সালটা ১৯৯৬। একটি ফুটবল ম্যাচ দেখতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন ব্রিটেনের এসেক্সের বাসিন্দা পিটার হিকেলস। সেখানে আচমকাই অসুস্থ হেয়ে পড়েন তিনি। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা ভেবেছিলেন, বাত হয়েছে পিটারের। তবে কিছুদিন পরই দেখা যায় ‘হজকিন্স লিম্ফোমা’ নামের এক ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি।
চিকিৎসকেরা সে সময় পিটারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ১০ বছরের বেশি বাঁচবেন না তিনি। মাত্র ২১ বছর বয়সে মরণরোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পরেছিলেন পিটার। তার উপর চিকিৎসকরা জানান, চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি নিলে কিছুদিন পর তার শুক্রাণু উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে।
সেই সময় চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দেন, শুক্রাণু সংরক্ষণ করে রাখার। সেই মতো একটি স্পার্ম ব্যাংকে খুব কম উষ্ণতায় শুক্রাণু জমিয়ে রাখেন পিটার। কিন্তু তারপর সব সমীকরণ উল্টে যায়। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর কেটে গেছে ২৬ বছর। আজও জীবিত রয়েছেন পিটার।
তবে ক্যানসারের চিকিৎসা চলার সময় নবম কেমো নেওয়ার পর প্রায় শুক্রাণুশূন্য হয়ে যান পিটার। তাই সন্তানধারণের ইচ্ছা থাকলেও স্বাভাবিক ভাবে বাবা হওয়া বেশ কঠিন ছিল তার জন্য।
সে কারণে সম্প্রতি পিটার ও তার প্রেমিকা ৩২ বছর বয়সী অরেলিয়া সিদ্ধান্ত নেন, ২৬ বছর আগে জমিয়ে রাখা শুক্রাণু কাজে লাগিয়ে আইভিএফ পদ্ধতি ব্যবহার করেই সন্তান জন্ম দেওয়ার চেষ্টা করবেন। সফল হয়েছে তাদের সেই চেষ্টা। গত ২০ অক্টোবর এক সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন পিটার ও অরেলিয়া।
এ ঘটনা অবাক করে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাধ্যমে যে অনেক অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়, সেটাই যেন আরও একবার প্রমাণ হলো পিটারের ঘটনার মধ্য দিয়ে। বাবা হওয়ার পর ৪৭ বছর বয়সী পিটারকে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছেন তার কাছের মানুষরা। বাদ যাননি তার প্রেমিকাও।