কক্সবাজারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিললেও দাম নিয়ে হতাশ জেলেরা

কক্সবাজারে জেলেদের জালে মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছড়া ফিশারিঘাট এলাকায় ভিড়ছে ইলিশবোঝাই ট্রলার। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিটি ট্রলার থেকে হাজার হাজার ইলিশ নামলেও পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন জেলে ও ট্রলার মালিকরা।

 

এক ট্রলারে পাওয়া আড়াই হাজার ইলিশ বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা পেয়েও নাখোশ হওয়াদের একজন ট্রলার মালিক আলী আকবর। তার ট্রলারে পাওয়া দুই হাজার ৫০০ ইলিশ কিনেছেন তিনজন ব্যবসায়ী। তার জেলেদের আহরিত ৪৫০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪০০-৪৫০ টাকায়, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায় আর এক কেজি বা এর বেশি ওজনের ইলিশ সাড়ে ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় কিনেছেন ক্রেতারা।

665

ট্রলার মালিক আলী আকবর বলেন, সাতদিন ধরে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন উপকূলে ট্রলার চালিয়ে ইলিশের সন্ধান করা হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ট্রলারের এক জালেই ইলিশগুলো ধরা পড়ে। তবে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ইলিশের ওজন ৫০০ গ্রামের কম। বাকি ২০ শতাংশ ইলিশের ওজন ৯০০ গ্রামের বেশি। সব ইলিশের ওজন যদি ৯০০ গ্রাম হতো, তাহলে সব মিলিয়ে ৪০ লাখ টাকা পাওয়া যেত। সে হিসেবে প্রায় ২৫ লাখ টাকা কম পেয়েছি।

 

এফবি সেলিম নামে আরেকটি ট্রলার ট্রলারের মালিক সামসুল আলম বলেন, গভীর সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উপকূলের দিকে আসছে। জানুয়ারির শেষের দিকে এক থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ওজনের ইলিশ পেয়েছি। তবে এখন ধরা পড়া ইলিশের বেশির ভাগের ওজন ৩৫০-৫০০ গ্রাম। আমরা পেয়েছি প্রায় দেড় হাজার ইলিশ। যা বিক্রি করে পাওয়া গেছে প্রায় আট লাখ টাকা।

011

কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা জয়নাল আবেদীন হাজারি বলেন, শনিবার সকাল হতে ১২টা পর্যন্ত ফিশারিঘাটে প্রায় ৫৫ ট্রলার এসেছে। প্রতিটি ট্রলার পর্যাপ্ত ইলিশ ছিল। মাছের সাইজ ছোট হওয়ায় কম ওজনের কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। ইলিশের পাশাপাশি প্রতি ট্রলারে লাইক্ষ্যা, কোরাল, গুইজ্যা, চাপা, মাইট্যাসহ নানা সামুদ্রিক মাছও কুলে আসছে।

 

তিনি আরও জানান, ফিশারিঘাটে পাইকারি দরে ৩৫০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩০০-৩৫০ টাকায়, ৪৫০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪০০-৪৫০ টাকায়, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০-৫৫০ টাকায়, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায়। এ ছাড়া এক কেজি বা এর বেশি ওজনের ইলিশ সাড়ে ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় কিনছেন ক্রেতারা।

 

শহরের বাহারছড়া, কানাইয়ারবাজার, কালুরদোকান, বড়বাজারসহ অন্য খুচরা বাজারগুলোতে ফিশারিঘাটের চেয়ে কেজিতে ৮০-১০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ।

v

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, প্রায় প্রতিটি ট্রলারে হাজারের অধিক ইলিশ আসছে। পাশাপাশি আসছে অন্য মাছও। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ ইলিশ চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। গত বছরের জুলাই-অক্টোবরে দুই দফায় টানা ১০৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। এতে সাগরে ইলিশের প্রজনন বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে আমাদের।

 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান বলেন, শীত মৌসুমে খাদ্যের সন্ধানে গভীর সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উপকূলের দিকে ছুটে আসায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ মিলছে। বিধিনিষেধ মেনে চলায় বঙ্গোপসাগরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। বেড়েছে আকারও। গত বছর জেলায় ১৫ হাজার ২৫৬ টন ইলিশ আহরণ হয়েছিল। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার টন। এখন যেভাবে ইলিশ ধরা পড়ছে, সেটা অব্যাহত থাকলে লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত পূরণে সম্ভাবনা রয়েছে।  সূএ:জাগো নিউজ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করলো বাংলাদেশ

» ভারতের অপপ্রচারে ক্ষতি নেই, আমাদের চিকিৎসা ও বাজার সবই আছে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন

» আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে কোনো আপস নেই : নুর

» দরিদ্র দেশগুলোকে ১০ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

» নির্বাচন কমিশনে ৪টি নতুন কমিটি গঠন

» ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে প্রতিবেশীর মতো : সারজিস

» বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যত বড় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হোক না কেন আমরা জিতবেই.. মাওলানা মামুনুল হক

» ব্র্যাক ব্যাংক-কে ‘বেস্ট ব্যাংকিং পার্টনার অফ দ্যা ইয়ার ২০২৩’ স্বীকৃতি দিয়েছে জেডটিই বাংলাদেশ

» পলাশে নবাগত ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

» অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে বড় বিদ্রোহ হবে: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কক্সবাজারে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিললেও দাম নিয়ে হতাশ জেলেরা

কক্সবাজারে জেলেদের জালে মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছড়া ফিশারিঘাট এলাকায় ভিড়ছে ইলিশবোঝাই ট্রলার। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিটি ট্রলার থেকে হাজার হাজার ইলিশ নামলেও পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন জেলে ও ট্রলার মালিকরা।

 

এক ট্রলারে পাওয়া আড়াই হাজার ইলিশ বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা পেয়েও নাখোশ হওয়াদের একজন ট্রলার মালিক আলী আকবর। তার ট্রলারে পাওয়া দুই হাজার ৫০০ ইলিশ কিনেছেন তিনজন ব্যবসায়ী। তার জেলেদের আহরিত ৪৫০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪০০-৪৫০ টাকায়, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায় আর এক কেজি বা এর বেশি ওজনের ইলিশ সাড়ে ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় কিনেছেন ক্রেতারা।

665

ট্রলার মালিক আলী আকবর বলেন, সাতদিন ধরে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন উপকূলে ট্রলার চালিয়ে ইলিশের সন্ধান করা হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ট্রলারের এক জালেই ইলিশগুলো ধরা পড়ে। তবে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ইলিশের ওজন ৫০০ গ্রামের কম। বাকি ২০ শতাংশ ইলিশের ওজন ৯০০ গ্রামের বেশি। সব ইলিশের ওজন যদি ৯০০ গ্রাম হতো, তাহলে সব মিলিয়ে ৪০ লাখ টাকা পাওয়া যেত। সে হিসেবে প্রায় ২৫ লাখ টাকা কম পেয়েছি।

 

এফবি সেলিম নামে আরেকটি ট্রলার ট্রলারের মালিক সামসুল আলম বলেন, গভীর সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উপকূলের দিকে আসছে। জানুয়ারির শেষের দিকে এক থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ওজনের ইলিশ পেয়েছি। তবে এখন ধরা পড়া ইলিশের বেশির ভাগের ওজন ৩৫০-৫০০ গ্রাম। আমরা পেয়েছি প্রায় দেড় হাজার ইলিশ। যা বিক্রি করে পাওয়া গেছে প্রায় আট লাখ টাকা।

011

কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা জয়নাল আবেদীন হাজারি বলেন, শনিবার সকাল হতে ১২টা পর্যন্ত ফিশারিঘাটে প্রায় ৫৫ ট্রলার এসেছে। প্রতিটি ট্রলার পর্যাপ্ত ইলিশ ছিল। মাছের সাইজ ছোট হওয়ায় কম ওজনের কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। ইলিশের পাশাপাশি প্রতি ট্রলারে লাইক্ষ্যা, কোরাল, গুইজ্যা, চাপা, মাইট্যাসহ নানা সামুদ্রিক মাছও কুলে আসছে।

 

তিনি আরও জানান, ফিশারিঘাটে পাইকারি দরে ৩৫০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩০০-৩৫০ টাকায়, ৪৫০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪০০-৪৫০ টাকায়, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০-৫৫০ টাকায়, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০-৯০০ টাকায়। এ ছাড়া এক কেজি বা এর বেশি ওজনের ইলিশ সাড়ে ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় কিনছেন ক্রেতারা।

 

শহরের বাহারছড়া, কানাইয়ারবাজার, কালুরদোকান, বড়বাজারসহ অন্য খুচরা বাজারগুলোতে ফিশারিঘাটের চেয়ে কেজিতে ৮০-১০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ।

v

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন, প্রায় প্রতিটি ট্রলারে হাজারের অধিক ইলিশ আসছে। পাশাপাশি আসছে অন্য মাছও। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ ইলিশ চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। গত বছরের জুলাই-অক্টোবরে দুই দফায় টানা ১০৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। এতে সাগরে ইলিশের প্রজনন বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে আমাদের।

 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান বলেন, শীত মৌসুমে খাদ্যের সন্ধানে গভীর সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উপকূলের দিকে ছুটে আসায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ মিলছে। বিধিনিষেধ মেনে চলায় বঙ্গোপসাগরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। বেড়েছে আকারও। গত বছর জেলায় ১৫ হাজার ২৫৬ টন ইলিশ আহরণ হয়েছিল। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার টন। এখন যেভাবে ইলিশ ধরা পড়ছে, সেটা অব্যাহত থাকলে লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত পূরণে সম্ভাবনা রয়েছে।  সূএ:জাগো নিউজ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com