ঘুষ দিলে জায়গা হবে জাহান্নামে: অর্থমন্ত্রী

শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হয়— ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আপনারা ঘুষ দিচ্ছেন কেন? আপনাদের কাছে অনুরোধ, ঘুষ দেবেন না। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আসন্ন বাজেট উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

এ সময় হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘুষ দেওয়া যাবে না। যারা ঘুষ দেয় তাদের জায়গা হবে জাহান্নামে।’ সভায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন।

 

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কর দিতে হবে। কর না দিলে পদ্মা সেতু কীভাবে হবে? মেগা প্রকল্প শেষ হবে কীভাবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বাজেট হবে সবার জন্য লাভজনক। ব্যবসায়ীরা ঠকবেন না, তারা ঠকলে দেশ পিছিয়ে যাবে।

 

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘‘আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল থিম হচ্ছে— ‘সবার জন্য সমান সুযোগ’। ব্যবসায়ীরাও ঠকবে না আবার সরকারও জিতবে। সরকার সব ক্ষেত্রে বেশি নিলো ব্যবসায়ীরা কিছু পেলো না— এ অভিযোগ সরকার শুনতে চায় না।’

 

তিনি বলেন, ‘গত ১৩ বছরে রাজস্ব আট গুণ বেড়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের অবদান রয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের এটাও মনে রাখতে হবে, আগামীতেও কর পরিশোধ করতে হবে।

 

তিনি বলেন, ‘সরকার পরোক্ষ কর থেকে সরে এসে প্রত্যক্ষ করের দিকে এগোচ্ছে।

 

সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকায় উন্নীত করা, করপোরেট কর হার আরও আড়াই শতাংশ কমানো, রফতানি খাতসহ সব শিল্প খাতে উৎসে কর ও আগাম কর ফেরত দেওয়ার পরিবর্তে বিলোপ করা। এ ছাড়া শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস করে তৈরি পণ্যে ২৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও মধ্যবর্তী কাঁচামালে ৭ থেকে ১০ শতাংশ, মৌলিক ও দেশে উৎপাদিত হয় না— এমন মধ্যবর্তী কাঁচামালে ১ থেকে ৩ শতাংশ ও শিল্প খাতের যন্ত্রপাতি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হয়, যখন অল্পকিছু বিপথগামী শুল্ক-কর কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীর জন্য রাজস্ব বিভাগের বদনাম হয়। আমরা উভয়ের মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব চাই। সমালোচনা নয়, সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

 

এ সময় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন করদাতাদের হয়রানি না করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, নিরীক্ষা ও পরিদর্শন– সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বিধি মোতাবেক পরিচালনা করা উচিত। এতে হয়রানিমুক্ত থাকবেন ব্যবসায়ীরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» থাইল্যান্ডে দাউ দাউ করে জ্বলছে পুরো পাহাড়

» বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৪৯ জন আটক

» আদালতে নেওয়া হয়েছে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে

» এবারের আইপিএলে যত নতুন নিয়ম

» জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চিত্র প্রদর্শনীতে একাত্তরের গণহত্যার উপাখ্যান

» উরফিকে নিয়ে এবার মুখ খুললেন কারিনা

» ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৮ জন আটক

» ধারালো অস্ত্রসহ ছিনতাইকারী গ্রেফতার

» জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের পল্লী চিকিৎসককে কুপিয়ে গণপিটুনি খেলেন যুবলীগ নেতা

» কক্সবাজার সৈকত ভেসে আসছে অসংখ্য মৃত জেলিফিশ

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঘুষ দিলে জায়গা হবে জাহান্নামে: অর্থমন্ত্রী

শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হয়— ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আপনারা ঘুষ দিচ্ছেন কেন? আপনাদের কাছে অনুরোধ, ঘুষ দেবেন না। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আসন্ন বাজেট উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

 

এ সময় হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘুষ দেওয়া যাবে না। যারা ঘুষ দেয় তাদের জায়গা হবে জাহান্নামে।’ সভায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেন।

 

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কর দিতে হবে। কর না দিলে পদ্মা সেতু কীভাবে হবে? মেগা প্রকল্প শেষ হবে কীভাবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বাজেট হবে সবার জন্য লাভজনক। ব্যবসায়ীরা ঠকবেন না, তারা ঠকলে দেশ পিছিয়ে যাবে।

 

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘‘আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল থিম হচ্ছে— ‘সবার জন্য সমান সুযোগ’। ব্যবসায়ীরাও ঠকবে না আবার সরকারও জিতবে। সরকার সব ক্ষেত্রে বেশি নিলো ব্যবসায়ীরা কিছু পেলো না— এ অভিযোগ সরকার শুনতে চায় না।’

 

তিনি বলেন, ‘গত ১৩ বছরে রাজস্ব আট গুণ বেড়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের অবদান রয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের এটাও মনে রাখতে হবে, আগামীতেও কর পরিশোধ করতে হবে।

 

তিনি বলেন, ‘সরকার পরোক্ষ কর থেকে সরে এসে প্রত্যক্ষ করের দিকে এগোচ্ছে।

 

সভায় এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকায় উন্নীত করা, করপোরেট কর হার আরও আড়াই শতাংশ কমানো, রফতানি খাতসহ সব শিল্প খাতে উৎসে কর ও আগাম কর ফেরত দেওয়ার পরিবর্তে বিলোপ করা। এ ছাড়া শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস করে তৈরি পণ্যে ২৫ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও মধ্যবর্তী কাঁচামালে ৭ থেকে ১০ শতাংশ, মৌলিক ও দেশে উৎপাদিত হয় না— এমন মধ্যবর্তী কাঁচামালে ১ থেকে ৩ শতাংশ ও শিল্প খাতের যন্ত্রপাতি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হয়, যখন অল্পকিছু বিপথগামী শুল্ক-কর কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীর জন্য রাজস্ব বিভাগের বদনাম হয়। আমরা উভয়ের মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব চাই। সমালোচনা নয়, সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

 

এ সময় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন করদাতাদের হয়রানি না করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, নিরীক্ষা ও পরিদর্শন– সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বিধি মোতাবেক পরিচালনা করা উচিত। এতে হয়রানিমুক্ত থাকবেন ব্যবসায়ীরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com