হঠাৎ আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকার মায়াকান্না কেন : রনি

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকা হঠাৎ কেন মায়াকান্না করছে— এমন প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সবাই জানেন যে, আওয়ামী লীগের পতনের পেছনে আমেরিকার হাত ছিল। এটিকে কেউ ডিপ স্টেট পলিসি বলছেন; কেউ এটাকে ডোনাল্ড লু, পিটার হাস এদের কারসাজি বলছেন; কেউ এটাকে মৃদু সেনা অভ্যুত্থান বলছেন। আর অনেকেই সেনাবাহিনী, জনতা, ছাত্র— সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা বলছেন।’

 

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিওবার্তায় রনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পতনের পর আওয়ামী লীগের প্রায় সব লোক মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছে যে এটি কিভাবে হলো এবং এই ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে, আমলাতন্ত্রে, মিলিটারিতে কারা কারা জড়িত এবং সেভাবে তারা রাজনীতিতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে রাজনীতিতে নানা রকম শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আর সেই শূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে একটা ভালো নির্বাচন এবং আমেরিকা যে স্বার্থগুলো চাচ্ছে সেই স্বার্থগুলো সংরক্ষণ করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নির্বাচনে আনার জন্য, রাজনীতির মূল ধারায় আনার জন্য গত তিন মাস ধরে নানা রকম চেষ্টা এবং তদবির তারা চালিয়ে যাচ্ছে।’

 

রনি বলেন, বাংলাদেশে বহু বৈঠক গোপনে হচ্ছে। আমরা যে জিনিসগুলো দৃশ্যমান দেখেছি, যেগুলো অস্বাভাবিক; যেমন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, সেনাপ্রধানের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ— এই জিনিসগুলো অস্বাভাবিক। বিদেশি কূটনীতিবিদদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, প্রধান নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ, বাংলাদেশ থেকে উড়ে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ; আবার ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ; এই জিনিসগুলো রাজনীতির অস্বাভাবিক এবং এই অস্বাভাবিকতা তখনই ঘটে, যখন কেউ অস্বাভাবিক কিছু করতে চায়।’

 

‘তো সেই অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোর মধ্যে যেটা হচ্ছে তা হলো, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিচার। ডিজিএফআইতে যারা ডিজি ছিলেন, নজিরবিহীনভাবে আওয়ামী লীগ জমানার প্রায় সব ডিজির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই বিচারপ্রক্রিয়া থেকে জেনারেলদের ইনডেমনিটি দেওয়ার জন্য সেনাপ্রধান সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বা করে চলেছেন। তবে আমি এটা জানি না; কিন্তু অহরহ আলোচনাগুলো হচ্ছে। কিন্তু মূলত যারা ডিজি হিসেবে ছিলেন সবাই আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন এবং তাদের বিচার হওয়া উচিত। দৃষ্টান্তমূলকভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত।’

 

রনি বলেন, ‘আমেরিকা প্রয়োজনে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে সেটা এক দিন আগে যাদের জঙ্গি বলেছে, এ কদিন আগে যাকে ফাঁসি দেওয়া হয়, তার স্ত্রী বা তার সন্তানের সঙ্গে তার পরদিন একই টেবিলে বসে তারা খেতে পারে। ওদের কাছে এটা কোনো ব্যাপার নয়।’

 

‘তো সেই দিক থেকে, আওয়ামী লীগ তো জানে যে অতীতে আমেরিকান পলিসি এবং ভারতের যে পলিসি, সে পলিসি অনুযায়ী শেখ হাসিনা কীভাবে বিরোধী দলকে হ্যান্ডল করেছে। এটা শেখ হাসিনা ভালো করে জানে। যেমন— ২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে আইনগতভাবে শক্তিশালী করার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে একত্র করে নির্বাচনে যে আনা হলো, এটার পেছনে আমেরিকার একটা পলিসি ছিল।’

 

‘কাজেই আমেরিকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য আগামী সংসদে ৩০ জন, ৪০ জন, ৫০ জন এমপি পাঠিয়ে হই-হুল্লোড় করবে। আর মামলা-মোকদ্দমা একই সঙ্গে চলতে থাকবে। অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ছয়জন এমপি সংসদে পাঠিয়ে বিএনপির যে করুণ দশা হয়েছিল, ঠিক আওয়ামী লীগের জন্য ওই রকম একটা করুণ দশা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমেরিকা এই মুহূর্তে চেষ্টা চালাচ্ছে।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে যুবক নিহত

» ‘ক্ষমতায় গেলে সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা পুনর্বহাল করবে বিএনপি’

» গণভোটের চারটি প্রশ্নের একটিতে ‘না’ বলার সুযোগ কোথায়: রিজভী

» আজ যেসব এলাকায় টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না

» সুদের টাকা চাইতে গিয়ে যুবককে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

» ঢাকার ৪৪টি পুকুর ও জলাশয় সংস্কার কাজের উদ্বোধন করলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

» মুসলমানদের মৌলিক দাবি আদায় না হলে আমরা সেই সংবিধান মানি না

» খতমে নবুওয়ত সম্মেলনে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলের নেতারা

» গত ৩ বারের মতো নির্বাচন হলে জাতির ভাগ্যে নামবে চরম দুর্ভোগ: মিয়া গোলাম পরওয়ার

» রাজনৈতিক দলের পদধারী কেউ প্রেসক্লাবের কমিটিতে থাকতে পারবে না: সারজিস আলম

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হঠাৎ আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকার মায়াকান্না কেন : রনি

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগের জন্য আমেরিকা হঠাৎ কেন মায়াকান্না করছে— এমন প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় সবাই জানেন যে, আওয়ামী লীগের পতনের পেছনে আমেরিকার হাত ছিল। এটিকে কেউ ডিপ স্টেট পলিসি বলছেন; কেউ এটাকে ডোনাল্ড লু, পিটার হাস এদের কারসাজি বলছেন; কেউ এটাকে মৃদু সেনা অভ্যুত্থান বলছেন। আর অনেকেই সেনাবাহিনী, জনতা, ছাত্র— সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা বলছেন।’

 

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিওবার্তায় রনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পতনের পর আওয়ামী লীগের প্রায় সব লোক মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছে যে এটি কিভাবে হলো এবং এই ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে, আমলাতন্ত্রে, মিলিটারিতে কারা কারা জড়িত এবং সেভাবে তারা রাজনীতিতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে রাজনীতিতে নানা রকম শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আর সেই শূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে একটা ভালো নির্বাচন এবং আমেরিকা যে স্বার্থগুলো চাচ্ছে সেই স্বার্থগুলো সংরক্ষণ করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নির্বাচনে আনার জন্য, রাজনীতির মূল ধারায় আনার জন্য গত তিন মাস ধরে নানা রকম চেষ্টা এবং তদবির তারা চালিয়ে যাচ্ছে।’

 

রনি বলেন, বাংলাদেশে বহু বৈঠক গোপনে হচ্ছে। আমরা যে জিনিসগুলো দৃশ্যমান দেখেছি, যেগুলো অস্বাভাবিক; যেমন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, সেনাপ্রধানের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ— এই জিনিসগুলো অস্বাভাবিক। বিদেশি কূটনীতিবিদদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ, প্রধান নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ, বাংলাদেশ থেকে উড়ে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ; আবার ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ; এই জিনিসগুলো রাজনীতির অস্বাভাবিক এবং এই অস্বাভাবিকতা তখনই ঘটে, যখন কেউ অস্বাভাবিক কিছু করতে চায়।’

 

‘তো সেই অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোর মধ্যে যেটা হচ্ছে তা হলো, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিচার। ডিজিএফআইতে যারা ডিজি ছিলেন, নজিরবিহীনভাবে আওয়ামী লীগ জমানার প্রায় সব ডিজির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই বিচারপ্রক্রিয়া থেকে জেনারেলদের ইনডেমনিটি দেওয়ার জন্য সেনাপ্রধান সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন বা করে চলেছেন। তবে আমি এটা জানি না; কিন্তু অহরহ আলোচনাগুলো হচ্ছে। কিন্তু মূলত যারা ডিজি হিসেবে ছিলেন সবাই আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন এবং তাদের বিচার হওয়া উচিত। দৃষ্টান্তমূলকভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত।’

 

রনি বলেন, ‘আমেরিকা প্রয়োজনে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে সেটা এক দিন আগে যাদের জঙ্গি বলেছে, এ কদিন আগে যাকে ফাঁসি দেওয়া হয়, তার স্ত্রী বা তার সন্তানের সঙ্গে তার পরদিন একই টেবিলে বসে তারা খেতে পারে। ওদের কাছে এটা কোনো ব্যাপার নয়।’

 

‘তো সেই দিক থেকে, আওয়ামী লীগ তো জানে যে অতীতে আমেরিকান পলিসি এবং ভারতের যে পলিসি, সে পলিসি অনুযায়ী শেখ হাসিনা কীভাবে বিরোধী দলকে হ্যান্ডল করেছে। এটা শেখ হাসিনা ভালো করে জানে। যেমন— ২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে আইনগতভাবে শক্তিশালী করার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে একত্র করে নির্বাচনে যে আনা হলো, এটার পেছনে আমেরিকার একটা পলিসি ছিল।’

 

‘কাজেই আমেরিকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য আগামী সংসদে ৩০ জন, ৪০ জন, ৫০ জন এমপি পাঠিয়ে হই-হুল্লোড় করবে। আর মামলা-মোকদ্দমা একই সঙ্গে চলতে থাকবে। অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ছয়জন এমপি সংসদে পাঠিয়ে বিএনপির যে করুণ দশা হয়েছিল, ঠিক আওয়ামী লীগের জন্য ওই রকম একটা করুণ দশা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমেরিকা এই মুহূর্তে চেষ্টা চালাচ্ছে।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com