ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে অভিযান পরিচালনা করবে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযানে কোনো পশুকে মোটাতাজাকরণ ওষুধ প্রয়োগ করার প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে র্যাব।
ঈদকেন্দ্রিক নিরাপত্তায় সার্বিকভাবে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে বাহিনীটি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন, সড়কে চাঁদাবাজিসহ ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের সব ইউনিট সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহাকেন্দ্রিক নিরাপত্তা কার্যক্রম কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু করেছে র্যাব। পশুর হাটকেন্দ্রিক এবং মানুষের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সকাল থেকে গাবতলী পশুর হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি। করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা সবার মধ্যে মাস্ক বিতরণ করছি।
খন্দকার আল মঈন বলেন, বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী হাটে আনা গরুর মধ্যে মোটাতাজাকরণ বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট পশু ডাক্তারসহ অভিযান পরিচালনা করছেন। তারা দেখছেন কেউ মোটাতাজাকরণ ওষুধ প্রয়োগ করেছে কি না।
কোনো পশুকে ওষুধ খাইয়ে হাটে আনা হলেও পশুর ডাক্তার বিষয়টি বুঝবেন। এমন কোনো ব্যবসায়ীকে পাওয়া গেলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
র্যাব গণমাধ্যম শাখার এ মুখপাত্র বলেন, হাটকেন্দ্রিক জাল টাকার লেনদেন বৃদ্ধি পায়। আমাদের জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন রয়েছে। সন্দেহ হলে আমাদের কাছে এসে যেকেউ মেশিনের মাধ্যমে টাকা যাচাই করে নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন পশু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে পশু নিয়ে এসেছেন। তবে আসার পথে কোথাও কোনো ধরনের ডাকাতি বা চাঁদাবাজি হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। তারপরও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। কোথাও এমন কোনো সম্ভাবনা থেকে থাকলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
কোন ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না জানিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, অনলাইনে প্রচুর পশু কেনাবেচা হচ্ছে। তাই অনলাইনেও মনিটরিং করা হচ্ছে। গ্রাহক যেন কোনোভাবেই প্রতারিত না হয়। আমরা যেকোনো সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছি।
ঈদযাত্রার বিষয়ে তিনি বলেন, বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে র্যাবের টিম রয়েছে। এবার ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির দৌরাত্ম্য কম ছিল। এরপরও কমলাপুর থেকে টিকিট কালোবাজারির দায়ে আমরা ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। রাস্তায় ছিনতাই-চাঁদাবাজি প্রতিরোধে র্যাব কাজ করছে।
যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখলে র্যাবকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা মাঠে আছে। ঈদে রাজধানী শূন্য হয়ে পড়বে। এলাকাভিত্তিক জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। বাসা-বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো যেন অ্যাক্টিভ থাকে। যদি কেউ মনে করেন তাহলে র্যাবের সহযোগিতা নিতে পারবেন। বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি করা হচ্ছে, র্যাবের পেট্রোল টিম কাজ করছে।
র্যাবের সব ইউনিট সর্বাত্মকভাবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।