অনলাইনে লোকাল চ্যানেলে ‘জিনের বাদশা’র বিজ্ঞাপন, অতঃপর…

বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কথা বলে গাইবান্ধার অনলাইন প্ল্যাটফরমসহ কেবল নেটওয়ার্কের লোকাল চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতেন জিনের বাদশা। কথিত ওই জিনের বাদশাকে টাকা না দিলে বলতেন- ‘যদি আমাকে টাকা না পাঠান আপনার পরিবারের একজন, যিনি আপনার সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকেন, একঘরে থাকেন, তিনি মারা যাবেন।’

 

এভাবেই মধ্যরাত ২টা থেকে ৫টার মধ্যে সহজসরল লোকদের ফোন দিত জিনের বাদশাহ পরিচয় দেওয়া প্রতারক চক্র। পরিবারের লোকজনকে ক্ষতি করা হবে এমন কথা বলে টাকা আদায় করত মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, নগদ ও রকেটে। সোমবার রাতে গাইবান্ধা থেকে জিনের বাদশা পরিচয় দেওয়া তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন আবদুল গফ্ফার, লুৎফর রহমান ও শামীম।

 

গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জিসানুল হক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর করা, বিয়ের বাধা দূর করা, চাকরিতে প্রমোশন, কম দামে স্বর্ণ ক্রয়, বদ জিনকে বিতাড়িত করা, খন্নাস জিনকে পাতিলবন্দি করা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের প্রলোভন দেখানো হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ যোগাযোগ করলে ভিন্ন কণ্ঠে কথা বলে নিরীহ সরলমনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে তাদের কথা অনুযায়ী কাজ না করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত। জিনের বাদশা সেজে চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল। এ ছাড়াও তারা মানুষকে মধ্যরাতে ফোন করে টাকা চাইত। তারা বলত, কেউ যদি জিনের বাদশাহকে টাকা দেয়, তাহলে সেই টাকার উসিলায় টাকা প্রদানকারী প্রচুর ধনসম্পদ লাভ করবেন। সৃষ্টিকর্তার রহমত তার ওপর বর্ষিত হবে। পুরুষ ও নারী ভুক্তভোগীদের প্রতারণার জন্য তারা ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়ে থাকে। পুরুষদের ধনসম্পদ আর নারীদের স্বর্ণালঙ্কারের লোভ দেখানো হয়। প্রাথমিকভাবে তারা মধ্যরাতে ভুক্তভোগীদের ফোন দিয়ে এতিমদের খাওয়ানোর নামে দেড় থেকে ৩ হাজার টাকা নেয়। এরপর ধীরে ধীরে মোটা অঙ্কের টাকা চায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জিনের বাদশা সেজে প্রতারণা করে বিভিন্ন লোকজনের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের সর্বস্বান্ত করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা শতাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে গত ৬ মাসে আনুমানিক ৫০ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাদের এই প্রতারণার বিষয়ে রাজবাড়ীর কালুখালি থানায় একটি মামলা হয়েছে।,সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» গণতান্ত্রিক প্রচেষ্টায় দৃঢ় সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র

» ৫ আগস্ট নির্বাচন হলে জাতি এ সরকারকে স্মরণে রাখবে : সালাহউদ্দিন

» স্বৈরাচারমুক্ত দেশে বিএনপি সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চায় : আমিনুল

» আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো চাঁদাবাজ শ্রেণি রাজনীতি করতে পারবে না: মামুনুল হক

» ‘পিনিক’–এ ফার্স্ট লুকে অন্য রকম বুবলী

» অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার ও পাকিস্তানি অলরাউন্ডারকে দলে ভেড়াল খুলনা

» অনুপ্রবেশকারীরা যেন বিএনপিতে ঢুকতে না পারে : তারেক রহমান

» জাপানি ভাষার লেভেল টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

» ডুয়েট এক্সপো এন্ড জব ফেয়ার-২০২৫ অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় ও পণ্য প্রদর্শন করলো এনার্জিপ্যাক

» মাইক্রোবাস সিএনজি সংঘর্ষে চালক নিহত 

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অনলাইনে লোকাল চ্যানেলে ‘জিনের বাদশা’র বিজ্ঞাপন, অতঃপর…

বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কথা বলে গাইবান্ধার অনলাইন প্ল্যাটফরমসহ কেবল নেটওয়ার্কের লোকাল চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতেন জিনের বাদশা। কথিত ওই জিনের বাদশাকে টাকা না দিলে বলতেন- ‘যদি আমাকে টাকা না পাঠান আপনার পরিবারের একজন, যিনি আপনার সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকেন, একঘরে থাকেন, তিনি মারা যাবেন।’

 

এভাবেই মধ্যরাত ২টা থেকে ৫টার মধ্যে সহজসরল লোকদের ফোন দিত জিনের বাদশাহ পরিচয় দেওয়া প্রতারক চক্র। পরিবারের লোকজনকে ক্ষতি করা হবে এমন কথা বলে টাকা আদায় করত মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, নগদ ও রকেটে। সোমবার রাতে গাইবান্ধা থেকে জিনের বাদশা পরিচয় দেওয়া তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন আবদুল গফ্ফার, লুৎফর রহমান ও শামীম।

 

গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জিসানুল হক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর করা, বিয়ের বাধা দূর করা, চাকরিতে প্রমোশন, কম দামে স্বর্ণ ক্রয়, বদ জিনকে বিতাড়িত করা, খন্নাস জিনকে পাতিলবন্দি করা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের প্রলোভন দেখানো হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ যোগাযোগ করলে ভিন্ন কণ্ঠে কথা বলে নিরীহ সরলমনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে তাদের কথা অনুযায়ী কাজ না করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত। জিনের বাদশা সেজে চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল। এ ছাড়াও তারা মানুষকে মধ্যরাতে ফোন করে টাকা চাইত। তারা বলত, কেউ যদি জিনের বাদশাহকে টাকা দেয়, তাহলে সেই টাকার উসিলায় টাকা প্রদানকারী প্রচুর ধনসম্পদ লাভ করবেন। সৃষ্টিকর্তার রহমত তার ওপর বর্ষিত হবে। পুরুষ ও নারী ভুক্তভোগীদের প্রতারণার জন্য তারা ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়ে থাকে। পুরুষদের ধনসম্পদ আর নারীদের স্বর্ণালঙ্কারের লোভ দেখানো হয়। প্রাথমিকভাবে তারা মধ্যরাতে ভুক্তভোগীদের ফোন দিয়ে এতিমদের খাওয়ানোর নামে দেড় থেকে ৩ হাজার টাকা নেয়। এরপর ধীরে ধীরে মোটা অঙ্কের টাকা চায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জিনের বাদশা সেজে প্রতারণা করে বিভিন্ন লোকজনের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের সর্বস্বান্ত করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা শতাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে গত ৬ মাসে আনুমানিক ৫০ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাদের এই প্রতারণার বিষয়ে রাজবাড়ীর কালুখালি থানায় একটি মামলা হয়েছে।,সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com