এই শীতে ওয়াশিং মেশিন কেনার কথা ভাবছেন? মাথায় রাখুন এই ৪টি বিষয়!

কুয়াশার চাদর মুড়ে শীত এসে গেছে। শীতকালে হাত দিয়ে কাপড় ধোয়া বেশ কঠিন একটি কাজ, আর তাই এ সময় অনেকেই ভালোমানের একটি ওয়াশিং মেশিনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। কোন ব্র্যান্ডের বা কী ধরনের ওয়াশিং মেশিন কিনবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া বেশ গোলমেলে মনে হতে পারে। আপনাকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে নিচে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো, যেগুলো মাথায় রাখলে আপনি সহজেই আপনার ঘরের জন্য সঠিক ওয়াশিং মেশিন কিনতে পারবেন।

 

ক্যাপাসিটি

ওয়াশিং মেশিন ৫-১৬ কেজি (প্রতি চক্র) পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাপাসিটিতে (কিলোগ্রামে পরিমাপ করা হয়) পাওয়া যায়। এই ক্যাপাসিটি মূলত এটি কতোটুকু ওজনের কাপড় নিতে পারবে তা নির্দেশ করে। আপনার পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি বেশি হয়ে থাকে, তাহলে বেশি ক্যাপাসিটিযুক্ত ওয়াশিং মেশিন কেনার পরামর্শ দেয়া হয়। কারণ, ছোট মেশিনে বেশি কাপড় ভাগ ভাগ করে দিতে হয় এবং একাধিক চক্রে কাপড় ধোয়া হয় বলে সময় বেশি লাগে। তবে, দুই-তিন জন সদস্যের ছোট পরিবার হলে, কম ক্যাপাসিটির ওয়াশিং মেশিনই যথেষ্ট।

 

ধরন

ওয়াশিং মেশিন বিভিন্ন ধরনে পাওয়া যায় – টপ-লোড (উপর থেকে কাপড় মেশিনে দেয়া হয়), ফ্রন্ট-লোড (সামনে থেকে কাপড় মেশিনে দেয়া হয়), সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এবং আধা-স্বয়ংক্রিয়।

 

টপ-লোড ওয়াশিং মেশিন সাধারণত পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পানির স্তর বজায় রাখে। এই ধরনের ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করা সহজ এবং দামের দিক থেকে সাশ্রয়ী। অন্যদিকে, ফ্রন্ট-লোডিং ওয়াশিং মেশিনে তুলনামূলক বেশি ফিচার থাকে। এটি কম পানি ব্যবহার করে এবং অধিক স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করে, কিন্তু সাধারণত টপ-লোডারের তুলনায় এটি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।

 

আধা-স্বয়ংক্রিয় ওয়াশিং মেশিনে দু’টি টাব থাকে- একটি কাপড় ধোয়ার জন্য আর অন্যটি শুকানোর জন্য। প্রথমে আপনাকে কাপড় ধোয়ার জন্য ওয়াশিং টাবে অপরিষ্কার কাপড় রাখতে হবে। ধোয়ার পরে, আপনাকে কাপড়গুলো অন্য টাবে শুকানোর জন্য রাখতে হবে। ব্যবহারকারীকে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হয় বলে এই ধরনের ওয়াশিং মেশিনের দাম সাধারণত কম হয়ে থাকে।

ফিচার

ওয়াশিং মেশিনের নানাবিধ ফিচার ব্যবহারকারীদের জীবনকে সহজ করে তোলে এবং স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করে। ওয়াশিং মেশিনের কয়েকটি সাধারণ ফিচার হচ্ছে-

  • ওয়াশ সেটিং – আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী পানির স্তর অথবা কী ধরনের ওয়াশ চান (যেমন- জেন্টেল ওয়াশ, কুইক ওয়াশ ইত্যাদি) তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
  • স্পিন সাইকেল – কাপড় শুকাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক আবর্তনের জন্য টাবটি ঘোরে। আপনি যে ধরণের কাপড় শুকাতে চান, তার ওপর নির্ভর করে আপনি উচ্চ বা নিম্ন স্পিন সাইকেল সেট করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কাপড় শুকাতে খুব একটা দেরি হবে না, যদি আপনি সর্বোচ্চ ৭৫০ আরপিএম -এর টপ লোড ওয়াশিং মেশিন অথবা সর্বোচ্চ ১৬০০ আরপিএম -এর ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করেন।
  • ফাজি লজিক – এই ফিচারের মাধ্যমে ওজন বা জামাকাপড়ের ধরণের ওপর নির্ভর করে, মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাইমার, ডিটারজেন্টের পরিমাণ এবং পানির স্তর নির্বাচন সহ উপযুক্ত ধোয়ার ধরন বাছাই করতে সক্ষম হয়।
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ – নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার অধীনে, কাপড়ের গুণমানের ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই সম্পূর্ণরূপে কাপড় ধোয়া হয়।
  • টাইম ডিলে – এটি ব্যবহারকারীদের তাদের সুবিধাজনক সময়ে মেশিনে কাপড় দিতে এবং পরে মেশিন চালু করার সুবিধা প্রদান করে, অথবা এই ফিচার ব্যবহারের মাধ্যমে মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধোয়ার চক্র শুরু করার আগে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাপড় ভিজিয়ে রাখা যায়।

দাম এবং বিক্রয়োত্তর সেবা

ধরন ও ফিচারের ওপর নির্ভর করে, ওয়াশিং মেশিন বিভিন্ন মূল্যে পরিসরে পাওয়া যায়। আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা ওয়াশিং মেশিনটি কেনার জন্য, বাজারে যেসব মডেলের ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায় সেগুলোর ওপর ছোটোখাটো গবেষণা করা এবং আপনার যেসব ফিচার প্রয়োজন সেগুলোর একটি চেকলিস্ট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়াও, নজর রাখুন বিভিন্ন অফারের ওপর। সাধারণত, ২৮ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে স্যামসাং, এলজি, ওয়ার্লপুল ও শার্পের মতো বিশ্বস্ত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মানসম্পন্ন পণ্য ওয়ারেন্টি সহ পাওয়া যায়।

যা করতে হবে তা হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়াশিং মেশিনের ক্যাটালগ দেখুন, উপরে উল্লেখিত ফিচারগুলোর মধ্যে তুলনা করুন এবং আপনার প্রয়োজনীয়তা ও বাজেটের সাথে মিলিয়ে বাছাই করুন আপনার নতুন ওয়াশিং মেশিন। অন্য যেকোনো ইলেকট্রনিক পণ্যের মতো, আপনার ওয়াশিং মেশিনেও সমস্যা হতে পারে, যা সমাধানের প্রয়োজন হবে। তাই, ব্র্যান্ডের বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে জেনে নেওয়াও জরুরি৷ একজন নতুন ক্রেতা হিসেবে, আপনাকে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দুই দফা দাম কমানোর পর ফের বাড়লো সোনার দাম

» রমজানে যানজট কমাতে পুলিশের ১৫ নির্দেশনা

» রমজানে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার অনুরোধ রাষ্ট্রপতির

» দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা

» গুড়ার নন্দীগ্রামে হাইওয়ে পুলিশের পথসভা অনুষ্ঠিত 

» বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবারের মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল লেকচার সপ্তাহ অনুষ্ঠিত

» পাঁচবিবিতে তথ্য আপা প্রকল্পের বিশেষ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

» নগদ-এ কেনাকাটার পেমেন্ট করলে পাবেন বিএমডব্লিউ গাড়ি

» মোবাইল ব্যালেন্স থেকে পরিশোধ করা যাবে সরকারি সেবার বিল

» জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসিকে সহযোগিতায় আগ্রহী নেদারল্যান্ডস

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এই শীতে ওয়াশিং মেশিন কেনার কথা ভাবছেন? মাথায় রাখুন এই ৪টি বিষয়!

কুয়াশার চাদর মুড়ে শীত এসে গেছে। শীতকালে হাত দিয়ে কাপড় ধোয়া বেশ কঠিন একটি কাজ, আর তাই এ সময় অনেকেই ভালোমানের একটি ওয়াশিং মেশিনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। কোন ব্র্যান্ডের বা কী ধরনের ওয়াশিং মেশিন কিনবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া বেশ গোলমেলে মনে হতে পারে। আপনাকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে নিচে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো, যেগুলো মাথায় রাখলে আপনি সহজেই আপনার ঘরের জন্য সঠিক ওয়াশিং মেশিন কিনতে পারবেন।

 

ক্যাপাসিটি

ওয়াশিং মেশিন ৫-১৬ কেজি (প্রতি চক্র) পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাপাসিটিতে (কিলোগ্রামে পরিমাপ করা হয়) পাওয়া যায়। এই ক্যাপাসিটি মূলত এটি কতোটুকু ওজনের কাপড় নিতে পারবে তা নির্দেশ করে। আপনার পরিবারের সদস্য সংখ্যা যদি বেশি হয়ে থাকে, তাহলে বেশি ক্যাপাসিটিযুক্ত ওয়াশিং মেশিন কেনার পরামর্শ দেয়া হয়। কারণ, ছোট মেশিনে বেশি কাপড় ভাগ ভাগ করে দিতে হয় এবং একাধিক চক্রে কাপড় ধোয়া হয় বলে সময় বেশি লাগে। তবে, দুই-তিন জন সদস্যের ছোট পরিবার হলে, কম ক্যাপাসিটির ওয়াশিং মেশিনই যথেষ্ট।

 

ধরন

ওয়াশিং মেশিন বিভিন্ন ধরনে পাওয়া যায় – টপ-লোড (উপর থেকে কাপড় মেশিনে দেয়া হয়), ফ্রন্ট-লোড (সামনে থেকে কাপড় মেশিনে দেয়া হয়), সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এবং আধা-স্বয়ংক্রিয়।

 

টপ-লোড ওয়াশিং মেশিন সাধারণত পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পানির স্তর বজায় রাখে। এই ধরনের ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করা সহজ এবং দামের দিক থেকে সাশ্রয়ী। অন্যদিকে, ফ্রন্ট-লোডিং ওয়াশিং মেশিনে তুলনামূলক বেশি ফিচার থাকে। এটি কম পানি ব্যবহার করে এবং অধিক স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করে, কিন্তু সাধারণত টপ-লোডারের তুলনায় এটি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।

 

আধা-স্বয়ংক্রিয় ওয়াশিং মেশিনে দু’টি টাব থাকে- একটি কাপড় ধোয়ার জন্য আর অন্যটি শুকানোর জন্য। প্রথমে আপনাকে কাপড় ধোয়ার জন্য ওয়াশিং টাবে অপরিষ্কার কাপড় রাখতে হবে। ধোয়ার পরে, আপনাকে কাপড়গুলো অন্য টাবে শুকানোর জন্য রাখতে হবে। ব্যবহারকারীকে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হয় বলে এই ধরনের ওয়াশিং মেশিনের দাম সাধারণত কম হয়ে থাকে।

ফিচার

ওয়াশিং মেশিনের নানাবিধ ফিচার ব্যবহারকারীদের জীবনকে সহজ করে তোলে এবং স্বাচ্ছন্দ্য প্রদান করে। ওয়াশিং মেশিনের কয়েকটি সাধারণ ফিচার হচ্ছে-

  • ওয়াশ সেটিং – আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী পানির স্তর অথবা কী ধরনের ওয়াশ চান (যেমন- জেন্টেল ওয়াশ, কুইক ওয়াশ ইত্যাদি) তা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
  • স্পিন সাইকেল – কাপড় শুকাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক আবর্তনের জন্য টাবটি ঘোরে। আপনি যে ধরণের কাপড় শুকাতে চান, তার ওপর নির্ভর করে আপনি উচ্চ বা নিম্ন স্পিন সাইকেল সেট করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কাপড় শুকাতে খুব একটা দেরি হবে না, যদি আপনি সর্বোচ্চ ৭৫০ আরপিএম -এর টপ লোড ওয়াশিং মেশিন অথবা সর্বোচ্চ ১৬০০ আরপিএম -এর ফ্রন্ট লোড ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করেন।
  • ফাজি লজিক – এই ফিচারের মাধ্যমে ওজন বা জামাকাপড়ের ধরণের ওপর নির্ভর করে, মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাইমার, ডিটারজেন্টের পরিমাণ এবং পানির স্তর নির্বাচন সহ উপযুক্ত ধোয়ার ধরন বাছাই করতে সক্ষম হয়।
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ – নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার অধীনে, কাপড়ের গুণমানের ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই সম্পূর্ণরূপে কাপড় ধোয়া হয়।
  • টাইম ডিলে – এটি ব্যবহারকারীদের তাদের সুবিধাজনক সময়ে মেশিনে কাপড় দিতে এবং পরে মেশিন চালু করার সুবিধা প্রদান করে, অথবা এই ফিচার ব্যবহারের মাধ্যমে মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধোয়ার চক্র শুরু করার আগে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাপড় ভিজিয়ে রাখা যায়।

দাম এবং বিক্রয়োত্তর সেবা

ধরন ও ফিচারের ওপর নির্ভর করে, ওয়াশিং মেশিন বিভিন্ন মূল্যে পরিসরে পাওয়া যায়। আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা ওয়াশিং মেশিনটি কেনার জন্য, বাজারে যেসব মডেলের ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায় সেগুলোর ওপর ছোটোখাটো গবেষণা করা এবং আপনার যেসব ফিচার প্রয়োজন সেগুলোর একটি চেকলিস্ট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ৷ এছাড়াও, নজর রাখুন বিভিন্ন অফারের ওপর। সাধারণত, ২৮ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে স্যামসাং, এলজি, ওয়ার্লপুল ও শার্পের মতো বিশ্বস্ত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মানসম্পন্ন পণ্য ওয়ারেন্টি সহ পাওয়া যায়।

যা করতে হবে তা হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়াশিং মেশিনের ক্যাটালগ দেখুন, উপরে উল্লেখিত ফিচারগুলোর মধ্যে তুলনা করুন এবং আপনার প্রয়োজনীয়তা ও বাজেটের সাথে মিলিয়ে বাছাই করুন আপনার নতুন ওয়াশিং মেশিন। অন্য যেকোনো ইলেকট্রনিক পণ্যের মতো, আপনার ওয়াশিং মেশিনেও সমস্যা হতে পারে, যা সমাধানের প্রয়োজন হবে। তাই, ব্র্যান্ডের বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে জেনে নেওয়াও জরুরি৷ একজন নতুন ক্রেতা হিসেবে, আপনাকে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com