কোন দেশের অপয়া সংখ্যা কত?

আনলাকি ১৩’ এটি নিশ্চয়ই সবাই জানেন! ১৩ সংখ্যাটিকে বিশ্বের অনেকে দেশের মানুষই অপয়া হিসেবেই ভেবে থাকেন। কুসংস্কার নিয়ে নানা মানুষের নানা মত। স্থান বিশেষে মানুষের মধ্যে কুসংষ্কারও এক এক জিনিস নিয়ে৷ এছাড়াও ধর্মেভেদেও রয়েছে কুসংস্কারের পার্থক্য। যেমন কালো পোশাক হিন্দুদের কাছে অশুভ কিন্তু মুসলিমদের কাছে সেটাই শুভ। এরকমই সংখ্যা নিয়েও সংস্কার রয়েছে মানুষের মধ্যে। একেক জায়গার মানুষের মধ্যে একেক সংখ্যা অশুভ৷ তার পিছনে রয়েছে কিছু অদ্ভুত যুক্তিও। তবে জেনে নিন দেশভেদে অপয়া সংখ্যার রকমসকম-

১. ৩৯ (ঊনচল্লিশ)

আফগানিস্থানের মানুষের মধ্যে অদ্ভুতরকমের দুর্বলতা রয়েছে এই সংখ্যাটিকে নিয়ে। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও একথা সত্যি। সেখানে কোনো মানুষ নিজেদের ব্যবহার্য কোনো কিছুতেই ৩৯ দেখতে পারেননা বরং তাদের কাছে অভিশাপ এই সংখ্যাটি। সেখানকার মানুষের ধারণা কোনো একসময় কিছু ব্যাভিচারী ৩৯ নেমপ্লেটের গাড়ি চালাতো আর ৩৯ নম্বর বাড়িতে থাকতো। সেই থেকেই এই অবস্থা। অনেকে আবার পরিমাপের পুরোনো এক নিয়ম অ্যবজাডের প্রতি ঘৃনার কারণেও এড়িয়ে চলেন এই সংখ্যাটিকে। তবে কারণ যাই হোক না কেন, ১৭ হাজার ডলারের একটা গাড়িও ৭ হাজার টাকায় বেঁচে দেয়া সম্ভব হয় এখানে যদি কেবল এর পেছনে লাগানো থাকে ৩৯ শব্দটি। শুধু তাই নয়, ৩৯ সংখ্যাটিকে এতটাই ঘৃণা করে এখানের মানুষ যে নিজেদের বয়স ৩৯ হলেও সেটাকে লুকিয়ে ফেলে তারা কিংবা ৪০ বলে জানায়।

২. ০৮৮৮ ৮৮৮ ৮৮৮
বুলগেরিয়ান মোবাইল কোম্পানির এই ফোন নাম্বারটি প্রথমে ব্যবহার করেন কোম্পানির সিইও ভ্লাদিমির গ্রাসনোভ। প্রতিপক্ষের দেয়া বিষে মারা যান তিনি। এরপর এই নম্বরটি যায় মাদক সম্রাট কন্সটান্টিন দিমিত্রোভের কাছে। কয়েকদিন পর মারা যান এই মানুষটিও। এরপর তার হাত থেকে মোবাইল যায় আরেক মাদক সম্রাটের কাছে। আর আন্দাজ করুন তো কি হয়েছিল তার সঙ্গে হ্যাঁ! ঠিক ধরেছেন। অপঘাতে মারা যায় এই লোকটিও। পরপর অপঘাতে তিনজনের মৃত্যুর পর মোবাইলটি বন্ধ করে ফেলা হয়। এখন পর্যন্ত সেটিকে আর কেউ ব্যবহার করেনি।

 

৩. ১৭ (সতেরো)
ইতালিতে ১৭ সংখ্যাটিকে প্রচন্ড অপয়া বলে মনে করা হয়। বাইবেলে বর্ণিত বন্যার শুরু হয়েছিল ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে। এছাড়া রোমান হরফে ১৭ লিখে খানিকটা এদিক ওদিক করলেই সেটি হয়ে ওঠে ভিক্সি। যার অর্থ দাড়ায় এরকম – আমি জীবিত ছিলাম। অর্থাৎ, সে এখন মৃত! আর তাই ১৭ নম্বরটিকে সেখানকার কেউই পছন্দ করেনা। হোটেলের কামরায় কিংবা কোনো স্থানে এই নম্বরটি থাকেনা। ১৬ এর পর ১৮ শুরু হয়। আর দিনের ক্ষেত্রে তো কোনো কথাই নেই! বিশেষ করে ১৭ তারিখ যদি শুক্রবার দিনে পড়ে তাহলে এটাকে ভয়ানক অপয়া মনে করা হয়। আর যদি হয় সেটা নভেম্বরের কোনো দিন তাহলে পুরো মাসটাকেই অপয়া বলে ধরে নেয়া হয়।

৪. ২৫০ (দুইশত পঞ্চাশ)
চীনে ২৫০ শব্দটির ইতিহাসের শুরু হয় তামার মূদ্রার সময় থেকে। সেসময় মূদ্রার ভালো মান ধরা হতো হাজার থেকে। এর অর্ধেক, মানে ৫০০ মূদ্রা থাকলে বুঝতে হবে সে একটু নীচু জাতের। আর এর থেকেও কম, ২৫০ মূদ্রা থাকলে বুঝতে হবে সে ভয়ানক নীচু শ্রেণীর। আর এই ব্যবহার থেকেই ২৫০ নিয়ে খারাপ ধারণা জন্মে গিয়েছে চীনাবাসীদের মনে। ২৫০ সংখ্যাটিকে খুব জেনে বুঝেই এড়িয়ে চলে তারা। কিছুদিন আগে গালফস্ট্রিম জি ২৫০ নামের একটি বিমান পর্যন্ত নিজের নাম বদলে ফেলে জি ২৮০ করে ফেলেছে এই কারণে।

 

৫. ৭ (সাত)
সাতকে অনেকে ভালো বা সৌভাগ্যের বাহক বলে মনে করলেও চীনে কিন্তু জিনিসটি একেবারেই নেতিবাচক ইঙ্গিত প্রকাশ করে। ওই দেশে সাত মানে মৃত্যু, ভয়, বিপদ। চাইনিজ ক্যালেন্ডারের সাত নম্বর মাসটিকে অপয়া বলে মনে করা হয়। ডাকা হয় ভূতুড়ে মাস নামে। মনে করা হয় এই মাসে ভূত বেরিয়ে আসে। সংখ্যাটিকে অপয়া বলার আরো বেশ কিছু কারণ আছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালে জুলাই এর ১৭ তারিখে ১৭১৭ পূর্ব ইউক্রেনে এমএইচ-১৭ ধ্বংস হয়। এর সঙ্গে জড়িত ছিল ৭৭৭ বোয়িং, যেটা ব্যবহার করা হচ্ছিল ১৭ বছর ধরে। এছাড়াও বিমান দূর্ঘটনার আরো অনেক নমুনায় সাত সংখ্যাটি উপস্থিত থাকায় এটাকে অপয়া মনে করা হয়।  সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাষ্ট্রপতিকে সরানোর উদ্যোগ নেই: প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব

» রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

» গণঅভ্যুত্থান বিরোধী চক্রান্ত করার সুযোগ রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হবে না

» পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে প্রসঙ্গ তোলাটা সন্দেহজনক : নজরুল ইসলাম

» গণমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদের দালালমুক্ত করতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বসুন্ধরা আই হসপিটালের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন

» ন্যাশনাল মোবাইল ফটোগ্রাফি কনটেস্ট ২০২৪ এর আয়োজন করেছে রিয়েলমি

» পলাশ থানা বিএনপির সভাপতি এফরান আলী আর বেঁচে নেই

» পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কোথাও থেকে কেউ খেলছে এই সরকারের সঙ্গে: রিজভী

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কোন দেশের অপয়া সংখ্যা কত?

আনলাকি ১৩’ এটি নিশ্চয়ই সবাই জানেন! ১৩ সংখ্যাটিকে বিশ্বের অনেকে দেশের মানুষই অপয়া হিসেবেই ভেবে থাকেন। কুসংস্কার নিয়ে নানা মানুষের নানা মত। স্থান বিশেষে মানুষের মধ্যে কুসংষ্কারও এক এক জিনিস নিয়ে৷ এছাড়াও ধর্মেভেদেও রয়েছে কুসংস্কারের পার্থক্য। যেমন কালো পোশাক হিন্দুদের কাছে অশুভ কিন্তু মুসলিমদের কাছে সেটাই শুভ। এরকমই সংখ্যা নিয়েও সংস্কার রয়েছে মানুষের মধ্যে। একেক জায়গার মানুষের মধ্যে একেক সংখ্যা অশুভ৷ তার পিছনে রয়েছে কিছু অদ্ভুত যুক্তিও। তবে জেনে নিন দেশভেদে অপয়া সংখ্যার রকমসকম-

১. ৩৯ (ঊনচল্লিশ)

আফগানিস্থানের মানুষের মধ্যে অদ্ভুতরকমের দুর্বলতা রয়েছে এই সংখ্যাটিকে নিয়ে। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও একথা সত্যি। সেখানে কোনো মানুষ নিজেদের ব্যবহার্য কোনো কিছুতেই ৩৯ দেখতে পারেননা বরং তাদের কাছে অভিশাপ এই সংখ্যাটি। সেখানকার মানুষের ধারণা কোনো একসময় কিছু ব্যাভিচারী ৩৯ নেমপ্লেটের গাড়ি চালাতো আর ৩৯ নম্বর বাড়িতে থাকতো। সেই থেকেই এই অবস্থা। অনেকে আবার পরিমাপের পুরোনো এক নিয়ম অ্যবজাডের প্রতি ঘৃনার কারণেও এড়িয়ে চলেন এই সংখ্যাটিকে। তবে কারণ যাই হোক না কেন, ১৭ হাজার ডলারের একটা গাড়িও ৭ হাজার টাকায় বেঁচে দেয়া সম্ভব হয় এখানে যদি কেবল এর পেছনে লাগানো থাকে ৩৯ শব্দটি। শুধু তাই নয়, ৩৯ সংখ্যাটিকে এতটাই ঘৃণা করে এখানের মানুষ যে নিজেদের বয়স ৩৯ হলেও সেটাকে লুকিয়ে ফেলে তারা কিংবা ৪০ বলে জানায়।

২. ০৮৮৮ ৮৮৮ ৮৮৮
বুলগেরিয়ান মোবাইল কোম্পানির এই ফোন নাম্বারটি প্রথমে ব্যবহার করেন কোম্পানির সিইও ভ্লাদিমির গ্রাসনোভ। প্রতিপক্ষের দেয়া বিষে মারা যান তিনি। এরপর এই নম্বরটি যায় মাদক সম্রাট কন্সটান্টিন দিমিত্রোভের কাছে। কয়েকদিন পর মারা যান এই মানুষটিও। এরপর তার হাত থেকে মোবাইল যায় আরেক মাদক সম্রাটের কাছে। আর আন্দাজ করুন তো কি হয়েছিল তার সঙ্গে হ্যাঁ! ঠিক ধরেছেন। অপঘাতে মারা যায় এই লোকটিও। পরপর অপঘাতে তিনজনের মৃত্যুর পর মোবাইলটি বন্ধ করে ফেলা হয়। এখন পর্যন্ত সেটিকে আর কেউ ব্যবহার করেনি।

 

৩. ১৭ (সতেরো)
ইতালিতে ১৭ সংখ্যাটিকে প্রচন্ড অপয়া বলে মনে করা হয়। বাইবেলে বর্ণিত বন্যার শুরু হয়েছিল ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে। এছাড়া রোমান হরফে ১৭ লিখে খানিকটা এদিক ওদিক করলেই সেটি হয়ে ওঠে ভিক্সি। যার অর্থ দাড়ায় এরকম – আমি জীবিত ছিলাম। অর্থাৎ, সে এখন মৃত! আর তাই ১৭ নম্বরটিকে সেখানকার কেউই পছন্দ করেনা। হোটেলের কামরায় কিংবা কোনো স্থানে এই নম্বরটি থাকেনা। ১৬ এর পর ১৮ শুরু হয়। আর দিনের ক্ষেত্রে তো কোনো কথাই নেই! বিশেষ করে ১৭ তারিখ যদি শুক্রবার দিনে পড়ে তাহলে এটাকে ভয়ানক অপয়া মনে করা হয়। আর যদি হয় সেটা নভেম্বরের কোনো দিন তাহলে পুরো মাসটাকেই অপয়া বলে ধরে নেয়া হয়।

৪. ২৫০ (দুইশত পঞ্চাশ)
চীনে ২৫০ শব্দটির ইতিহাসের শুরু হয় তামার মূদ্রার সময় থেকে। সেসময় মূদ্রার ভালো মান ধরা হতো হাজার থেকে। এর অর্ধেক, মানে ৫০০ মূদ্রা থাকলে বুঝতে হবে সে একটু নীচু জাতের। আর এর থেকেও কম, ২৫০ মূদ্রা থাকলে বুঝতে হবে সে ভয়ানক নীচু শ্রেণীর। আর এই ব্যবহার থেকেই ২৫০ নিয়ে খারাপ ধারণা জন্মে গিয়েছে চীনাবাসীদের মনে। ২৫০ সংখ্যাটিকে খুব জেনে বুঝেই এড়িয়ে চলে তারা। কিছুদিন আগে গালফস্ট্রিম জি ২৫০ নামের একটি বিমান পর্যন্ত নিজের নাম বদলে ফেলে জি ২৮০ করে ফেলেছে এই কারণে।

 

৫. ৭ (সাত)
সাতকে অনেকে ভালো বা সৌভাগ্যের বাহক বলে মনে করলেও চীনে কিন্তু জিনিসটি একেবারেই নেতিবাচক ইঙ্গিত প্রকাশ করে। ওই দেশে সাত মানে মৃত্যু, ভয়, বিপদ। চাইনিজ ক্যালেন্ডারের সাত নম্বর মাসটিকে অপয়া বলে মনে করা হয়। ডাকা হয় ভূতুড়ে মাস নামে। মনে করা হয় এই মাসে ভূত বেরিয়ে আসে। সংখ্যাটিকে অপয়া বলার আরো বেশ কিছু কারণ আছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালে জুলাই এর ১৭ তারিখে ১৭১৭ পূর্ব ইউক্রেনে এমএইচ-১৭ ধ্বংস হয়। এর সঙ্গে জড়িত ছিল ৭৭৭ বোয়িং, যেটা ব্যবহার করা হচ্ছিল ১৭ বছর ধরে। এছাড়াও বিমান দূর্ঘটনার আরো অনেক নমুনায় সাত সংখ্যাটি উপস্থিত থাকায় এটাকে অপয়া মনে করা হয়।  সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com