু হলেই কেঁদে ফেল।
বিশুদ্ধ বলে, বাবা, মা যখন কাঁদেন; কী সুন্দর লাগে জানো?
আমি হেসে উঠি।

আমার ছেলে ত্রিশ বছরের যুবক। আমার পা ছুঁয়ে সালাম করে বলল, মা আমি আজও কোনো মানুষের কান্নার কারণ হইনি। আমি তোমার চাওয়ার মতো মানবিক আর বিশুদ্ধ মানুষ হয়ে থাকার চেষ্টা করছি।
সবে তো জীবনের শুরু। আমি যে আদর্শ দিয়ে তোমাকে গড়েছি, তা তুমি সারাজীবন ধরে রাখবে। বিশুদ্ধ, তুমি কি কোনো মেয়েকে পছন্দ করো? কাউকে ভালোবাসতে পারো। তবে অনুরোধ থাকবে, সেই ভালোবাসা যেন তোমার শেষ ভালোবাসা হয়।
বিশুদ্ধ মুচকি হেসে বলল, মা, একটা মেয়ে আমাকে খুব পছন্দ করে। কিন্তু…
কোনো কিন্তু নয়। মেয়েটা যদি ভদ্র, শালীন, সরল হয়; তবে তুমি এখনই হ্যাঁ বলে দাও। তুমি দ্বীপান্বিতা গানটি শোনো?
মা, কয়েকবার দেখেছি। সে তো পুরোনো গান।
দ্বীপান্বিতার মতো কোনো সরল মেয়ে যদি তোমাকে পেতে চায়, তুমি না করো না। যে তোমাকে ভালোবাসে, তাকেই তুমি ভালোবাসো। এতে তুমি সারাজীবন সুখী হবে।
মা, এতদিন কেন তুমি আমাকে ভালোবাসা নিয়ে কোনো কথা বলোনি?
আমি সব সময় চেয়েছি, তুমি আগে বিশুদ্ধ মানুষ হও। তারপর জগতের সমস্ত ভালোবাসার সন্ধান করো।
মা, তুমি এত ভালো কেন?
কিছু মানুষকে আল্লাহ ভালো মানুষ করে পাঠিয়ে দেন। চলো, আমরা চাঁদ দেখি।
মা দাঁড়াও, তোমার প্রিয় গ্রিন টি বানিয়ে দিই।
আমি মুচকি হেসে বললাম, বাবা, এদিকে আসো।
আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম, তুমি বড় হও। তুমি পৃথিবীতে শুদ্ধ হয়ে বেঁচে থাকো।

লেখক: মাস্টার্স শেষ পর্ব, সমাজকর্ম বিভাগ, চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর।  সূএ: জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি ঘটনারই বিচার হবে: মির্জা ফখরুল

» খালাস পেলেন ফখরুল, খসরু ও রিজভী

» বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে যুবকের মৃত্যু

» প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

» ইরান ইস্যুতে ফোনালাপ করবেন বাইডেন-নেতানিয়াহু

» ‘দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছে সরকার’

» বিকেলে নাশতায় রাখুন চিকেন বাটার ফ্রাই

» অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল

» রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে জামায়াতের একগুচ্ছ প্রস্তাবনা

» বাসের ধাক্কায় অটোরিকশায় থাকা নারী পোশাক শ্রমিক নিহত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জান্নাতুল নাঈমের গল্প: একজন মায়ের স্বপ্ন

আমার ছেলের নাম বিশুদ্ধ। ওর বাবা সোহেলের সাথে নাম নিয়ে জল্পনা-কল্পনা এক বিশাল উপ্যাখ্যান। সোহেল অবশ্য আমার দেওয়া নামটিই মেনে নিলো।
বিশুদ্ধকে কোলে নিয়ে সোহেলকে বললাম, বলো তো, আমি কেন বিশুদ্ধ নামটা রেখেছি?
সোহেল বলল, ওর নামের মতো করে ও বিশুদ্ধ মানুষ হবে, তাই।
আমি চোখের ভাসা ভাসা পানি আটকে না রেখে বললাম, একদমই তাই।
সুপ্তি, কেঁদো না তো। তুমি ছোটবেলা থেকে নিশ্চয়ই এমনভাবে মানুষ করবে, দেখবে ও একদম তোমার স্বপ্নের সমান বড় হবে।

বিশুদ্ধ তখন প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। সে ছবি আঁকছে।
আমি বললাম, বাবা, তোমার ক’টা বন্ধু হয়েছে?
মা, বন্ধু মানে কী?
বন্ধু মানে, সে তোমার সঙ্গী হবে। যার সাথে তুমি সময় কাটাবে। খেলাধুলা করবে।
আমি কি বন্ধু বানাবো?
আমি মাথা নেড়ে বললাম, নিশ্চয়ই। তবে তোমার বন্ধু কারা এবং তোমাকে কী বলছে, সব আমাকে জানাবে কিন্তু।
বিশুদ্ধ বলল, আচ্ছা মা।

বিশুদ্ধ একদিন বলল, মা, আমার দুটো বন্ধু হয়েছে। আজ আমরা স্কুলের মাঠে হাঁটতে গিয়ে আদিল পড়ে গিয়েছিল। সবাই হেসেছিল।
আমি বললাম, কেউ যদি পড়ে যায়, তাকে হাত ধরে ওঠাবে। কিন্তু কখনো হেসো না।

কয়েক বছর পর। আমার ছেলে কলেজে উঠে গেল। আমি সেদিন রাতে ওকে ডেকে আনলাম। ওর বাবা আমার সামনেই বসে আছে।
আমি বললাম, জানো বিশুদ্ধ! আমি তোমাকে একটা স্বপ্ন নিয়ে বড় করেছি।
জ্বি মা, জানি তো।
বলো তো, কী সেটা?
মা, সেটা হলো আমি ভালো পড়াশোনা করবো। একজন বিচারক হবো।
না বাবা, পেশার স্বপ্ন জীবনের প্রয়োজনে। কিন্তু আমার-তোমার সব মানুষের ভালোর জন্য আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। আমি তোমাকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখেছি। তুমি একজন বিশুদ্ধ মানুষ হবে। এতটাই বিশুদ্ধ হবে, যাতে কখনো তোমার মধ্যে অনুশোচনাবোধ না আসে। আমি এটাও চাই, কারো এক ফোটা কান্নার কারণ তুমি না হও। তুমি মানবিক মানুষ হও।
মা, আমি তো এখনো ভালো ছেলে হয়ে আছি।
আমি মুচকি হেসে বললাম, আমার লক্ষ্মী ছেলেটা। শোনো, তোমার এখন বয়ঃসন্ধিকাল। অনেক ভুলের শিকার হতে পারো। যা-ই যা করো, বাবা-মাকে বলবে। কখন কার সাথে মিশছো, কে তোমাকে কী বলেছে; তা-ও আমাদের জানাবে।
আমি যথেষ্ট বড় হয়েছি তো মা।
আমি হাতে হাত রেখে বললাম, না বাবা না। এখনো তুমি সব বুঝতে শেখোনি। তুমি ভয় পেয়ো না। এমনকি কোনো মেয়েকে ভালো লাগলে, সেটাও বলবে। আমাদের তোমার বন্ধু ভেবে নাও।

আমার ছেলেটা সবচেয়ে সুখী। দেখলাম, আগের চেয়েও প্রাণবন্ত হয়ে যাচ্ছে। সে আমাকে সব খুলে বলছে। যা কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, আমাকে আর সোহেলকে জানাচ্ছে।
বিশুদ্ধ পড়া শেষ করলে আমরা একসাথে খেতে বসি। প্রতিনিয়ত কষ্টের স্মৃতিচারণ করি। বিশুদ্ধ মনোযোগ দিয়ে শোনে। মাঝে মাঝে সোহেল আর বিশুদ্ধকে বলি, চলো আমরা চাঁদ দেখি।
বিশুদ্ধ তখন বলে, তোমার পছন্দের গ্রিন টি বানিয়ে আনি।
আমি সুখে কেঁদে ফেলি।

মাঝে মাঝে বিশুদ্ধকে নিয়ে বেড়াতে যাই। যখন আমি ওর হাত ধরে হাঁটতে যাই। হেসে বলে, মা, তুমি আমার হাত ধরো কেন? আমি বরং তোমাকে হাত ধরে উঠাই।
আমি আনন্দে কেঁদে ফেলি।
সোহেল বলে, এই দেখো, কিছু হলেই কেঁদে ফেল।
বিশুদ্ধ বলে, বাবা, মা যখন কাঁদেন; কী সুন্দর লাগে জানো?
আমি হেসে উঠি।

আমার ছেলে ত্রিশ বছরের যুবক। আমার পা ছুঁয়ে সালাম করে বলল, মা আমি আজও কোনো মানুষের কান্নার কারণ হইনি। আমি তোমার চাওয়ার মতো মানবিক আর বিশুদ্ধ মানুষ হয়ে থাকার চেষ্টা করছি।
সবে তো জীবনের শুরু। আমি যে আদর্শ দিয়ে তোমাকে গড়েছি, তা তুমি সারাজীবন ধরে রাখবে। বিশুদ্ধ, তুমি কি কোনো মেয়েকে পছন্দ করো? কাউকে ভালোবাসতে পারো। তবে অনুরোধ থাকবে, সেই ভালোবাসা যেন তোমার শেষ ভালোবাসা হয়।
বিশুদ্ধ মুচকি হেসে বলল, মা, একটা মেয়ে আমাকে খুব পছন্দ করে। কিন্তু…
কোনো কিন্তু নয়। মেয়েটা যদি ভদ্র, শালীন, সরল হয়; তবে তুমি এখনই হ্যাঁ বলে দাও। তুমি দ্বীপান্বিতা গানটি শোনো?
মা, কয়েকবার দেখেছি। সে তো পুরোনো গান।
দ্বীপান্বিতার মতো কোনো সরল মেয়ে যদি তোমাকে পেতে চায়, তুমি না করো না। যে তোমাকে ভালোবাসে, তাকেই তুমি ভালোবাসো। এতে তুমি সারাজীবন সুখী হবে।
মা, এতদিন কেন তুমি আমাকে ভালোবাসা নিয়ে কোনো কথা বলোনি?
আমি সব সময় চেয়েছি, তুমি আগে বিশুদ্ধ মানুষ হও। তারপর জগতের সমস্ত ভালোবাসার সন্ধান করো।
মা, তুমি এত ভালো কেন?
কিছু মানুষকে আল্লাহ ভালো মানুষ করে পাঠিয়ে দেন। চলো, আমরা চাঁদ দেখি।
মা দাঁড়াও, তোমার প্রিয় গ্রিন টি বানিয়ে দিই।
আমি মুচকি হেসে বললাম, বাবা, এদিকে আসো।
আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললাম, তুমি বড় হও। তুমি পৃথিবীতে শুদ্ধ হয়ে বেঁচে থাকো।

লেখক: মাস্টার্স শেষ পর্ব, সমাজকর্ম বিভাগ, চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর।  সূএ: জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com