আতংকের নাম ‘সাকার ফিশ’

বাংলাদেশের জলাশয়ে গত ১০ বছর ধরেই পাওয়া যাচ্ছে ‘সাকার মাছ’। এই ‘অ্যাকুরিয়াম ফিশ’টি গুলশান লেক থেকে ছড়িয়ে পড়েছে নদী ও পুকুরে। সবচেয়ে বেশি সাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীতে। মাছগুলো দেশীয় মাছের আবাসস্থল দখল করছে এবং তাদের খবার সাবাড় করছে। ফলে ‘সাকার ফিশ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।

 

দেশের জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়া দক্ষিণ অ্যামেরিকার ‘সাকারমাউথ ক্যাট ফিশ’ বা ‘সাকার মাছ’ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতেও পাওয়া গেছে। যা উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সাকার ফিশ এভাবে বাড়তে থাকলে দেশের মিঠা পানির মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। আর হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক ডিম উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। তাই তারা এই মাছ নির্মূলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তাদের মতে, সাকার মাছ অন্য দেশি মাছের খাবার খেয়ে ফেলে এবং অবাসস্থল দখল করে। বাংলাদেশের মানুষ এ মাছ না খাওয়ায় তারা দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে এবং যেকোনো পরিবেশে টিকে থাকে।

 

হালদা নদীর জেলে কামাল সওদাগর জানান, গত বছর থেকে তারা জাল ফেললে সাকার মাছ পাচ্ছেন। নদীর কয়েকটি এলাকায় এই মাছের উপস্থিতি খুব বেশি। এভাবে চলতে থাকলে মাছের প্রাকৃতিক ডিম কমতে থাকবে বলে মনে করেন তিনি। বিষয়টি জেলেরা মৎস্য অধিদফতরকে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

 

রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ জানান, হালদা নদীতে আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের সাকার মাছও পাওয়া গেছে। এটা ১৮-২০ ইঞ্চিও হয়। আমদের ধারণা, আরো বড় সাকার মাছ ওই নদীতে আছে।

 

মৎস্যবিজ্ঞানীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১০ বছর ধরেই বাংলাদেশের জলাশয়ে সাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এই অ্যাকুরিয়াম ফিশটি গুলশান লেক থেকে ছড়িয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। এখন এটা নদী ও পুকুরে ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীতে।

 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “বুড়িগঙ্গা ও তুরাগে জেলেরা জাল ফেললে সাকার মাছে জাল ভরে ওঠে। অন্য কোনো মাছ পাওয়া যায় না।” তারা দূষিত পানিতেও টিকে থেকে বংশবৃদ্ধি করে। বুড়িগঙ্গা ও তুরাগে যে দেশি মাছ পাওয়া যেত তা এখন আর পাওয়া যায় না বলে জানান তিনি।

 

সাকার মাছ নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কাজ করছেন। গবেষণা দলের প্রধান ফিশারিজ বায়োলজি এবং জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, “আম্যাজোন অঞ্চলের এই মাছটির যেকোনো পরিবেশে টিকে থাকা ও বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা আছে। এরা অন্য মাছের আশ্রয়স্থল দখল এবং খবার খেয়ে ফেলে। আর নদী বা জলাশয়ের তলদেশে থাকে বলে সেখানে অন্য মাছের খাবার খেয়ে ফেলে, আবাস দখল করে। আমাদের দেশের মানুষ এই মাছটি যেহেতু খায় না তাই এরা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে দেশীয় মাছকে হটিয়ে দিচ্ছে।”

 

তিনি বলেন, “এই মাছটির সারা শরীরের কাঁটা। সামনে ও পিঠে বড় কাঁটা । ফলে অন্য মাছকে সহজেই হটিয়ে দিয়ে টিকে থাকে।”

 

সাকার মাছ এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নদী এমকি পুকুরেও ছড়িয়ে পড়েছে। এরা পানি ছাড়াও কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা বেঁচে থাকে বলে জানান তিনি।

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, “এ মাছ মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর- এখনো এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে কেউ খায় না বলে এই মাছের দ্রুত বংশ বৃদ্ধি ঘটছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিচ্ছে। হালদা নদী দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। এখানে কার্প জাতীয় মাছ নির্দিষ্ট সময়ে ডিম দেয়। আর সেই ডিম সংগ্রহ করে জেলেরা বিক্রি করে। এ থেকে মাছের পোনা উৎপাদন হয়। এমনিতেই হালদা নানা কারণে হুমকির মুখে। এখন এই সাকার মাছ নতুন হুমকি তৈরি করছে। দেশীয় মাছ টিকতে না পারলে হালদায় ডিম উৎপাদন হবে না।”

 

দেশের মিঠা পানির মাছ রক্ষায় তাই এই সাকার মাছ নির্মূলে জেলেদের কাজে লাগানোর কথা বলছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। এই মাছ ধরার পড়ার পর মেরে ফেলতে হবে, আবার জলাশয়ে ছেড়ে দেয়া যাবে না। এজন্য জেলেদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। দরকার ব্যাপক প্রচার। অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, “এই মাছ দিয়ে ফিশফিডও বানানো সম্ভব। সেটার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। মোটকথা, এর প্রজনন ব্যালেন্স করতে হবে।”

 

তবে রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ মনে করেন, “এর বাইরে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও এর বিস্তার রোধ সম্ভব। এই মাছটি দেখতে খারাপ হলেও সুস্বাদু। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয়। আমরা নিজেরা রান্না করে খেয়ে দেখেছি। তবে এটা প্রসেস করা কঠিন।”

 

ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, “আমি শুরু থেকেই ব্যক্তিগতভাবে জেলেদের মাছটির ব্যাপারে সতর্ক করছি। এখন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মৎস্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জেলেদের বলা হচ্ছে। তবে আরো প্রচার দরকার।”

 

তিনি বাংলাদেশে অ্যাকুরিয়াম ফিশের ব্যাপারে নীতিমালারও দাবি করেন। তার কথা, “এটা অ্যাকুরিয়াম থেকে ছড়িয়েছে। কিন্তু বিদেশি কোনো মাছ, প্রাণী বা গাছ যাই এদেশে আনা হোক না কেন তার একটা নীতিমালা থাকা দরকার। কোয়ারেন্টিনের বিধান থাকা দরকার। আগে দেখা দরকার ওই মাছ বা প্রাণী আমাদের পরিবেশের উপযোগী কিনা।”

 

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি বিদেশ থেকে আকাশমণি গাছ এনেছিলেন যা আমাদের পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। আমি পিরানহা মাছের বিরোধিতা করে শোকজ খেয়েছিলাম। যদিও পরে সেই মাছ নিষিদ্ধ হয়।” সূএ:পূর্ব পশ্চিম ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক চালু করেছে ভিসা পেমেন্ট গেটওয়ে সল্যুশন—সাইবারসোর্স

» বিক্রয় আয়োজিত ‘প্রাইম ব্যাংক প্রপার্টি ফেয়ার ২০২৪ পাওয়ার্ড বাই প্রপার্টি গাইড’ শুরু

» ইসলামপুরে ডাসকো ফাউন্ডেশনের অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত 

» ইউকে ও আইইএলটিএস এডুকেশন এক্সপো আয়োজন করল ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্রিটিশ কাউন্সিল

» ইন্টারনেট বন্ধ ও ভয়াবহ বন্যার প্রভাবে রবি’র আয়ে ভাটা

» টাইটেনিয়াম সিলভার রঙে আসছে ভিভো ভি৪০ লাইট

» টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডের তালিকায় শাওমি

» হাতীবান্ধায় বস্তায় আদা চাষ করে সফল নারী উদ্যোক্তা ময়না বেগম

» ইউসিবি’র ৫০১তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত

» গ্রামীণফোনের নতুন চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) হিসেবে নিয়োগ পেলেন তানভীর মোহাম্মদ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আতংকের নাম ‘সাকার ফিশ’

বাংলাদেশের জলাশয়ে গত ১০ বছর ধরেই পাওয়া যাচ্ছে ‘সাকার মাছ’। এই ‘অ্যাকুরিয়াম ফিশ’টি গুলশান লেক থেকে ছড়িয়ে পড়েছে নদী ও পুকুরে। সবচেয়ে বেশি সাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীতে। মাছগুলো দেশীয় মাছের আবাসস্থল দখল করছে এবং তাদের খবার সাবাড় করছে। ফলে ‘সাকার ফিশ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।

 

দেশের জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়া দক্ষিণ অ্যামেরিকার ‘সাকারমাউথ ক্যাট ফিশ’ বা ‘সাকার মাছ’ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতেও পাওয়া গেছে। যা উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সাকার ফিশ এভাবে বাড়তে থাকলে দেশের মিঠা পানির মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। আর হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক ডিম উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। তাই তারা এই মাছ নির্মূলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। তাদের মতে, সাকার মাছ অন্য দেশি মাছের খাবার খেয়ে ফেলে এবং অবাসস্থল দখল করে। বাংলাদেশের মানুষ এ মাছ না খাওয়ায় তারা দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে এবং যেকোনো পরিবেশে টিকে থাকে।

 

হালদা নদীর জেলে কামাল সওদাগর জানান, গত বছর থেকে তারা জাল ফেললে সাকার মাছ পাচ্ছেন। নদীর কয়েকটি এলাকায় এই মাছের উপস্থিতি খুব বেশি। এভাবে চলতে থাকলে মাছের প্রাকৃতিক ডিম কমতে থাকবে বলে মনে করেন তিনি। বিষয়টি জেলেরা মৎস্য অধিদফতরকে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

 

রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ জানান, হালদা নদীতে আট ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের সাকার মাছও পাওয়া গেছে। এটা ১৮-২০ ইঞ্চিও হয়। আমদের ধারণা, আরো বড় সাকার মাছ ওই নদীতে আছে।

 

মৎস্যবিজ্ঞানীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১০ বছর ধরেই বাংলাদেশের জলাশয়ে সাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এই অ্যাকুরিয়াম ফিশটি গুলশান লেক থেকে ছড়িয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। এখন এটা নদী ও পুকুরে ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সাকার মাছ পাওয়া যাচ্ছে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীতে।

 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “বুড়িগঙ্গা ও তুরাগে জেলেরা জাল ফেললে সাকার মাছে জাল ভরে ওঠে। অন্য কোনো মাছ পাওয়া যায় না।” তারা দূষিত পানিতেও টিকে থেকে বংশবৃদ্ধি করে। বুড়িগঙ্গা ও তুরাগে যে দেশি মাছ পাওয়া যেত তা এখন আর পাওয়া যায় না বলে জানান তিনি।

 

সাকার মাছ নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কাজ করছেন। গবেষণা দলের প্রধান ফিশারিজ বায়োলজি এবং জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, “আম্যাজোন অঞ্চলের এই মাছটির যেকোনো পরিবেশে টিকে থাকা ও বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা আছে। এরা অন্য মাছের আশ্রয়স্থল দখল এবং খবার খেয়ে ফেলে। আর নদী বা জলাশয়ের তলদেশে থাকে বলে সেখানে অন্য মাছের খাবার খেয়ে ফেলে, আবাস দখল করে। আমাদের দেশের মানুষ এই মাছটি যেহেতু খায় না তাই এরা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে দেশীয় মাছকে হটিয়ে দিচ্ছে।”

 

তিনি বলেন, “এই মাছটির সারা শরীরের কাঁটা। সামনে ও পিঠে বড় কাঁটা । ফলে অন্য মাছকে সহজেই হটিয়ে দিয়ে টিকে থাকে।”

 

সাকার মাছ এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নদী এমকি পুকুরেও ছড়িয়ে পড়েছে। এরা পানি ছাড়াও কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা বেঁচে থাকে বলে জানান তিনি।

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, “এ মাছ মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর- এখনো এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে কেউ খায় না বলে এই মাছের দ্রুত বংশ বৃদ্ধি ঘটছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিচ্ছে। হালদা নদী দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। এখানে কার্প জাতীয় মাছ নির্দিষ্ট সময়ে ডিম দেয়। আর সেই ডিম সংগ্রহ করে জেলেরা বিক্রি করে। এ থেকে মাছের পোনা উৎপাদন হয়। এমনিতেই হালদা নানা কারণে হুমকির মুখে। এখন এই সাকার মাছ নতুন হুমকি তৈরি করছে। দেশীয় মাছ টিকতে না পারলে হালদায় ডিম উৎপাদন হবে না।”

 

দেশের মিঠা পানির মাছ রক্ষায় তাই এই সাকার মাছ নির্মূলে জেলেদের কাজে লাগানোর কথা বলছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। এই মাছ ধরার পড়ার পর মেরে ফেলতে হবে, আবার জলাশয়ে ছেড়ে দেয়া যাবে না। এজন্য জেলেদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। দরকার ব্যাপক প্রচার। অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, “এই মাছ দিয়ে ফিশফিডও বানানো সম্ভব। সেটার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। মোটকথা, এর প্রজনন ব্যালেন্স করতে হবে।”

 

তবে রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ মনে করেন, “এর বাইরে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও এর বিস্তার রোধ সম্ভব। এই মাছটি দেখতে খারাপ হলেও সুস্বাদু। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয়। আমরা নিজেরা রান্না করে খেয়ে দেখেছি। তবে এটা প্রসেস করা কঠিন।”

 

ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, “আমি শুরু থেকেই ব্যক্তিগতভাবে জেলেদের মাছটির ব্যাপারে সতর্ক করছি। এখন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মৎস্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জেলেদের বলা হচ্ছে। তবে আরো প্রচার দরকার।”

 

তিনি বাংলাদেশে অ্যাকুরিয়াম ফিশের ব্যাপারে নীতিমালারও দাবি করেন। তার কথা, “এটা অ্যাকুরিয়াম থেকে ছড়িয়েছে। কিন্তু বিদেশি কোনো মাছ, প্রাণী বা গাছ যাই এদেশে আনা হোক না কেন তার একটা নীতিমালা থাকা দরকার। কোয়ারেন্টিনের বিধান থাকা দরকার। আগে দেখা দরকার ওই মাছ বা প্রাণী আমাদের পরিবেশের উপযোগী কিনা।”

 

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি বিদেশ থেকে আকাশমণি গাছ এনেছিলেন যা আমাদের পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। আমি পিরানহা মাছের বিরোধিতা করে শোকজ খেয়েছিলাম। যদিও পরে সেই মাছ নিষিদ্ধ হয়।” সূএ:পূর্ব পশ্চিম ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com