আগৈলঝাড়ার গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আগাম আমের মুকুল

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : প্রকৃতিতে ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজতে চলেছে শীতের বিদায় ঘণ্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। শীতের বিদায়ের সাথে সাথে বসন্তের আগমণে ফাগুনের হাওয়ায় চারিদিক মুখরিত। সময়ের পালাবদলে প্রকৃতির এই খেলায় ঋতুরাজ বসন্তের প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে। আগুন ঝরা ফাগুনের আহŸাণে শিমুল গাছে ফুটেছে পলাশ। গ্রামের মেঠোপথের দূর সীমানা থেকে ভেসে আসছে কোকিলের কুহু কুহু কলতান। নানা ফুলের সঙ্গে সুর ছড়াচ্ছে আমের গাছের মুকুলও। সোনালী হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস মুগ্ধ করে তুলছে মানুষের হৃদয়। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে।

 

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গাছে গাছে ভরে গেছে নয়নাভিরাম আমের মুকুলে। মুকুলের ভরা মৌসুম না হলেও গত এক সপ্তাহ যাবৎ শীত কমে আসায় এবছর আম গাছে আগাম মুকুল এসেছে। বর্তমান আবহাওয়া আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে মৌসুমী ফল আমের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুন হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবু পীযুষ রায়। তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বানিজ্যিকভাবে আম চাষ করা চাষীরা মুকুলে ঔষধ প্রয়োগ করে মুকুল ঝড়ে পরা রোধ করে পোকা দমনের চেষ্টা করছেন। এবছর শীত কম হওয়ায় এবং ফাগুনের আগেই কুয়াশা কেটে যাবার সম্ভাবনায় সকল গাছেই আগাম ও বেশী পরিমাণে মুকুল ধরেছে।

 

আগের তুলনায় আগৈলঝাড়ায় এলাকায় বেড়েছে আমের বাগান ও চাষ। বাড়ি আঙ্গিনাসহ এলাকায় ব্যক্তিগত বাগানের পাশাপাশি বন বিভাগের উদ্যোগে সরকারী অফিস, বিভিন্ন সড়কের পার্শ্বে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফাঁকা জায়গায় সারিবদ্ধভাবে লাগানো গাছে আমের মুকুলের ঘ্রাণে এখন চারদিক মৌ মৌ করছে।

 

তিনি আরও জানান, ৯৯ ভাগ মুকুলে কোন গুটি হয়না। তারপরেও পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনায় আমের মুকুলে ঔষধ প্রয়োগ করে চাষীরা এবছর ভাল ফলন পাবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

 

উপজেলার আম চাষী ইয়াসিন আলী ও সৈকত সরকার বলেন, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে সেগুলো প্রায় নতুন গাছ। নতুন গাছ হওয়ায় আগেভাগেই তাতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রæয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যাত্রীবাহী বাসের চাপায় অটোচালকসহ দুজন নিহত

» আবারও রেকর্ড গড়েছে স্বর্ণের দাম

» পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

» টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ডাবল সেঞ্চুরি

» ছেলের বন্ধুরা আমাকে ‘দিদি’ বলে ডাকে: শ্রাবন্তী

» কিছু আসনের লোভে জাতীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে কেউ পিআর চাইছে: সালাহউদ্দিন

» গাজায় গণহত্যা চলছে, দায়ী ইসরায়েল: জাতিসংঘ তদন্ত কমিশন

» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ১১২৬ জন আসামি গ্রেফতার

» ফখরুল-আব্বাসসহ ৬৭ জনকে অব্যাহতি দিলো আদালত

» জামায়াতের আন্দোলন সরকারবিরোধী না : ব্যারিস্টার ফুয়াদ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আগৈলঝাড়ার গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আগাম আমের মুকুল

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : প্রকৃতিতে ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজতে চলেছে শীতের বিদায় ঘণ্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। শীতের বিদায়ের সাথে সাথে বসন্তের আগমণে ফাগুনের হাওয়ায় চারিদিক মুখরিত। সময়ের পালাবদলে প্রকৃতির এই খেলায় ঋতুরাজ বসন্তের প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে। আগুন ঝরা ফাগুনের আহŸাণে শিমুল গাছে ফুটেছে পলাশ। গ্রামের মেঠোপথের দূর সীমানা থেকে ভেসে আসছে কোকিলের কুহু কুহু কলতান। নানা ফুলের সঙ্গে সুর ছড়াচ্ছে আমের গাছের মুকুলও। সোনালী হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস মুগ্ধ করে তুলছে মানুষের হৃদয়। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে।

 

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গাছে গাছে ভরে গেছে নয়নাভিরাম আমের মুকুলে। মুকুলের ভরা মৌসুম না হলেও গত এক সপ্তাহ যাবৎ শীত কমে আসায় এবছর আম গাছে আগাম মুকুল এসেছে। বর্তমান আবহাওয়া আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে মৌসুমী ফল আমের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুন হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবু পীযুষ রায়। তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বানিজ্যিকভাবে আম চাষ করা চাষীরা মুকুলে ঔষধ প্রয়োগ করে মুকুল ঝড়ে পরা রোধ করে পোকা দমনের চেষ্টা করছেন। এবছর শীত কম হওয়ায় এবং ফাগুনের আগেই কুয়াশা কেটে যাবার সম্ভাবনায় সকল গাছেই আগাম ও বেশী পরিমাণে মুকুল ধরেছে।

 

আগের তুলনায় আগৈলঝাড়ায় এলাকায় বেড়েছে আমের বাগান ও চাষ। বাড়ি আঙ্গিনাসহ এলাকায় ব্যক্তিগত বাগানের পাশাপাশি বন বিভাগের উদ্যোগে সরকারী অফিস, বিভিন্ন সড়কের পার্শ্বে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফাঁকা জায়গায় সারিবদ্ধভাবে লাগানো গাছে আমের মুকুলের ঘ্রাণে এখন চারদিক মৌ মৌ করছে।

 

তিনি আরও জানান, ৯৯ ভাগ মুকুলে কোন গুটি হয়না। তারপরেও পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দেখা দেয়ার সম্ভাবনায় আমের মুকুলে ঔষধ প্রয়োগ করে চাষীরা এবছর ভাল ফলন পাবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

 

উপজেলার আম চাষী ইয়াসিন আলী ও সৈকত সরকার বলেন, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে সেগুলো প্রায় নতুন গাছ। নতুন গাছ হওয়ায় আগেভাগেই তাতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রæয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com