করোনার কারণে গত দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত হতে যাচ্ছে দিনাজপুরে। দিনাজপুর গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানে অনুষ্ঠিতব্য ঈদের জামাতে ৬-৭ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। যদিও এবারের আয়োজনে ১০ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বৃহত্তম ঈদগাহর উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
তিনি বলেন, এবার এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত হবে। দু-একদিনের মধ্যেই আয়োজনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা হবে। এরই মধ্যে আধুনিক স্থাপত্যশৈলী সমৃদ্ধ ঈদগাহ মিনারকে নবসজ্জায় সাজানো হয়েছে, লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শোলাকিয়া একটি ঐতিহ্যবাহী মাঠ, তবে আয়তনের দিক দিয়ে দিনাজপুর ঈদগাহ মাঠ চারগুণ বড়। শোলাকিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঈদের জামাতের পাশাপাশি দিনাজপুরের এ ময়দানে প্রতিবারে ৬-৭ লাখ মানুষের সমাগম হয়। এবার ঈদের জামায়াতে ইমামতি করবেন মাওলানা শামসুল ইসলাম কাসেমী।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ২০১৭ সালে নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গম্বুজগুলোর দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে।
ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাবের (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। মহাদেশে এত বড় ঈদগাহ মাঠ দ্বিতীয়টি নেই। পুরো মিনার সিরামিক্স দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে।
২০১৭ সাল থেকেই প্রতিবারে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে করোনার প্রকোপের ফলে গত দুই বছরে এ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এবার ঈদের জামাতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদগাহ মাঠ জুড়ে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাঠের আশপাশে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারসহ সব ধরনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রাখার প্রস্তুতি রয়েছে। এখানে এবার একসঙ্গে ১০ লাখ লোকের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।