আদালতে নেওয়া হয়েছে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে

ছবি : সংগৃহীত

 

রাজধানীর তেজগাঁও থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্র‍থম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ (৩০ মার্চ) সকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।

 

এর আগে  বুধবার (২৯ মার্চ) সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া (৩৬) নামের এক যুবলীগ নেতা বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একই সঙ্গে ওই সংবাদটি দৈনিক প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে।

সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ-বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এ ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের সোনালি গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে জনগণসহ বহির্বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মহান স্বাধীনতা দিবসের/দিনে এ সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

 

কিন্তু পরে একাত্তর টিভি চ্যানেলসহ তাদের অনলাইন পোর্টালের লিঙ্ক প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। নাম-পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

 

পত্রিকায় বলা হয়, শিশুটির নাম জাকির হোসেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই শিশুর নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ি সাভার থানাধীন কুরগাঁওপাড়ায়। তার বাবা একজন পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সন্তান সবুজ। প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর।

 

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝেমধ্যে ফুল বিক্রি করে। শামসুজ্জামানের (৩৭) প্রস্তুতকৃত প্রথম আলোর সংবাদে বলা হয়েছে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।

 

প্রকৃতপক্ষে ওই শিশুটি এ ধরনের কোনো কথা বলেনি। শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়, স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এ মিথ্যা সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাদী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আ.লীগের ব্যবসাগুলো কারা চালায় আমরা জানি: হাসনাত আবদুল্লাহ

» এনসিপি ১০ জনের একটা দল, সেখানেও যৌন হয়রানি: রুমিন ফারহানা

» ‘দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন’: গয়েশ্বর

» ভারতের মোদিকে কসাই আখ্যা দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

» রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ

» সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া হবে দুঃস্বপ্ন

» আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

» পবিত্র আশুরা শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন: তারেক রহমান

» পবিত্র আশুরা অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা

» করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আদালতে নেওয়া হয়েছে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে

ছবি : সংগৃহীত

 

রাজধানীর তেজগাঁও থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় প্র‍থম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ (৩০ মার্চ) সকালে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।

 

এর আগে  বুধবার (২৯ মার্চ) সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া (৩৬) নামের এক যুবলীগ নেতা বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একই সঙ্গে ওই সংবাদটি দৈনিক প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে।

সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ-বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এ ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের সোনালি গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে জনগণসহ বহির্বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মহান স্বাধীনতা দিবসের/দিনে এ সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

 

কিন্তু পরে একাত্তর টিভি চ্যানেলসহ তাদের অনলাইন পোর্টালের লিঙ্ক প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। নাম-পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

 

পত্রিকায় বলা হয়, শিশুটির নাম জাকির হোসেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই শিশুর নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ি সাভার থানাধীন কুরগাঁওপাড়ায়। তার বাবা একজন পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সন্তান সবুজ। প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর।

 

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝেমধ্যে ফুল বিক্রি করে। শামসুজ্জামানের (৩৭) প্রস্তুতকৃত প্রথম আলোর সংবাদে বলা হয়েছে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।

 

প্রকৃতপক্ষে ওই শিশুটি এ ধরনের কোনো কথা বলেনি। শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়, স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এ মিথ্যা সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাদী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com