গৃহ পরিচারিকার কাজের টোপ দিয়ে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হতো কিশোরীদের। কিছু দিন পরই তাদের ‘সারোগেসি’ অর্থাৎ গর্ভ ভাড়া দেওয়ার ব্যবসায় জোর করে নামানো হতো। মানবপাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে এসে এমনই কাহিনি শোনালেন দুই তরুণী। তাদের মধ্যে একজন সারোগেসির মাধ্যমে ১০ সন্তান জন্ম দিয়েছেন! অন্যজন দিয়েছেন ছয়টি।
কীভাবে ঝাড়খণ্ড থেকে মেয়েদের কাজ দেওয়ার নামে দিল্লিতে পাচার করে সেখানে জোর করে গর্ভ ভাড়া দেওয়ার কাজে লাগানো হচ্ছে, তারই বর্ণনা দিয়েছেন ওই দুজন। ১৭ বছর পরে সম্প্রতি পাচারকারীদের জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে এমনই দাবি করেছেন তারা।
তাদের দাবি, মেয়ে পাচারকারী হিসেবে কাজ করে দিল্লির একটি প্লেসমেন্ট এজেন্সি। আড়ালে তারাই জোর করে গর্ভভাড়া দেওয়ার ব্যবসা চালাচ্ছে। সম্প্রতি পান্নালাল নামে ঝাড়খণ্ডের এক দাগি পাচারকারী জেরায় স্বীকার করেছেন, গত ১৫ বছরে পাঁচ হাজারেরও বেশি মেয়েকে তিনি দিল্লিতে পাচার করেছেন। গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি।
ঝাড়খণ্ড রাজ্যের শিশুকল্যাণ আধিকারিক বৈদ্যনাথ কুমার এই ঘটনার জন্য দিল্লির প্লেসমেন্ট এজেন্সিগুলোকেই দায়ী করেছেন। ইতিমধ্যে ঝাড়খণ্ড সরকার এই ঘটনা নিয়ে দিল্লি সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে এবং একই সঙ্গে প্লেসমেন্ট এজেন্সিগুলো যাতে বন্ধ করা যায়, তার দাবিও জানিয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার শিশুকল্যাণ কমিটির সাবেক সদস্য বাসন্তী মুন্ডা জানিয়েছেন, রাজ্যের আদিবাসী প্রভাবিত জেলাগুলোকে নিজেদের লক্ষ্য বানায় প্লেসমেন্ট এজেন্সগুলো। ১৮ বছরের কম বসয়ীদেরই পরিচারিকার কাজের টোপ দিয়ে পাচার করা হয়।
তার দাবি, এই বয়সের মেয়েরা পরিণত না হওয়ায় তাদের সহজেই নিজেদের জালে ফাঁসাতে পারে এজেন্সিগুলো। স্বচ্ছল জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয় ওই মেয়েগুলোকে। এরপর করানো হয় গর্ভভাড়া দেওয়ার কাজ।