ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার সুনিশ্চিত করতে একগুচ্ছ পরিবর্তন এল হোয়াটসঅ্যাপে। হোয়াটসঅ্যাপ বর্তমানে মেটা প্ল্যাটফর্মস আইএনসি সংস্থার অধীনস্থ, যার মালিক ফেসবুক কর্ণধার মার্ক জুকারবার্গ।
ফেসবুকে গ্রাহকের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য এর আগে একাধিক বার সমালোচিত হয়েছেন মার্ক। মার্কিন কংগ্রেসের পর্যন্ত হাজিরা দিতে হয়েছে তাকে। তার পর প্রথমে ফেসবুকে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। শুক্রবার হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রেও তেমন পরিবর্তন সামনে আনল মার্কের সংস্থা।
বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপই সর্বাধিক ব্যবহৃত মেসেজিং অ্যাপ। তাই কথোপকথনের নিরাপত্তার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তার জন্য আনা হয়েছে ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজেস’ নামের বিশেষ উপায়। এর মাধ্যমে এক জন ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানোর পর, সেটি চ্যাট রেকর্ড থেকে একেবারে উড়িয়ে দিতে পারবেন।
তার জন্য ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজেস’-কে এনাবেল করতে হবে। তার পর কোনও এক ব্যক্তিকে বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠানো মেসেজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উড়ে যাবে। নিজের পাঠানো মেসেজ কতদিনে তুলে নিতে চান, তা-ও বেঁধে দিতে পারবেন গ্রাহক। তার জন্য ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন এবং ৯০ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের তরফে।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন
সিম কার্ড হারিয়ে গেলে বা হস্তান্তরিত হলে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যক্তিগত মেসেজও বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে দ্বিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা আনা হয়েছে। তার মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ খুলতে গেলে বা রিসেট করতে গেলে ছয় সংখ্যার পিন দিতে হবে। ভেরিফাই করতে হবে অ্যাকাকাউন্ট।
এনক্রিপটেড চ্যাটস
পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা কাছের মানুষ, নির্দিষ্ট ভাবে যার উদ্দেশে লিখিত মেসেজ, ছবি, ভিডিয়ো, ভয়েস মেসেজ বা গুরুত্বপূর্ণ নথি পাঠানো হবে, তিনি অন্য কারও সঙ্গে সেগুলো শেয়ার করতে পারবেন না। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে প্রেরক এবং প্রাপক, দুইজনের মধ্যেই শুধুমাত্র সেগুলো আদানপ্রদান করা যাবে।
ভিউ ওয়ান্স
ছবি এবং ভিডিও এক বার দেখা হলেই চ্যাট রেকর্ড থেকে গায়েব হয়ে যাবে।
এন্ড টু এন্ড এনক্রিপটেড ব্যাকআপ
আই ক্লাউড বা গুগল ড্রাইভে কথোপকথনের ব্যাকআপ রাখার ক্ষেত্রেও বাড়তি নিরাপত্তা মিলবে। পাসওয়ার্ড বা ৬৪ সংখ্যার এনক্রিপশন কি দিয়েই সেগুলো খোলা যাবে।
টাচ আইডি, ফেস আইডি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক
নিজের ফোন বেহাত হলেও ব্যাক্তিগত চ্যাট ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি কাজ দেবে।
ব্লক অ্যান্ড রিপোর্ট
অবাঞ্ছিত এবং অপ্রয়োজনীয় মেসেজ রুখতে কার্যকর এই প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা অ্যাকাউন্টকে ব্লক করে দেওয়া যাবে। আবার এই সংক্রান্ত অভিযোগও জানানো পারবেন। অবাঞ্ছিত মেসেজ সেভ করে রেখে, আইনি পদক্ষেপ করতে চাইলেও করা যাবে।
গ্রুপ প্রাইভেসি সেটিং
ইচ্ছামতো কেউ কোনও গ্রুপে টানতে পারবেন না। কাদের সঙ্গে গ্রুপে যুক্ত হতে ইচ্ছুক, তা গ্রাহক নিজেই ঠিক করতে পারবেন।
অ্যাডমিন কন্ট্রোল
গ্রুপে অনেকে থাকলেও, কে বা কারা মেসেজ লিখতে পারবেন, তা ঠিক করতে পারবেন অ্যাডমিন।