অর্থ ফেরত পেলেন কিউকমের ২০ গ্রাহক

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করেও পণ্য পাননি এমন ২০ গ্রাহককে অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ছয় হাজার ৭২১ জন গ্রাহকের পাওনা ৫৯ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হলো।

 

সোমবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কিউকমের এই গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দিয়ে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ২০ জন গ্রাহক ৪০ লাখ ২ হাজার ৪১৩ টাকা ফেরত পেয়েছেন। এর মধ্যদিয়ে ভোক্তাদের অর্থ ফেরতের কার্যক্রম উদ্বোধন করলাম।

 

তিনি বলেন, কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি ইউনিক আইডি নাম্বার থাকবে এবং এটার রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই কাজের শেষের দিকে আমরা। ১৫ দিনের মধ্যে আশা করছি এটা শুরু করতে পারবো।

 

সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় ছিল ভোক্তারা যে টাকা ফেরত পাননি বা পণ্য বুঝে পাননি সে অর্থ তারা ফেরত চাচ্ছিলেন, কিন্তু যেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা ছিল সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছি। তারা মতামত দিয়েছিল যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং মালিক জেলে আছেন তাদের টাকাটা ফেরত দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও মামলা নেই তাদের মধ্যে একটি কিউকম।

 

তিনি আরও বলেন, ফস্টার পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার বিষয় ছিল, তবে ফস্টারের বিরুদ্ধে সিআইডির অভিযোগ ছিল, সেজন্য এনওসি নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকও এটি নিয়ে কাজ করেছে। আপাতত ৫৯ কোটি টাকার বিষয় নিয়ে কাজ করা হয়েছে, যেখানে ৬ হাজার ৭২১ জনের লেনদেনের বিষয় রয়েছে। এসব ক্রেতা পণ্য পাননি। তাদের ৫৯ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আজ ২০ জনের অর্থ ফেরত দেওয়া হলো। বাকিদের টাকা ফেরতের জন্য আমরা কাজ করছি।

 

জানা গেছে, পেমেন্ট গেটওয়ে ফস্টারের কাছে কিউকমের ৩৯৭ কোটি টাকা আটকে আছে। এ টাকার মধ্যে ক্রেতাদের অন্তত ১৬৬ কোটি টাকা রয়েছে, যার বিপরীতে পণ্য ডেলিভারি করেনি ই-কমার্স কোম্পানিটি। ফস্টারের জব্দ করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এসব টাকা আটকে রয়েছে।

 

এর আগে যেসব ক্রেতা আগাম টাকা পরিশোধ করেও পণ্য পাননি, তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা গত ১০ জানুয়ারির মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দিতে কিউকম ও ফস্টারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই তালিকা অনুয়াযী পর্যায়ক্রমে অর্থ ফেরত দেওয়ার হবে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংক ফস্টারের দুটি হিসাব স্থগিত করেছে, যেখানে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকা রয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, কিউকমের ছয়টি অ্যাকাউন্টে গ্রাহকরা জমা করেছেন ৭৯০ কোটি টাকা। লেনদেন স্থগিত থাকা এসব অ্যাকাউন্টে স্থিতির পরিমাণ দুই কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বাকি টাকা তুলে নিয়েছে কোম্পানিটি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দুই দফা দাম কমানোর পর ফের বাড়লো সোনার দাম

» রমজানে যানজট কমাতে পুলিশের ১৫ নির্দেশনা

» রমজানে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার অনুরোধ রাষ্ট্রপতির

» দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা

» গুড়ার নন্দীগ্রামে হাইওয়ে পুলিশের পথসভা অনুষ্ঠিত 

» বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবারের মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল লেকচার সপ্তাহ অনুষ্ঠিত

» পাঁচবিবিতে তথ্য আপা প্রকল্পের বিশেষ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

» নগদ-এ কেনাকাটার পেমেন্ট করলে পাবেন বিএমডব্লিউ গাড়ি

» মোবাইল ব্যালেন্স থেকে পরিশোধ করা যাবে সরকারি সেবার বিল

» জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসিকে সহযোগিতায় আগ্রহী নেদারল্যান্ডস

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অর্থ ফেরত পেলেন কিউকমের ২০ গ্রাহক

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করেও পণ্য পাননি এমন ২০ গ্রাহককে অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ছয় হাজার ৭২১ জন গ্রাহকের পাওনা ৫৯ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হলো।

 

সোমবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কিউকমের এই গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দিয়ে কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ২০ জন গ্রাহক ৪০ লাখ ২ হাজার ৪১৩ টাকা ফেরত পেয়েছেন। এর মধ্যদিয়ে ভোক্তাদের অর্থ ফেরতের কার্যক্রম উদ্বোধন করলাম।

 

তিনি বলেন, কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি ইউনিক আইডি নাম্বার থাকবে এবং এটার রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই কাজের শেষের দিকে আমরা। ১৫ দিনের মধ্যে আশা করছি এটা শুরু করতে পারবো।

 

সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় ছিল ভোক্তারা যে টাকা ফেরত পাননি বা পণ্য বুঝে পাননি সে অর্থ তারা ফেরত চাচ্ছিলেন, কিন্তু যেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা ছিল সে বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছি। তারা মতামত দিয়েছিল যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং মালিক জেলে আছেন তাদের টাকাটা ফেরত দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও মামলা নেই তাদের মধ্যে একটি কিউকম।

 

তিনি আরও বলেন, ফস্টার পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার বিষয় ছিল, তবে ফস্টারের বিরুদ্ধে সিআইডির অভিযোগ ছিল, সেজন্য এনওসি নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকও এটি নিয়ে কাজ করেছে। আপাতত ৫৯ কোটি টাকার বিষয় নিয়ে কাজ করা হয়েছে, যেখানে ৬ হাজার ৭২১ জনের লেনদেনের বিষয় রয়েছে। এসব ক্রেতা পণ্য পাননি। তাদের ৫৯ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আজ ২০ জনের অর্থ ফেরত দেওয়া হলো। বাকিদের টাকা ফেরতের জন্য আমরা কাজ করছি।

 

জানা গেছে, পেমেন্ট গেটওয়ে ফস্টারের কাছে কিউকমের ৩৯৭ কোটি টাকা আটকে আছে। এ টাকার মধ্যে ক্রেতাদের অন্তত ১৬৬ কোটি টাকা রয়েছে, যার বিপরীতে পণ্য ডেলিভারি করেনি ই-কমার্স কোম্পানিটি। ফস্টারের জব্দ করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এসব টাকা আটকে রয়েছে।

 

এর আগে যেসব ক্রেতা আগাম টাকা পরিশোধ করেও পণ্য পাননি, তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা গত ১০ জানুয়ারির মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দিতে কিউকম ও ফস্টারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই তালিকা অনুয়াযী পর্যায়ক্রমে অর্থ ফেরত দেওয়ার হবে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংক ফস্টারের দুটি হিসাব স্থগিত করেছে, যেখানে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকা রয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, কিউকমের ছয়টি অ্যাকাউন্টে গ্রাহকরা জমা করেছেন ৭৯০ কোটি টাকা। লেনদেন স্থগিত থাকা এসব অ্যাকাউন্টে স্থিতির পরিমাণ দুই কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বাকি টাকা তুলে নিয়েছে কোম্পানিটি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com