পুলিশের কাজ জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, যা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন। এটি বাস্তবায়ন না হলে সমাজে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এসব কাজ করতে গিয়ে পুলিশের ছোটখাটো ঘটনা ঘটলে আমরা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখি। অথচ পুলিশকে সবসময় সম্মান ও শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখা উচিত। তাদের ছোটখাটো ভুল হলে আমরা পরামর্শ দিতে পারি।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে পুলিশ স্টাফ কলেজ (পিএসসি) কনভেনশন হলে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’র অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
২০৪১ সালের লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিজ দায়িত্বের বাইরেও বাড়তি দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, আপনারা (পুলিশ) নৈমিত্তিক কাজের সঙ্গে শুধু একটি দিন যদি ইউনিয়ন পরিষদে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনসাধারণের সঙ্গে বসে গ্রামের যুবক ও বেকারদের পরামর্শ দিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন তাহলে তারা আর কোনো অন্ধকারে থাকবে না। ফলে দেশ-মানুষ উপকৃত হবে, এ জায়গাটায় আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে পুলিশের। অধস্তনদের এসব কাজে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। গ্রামের অবহেলিত মানুষকে এগিয়ে নিতে হবে। একা হয়তো অনেক কিছুই সম্ভব নয়। তবে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সম্ভব অনেক কিছু। আউট অব দ্য বক্স, দায়িত্বের বাইরে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। ইনোভেটিভ কাজে অগ্রগামী হতে হবে।
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ক্লাসে এখন জীবনমুখী কথাবার্তা হয় না। কীভাবে শিক্ষার্থীরা পাস করবে সেটাই মুখ্য থাকে। শুধু সার্টিফিকেটই জীবনের সবকিছু নয়, জীবনের মানে, দায়িত্ববোধ, জানতে বুঝতে ও শিখতে হবে। আমরা অপরাধ ঘটলেই কেবল অপরাধীর পেছনে ছুটবো! আমার মনে হয় প্রো-অ্যাকটিভ কিছু করতে হবে। যাতে অপরাধী অপরাধ থেকে বিরত থাকে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, লোনের ব্যবস্থা করা।
পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ করা পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রয়াত সাতজন পুলিশ সদস্যের পরিবারকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্বীকৃতি স্মারক তুলে দেন সচিব, আইজিপিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
করোনার কারণে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারকে ঢাকায় না ডেকে স্থানীয় পর্যায়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। এর আগে মৃত্যুবরণ করা পুলিশ সদস্যদের স্মরণে পুলিশ মেমোরিয়ালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় ও তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।