কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত ৪৩

ছবি: সংগৃহীত

 

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো ৫৬ জন।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও এর জেরে সেনাবাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে কঙ্গোলিজ সেনারা ক্র্যাকডাউন শুরু করে ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভ জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এ মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা বন্ধ করতে ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা আন্তগোষ্ঠী সহিংসতার জেরেই বুধবার গোমা শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়ে আসছে। এবারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে করার আহ্বান জানিয়েছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষরা এক পুলিশ সদস্যকে মাটিতে ফেলে লাঠি ও পাথর দিয়ে মারধর করছেন।

এর আগে কঙ্গো কর্তৃপক্ষ বলেছিল, এক পুলিশ সদস্যকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারের (৩১ ‍আগস্ট) এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলে, বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। এছাড়া আরো ১৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও এ ঘটনায় সামরিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কঙ্গোর সেনারা একটি লরিতে বহু মরদেহ স্তূপাকার করে রাখছে ও গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

গোমায় ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের স্থানীয় শাখার প্রধান অ্যান-সিলভি লিন্ডার বলেছেন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর তার ক্লিনিকে গুরুতর ছুরিকাঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে এসেছেন। ক্লিনিকে পৌঁছানোর আগেই অনেকে মারা যান।

এদিকে, এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলে জানায়। এছাড়া এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার পাশাপাশি আটককৃতদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে মনুস্কো।

এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো মিশন বিরোধী বিক্ষোভের ফলে কঙ্গোর গোমা ও বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন শান্তিরক্ষীও ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ দুর্গাপূজা এক মণ্ডপে ২০০-র বেশি প্রতিমা-বিগ্রহ! লাখো ভক্তের সমাগমের প্রস্তুতি

» সিটি ব্যাংক ও গার্ডিয়ানের অংশীদারিত্বে প্রথমবারের মত ব্যাংকিং অ্যাপ থেকে ইন্স্যুরেন্স পলিসি কিনতে পারবেন গ্রাহকেরা

» ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিজিটাল বীমা পলিসি ডক্যুমেন্ট প্রদানের সেবা চালু করল মেটলাইফ বাংলাদেশ

» নওগাঁয় মহিলাসহ ৪ ভুয়া পুলিশ আটক

» প্রাইম ব্যাংক ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স-এর মধ্যে পেরোল ব্যাংকিং চুক্তি স্বাক্ষর

» ইসির ২ আইন সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন

» কল্কির সিক্যুয়েল থেকেও বাদ পড়লেন দীপিকা

» সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন

» বাংলাদেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করেছে: টুকু

» বায়তুল মোকাররম এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ শুরু

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত ৪৩

ছবি: সংগৃহীত

 

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো ৫৬ জন।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও এর জেরে সেনাবাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে কঙ্গোলিজ সেনারা ক্র্যাকডাউন শুরু করে ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভ জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এ মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা বন্ধ করতে ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা আন্তগোষ্ঠী সহিংসতার জেরেই বুধবার গোমা শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়ে আসছে। এবারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে করার আহ্বান জানিয়েছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষরা এক পুলিশ সদস্যকে মাটিতে ফেলে লাঠি ও পাথর দিয়ে মারধর করছেন।

এর আগে কঙ্গো কর্তৃপক্ষ বলেছিল, এক পুলিশ সদস্যকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারের (৩১ ‍আগস্ট) এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলে, বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। এছাড়া আরো ১৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও এ ঘটনায় সামরিক তদন্ত শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কঙ্গোর সেনারা একটি লরিতে বহু মরদেহ স্তূপাকার করে রাখছে ও গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

গোমায় ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের স্থানীয় শাখার প্রধান অ্যান-সিলভি লিন্ডার বলেছেন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর তার ক্লিনিকে গুরুতর ছুরিকাঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে এসেছেন। ক্লিনিকে পৌঁছানোর আগেই অনেকে মারা যান।

এদিকে, এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলে জানায়। এছাড়া এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার পাশাপাশি আটককৃতদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে মনুস্কো।

এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো মিশন বিরোধী বিক্ষোভের ফলে কঙ্গোর গোমা ও বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন শান্তিরক্ষীও ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com