সন্তানকে আলাদা ঘরে শোয়ানোর সেরা উপায়: বিশেষজ্ঞদের ৫ পরামর্শ

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : বাঙালি সংস্কৃতিতে এখনও অনেক মা সন্তানকে কোলের কাছেই রাখতে চান, এমনকি অনেক সময় বড় হওয়া পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে একই ঘরে রাখে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে, সন্তানকে তার আলাদা ঘরে শোয়ানো একটি অতি প্রাকৃতিক নিয়ম, যা তাদের নিজস্বতা এবং স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।

তবে কখন থেকে সন্তানের জন্য আলাদা ঘর প্রয়োজন, সে বিষয়ে এখনও নানা জনের নানা মত রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সেরা ৫টি পরামর্শ।

 

১. কখন থেকে শিশুকে আলাদা ঘরে শোয়ানো উচিত?

 

সাধারনত শিশু যখন তিন মাস বয়সে পৌঁছায়, তখন মায়ের সঙ্গে এক বিছানায় শোয়ার পরিবর্তে তাকে আলাদা করে দোলনায় শোয়ানো যেতে পারে। এর ফলে শিশু ভালোভাবে ঘুমাতে সুবিধা পায়। এরপর, শিশুকে ক্রিব বা ছোট বিছানায় শোয়ানো শুরু করা যেতে পারে, বিশেষ করে ৬-৭ মাস বয়সে। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের সম্পূর্ণ আলাদা ঘরে শোয়াতে দেওয়ার ক্ষেত্রে ১-৩ বছর বয়সের মধ্যে ধীরে ধীরে তাকে অভ্যস্ত করানো উচিত।

২. ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করা

 

আলাদা ঘরে ঘুমানোর ব্যাপারটি কোনোভাবেই হঠকারী হওয়া উচিত নয়। প্রথমে শিশুকে তার নিজের বিছানায় শুয়ানো শেখার আগে বিছানায় বসে তাকে গান গাওয়া বা গল্প শোনানো যেতে পারে। এ সময় শিশুকে ঘুম পাড়ানোর পর, ধীরে ধীরে তার বিছানার পাশে থাকা কমিয়ে দিতে হবে। এভাবে অভ্যস্ত হলে, পরবর্তীতে তার একা ঘুমানোর অভ্যস্ততা গড়ে উঠবে।

 

৩. শাস্তির পরিবর্তে পুরস্কার

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো– সন্তানকে শাস্তিস্বরূপ আলাদা ঘরে শোয়ানোর ধারণা একেবারেই ভুল। এটি শিশুর কাছে যেন শাস্তি না মনে হয়, এজন্য তাকে বুঝাতে হবে যে একা ঘুমানোর মাধ্যমে সে একটি পুরস্কার পেয়েছে। শিশুকে তার পছন্দের খাবার, খেলনা বা স্টিকার দিয়ে পুরস্কৃত করা যেতে পারে, যাতে সে স্বাভাবিকভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।

 

৪. নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ

আলাদা ঘরে শোয়ানোর সময় শিশুর ঘরটি যেন শব্দহীন ও নিরাপদ থাকে, সেটি খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাপমাত্রা সঠিক থাকা, বিছানা এবং বালিশ চেক করা, এবং ঘরের অন্যান্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত। এছাড়া, সিসি ক্যামেরা বা বেবি মনিটরের মাধ্যমে নজরদারি চালানো যেতে পারে, যাতে সন্তান একা ঘুমাতে থাকলেও তার পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়।

 

৫. অসুস্থতার সময় শিশুর পাশে থাকা

 

যদি শিশুটি অসুস্থ বা একা ঘুমাতে ভয় পায়, সেক্ষেত্রে মা-বাবা তাদের বিছানার কাছেই একটি আলাদা শোয়ার ব্যবস্থা করে রাখতে পারেন। এতে শিশু একদিকে সুরক্ষিত থাকে, অন্যদিকে মা-বাবাও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন।

 

শিশুরা হলো কাদা মাটির মতো, ছোটবেলা থেকে তাদেরকে যা শেখানো হয়, তা খুব সহজেই আয়ত্ত করতে পারে। তাই শিশুকে একটি নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আলাদা ঘরে শোয়ানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য তা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করা শুরু করলে তারা খুব অল্প সময়ে মানিয়ে নিতে পারে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত শেখ হাসিনাসহ ৩ জন

» জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী শেখ হাসিনার নির্দেশেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে: হান্নান মাসউদ

» ‘হাসিনা যাদের মায়া করে নাই, তাদের উচিত হাসিনার জন্য মায়া না দেখানো’

» আঠারো কোটি মানুষের আদালতে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা হাদির

» ৬ জুলাই যোদ্ধাকে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড পাঠাচ্ছে সরকার

» জকসু নির্বাচন জবি ছাত্রদল-ছাত্র অধিকারের সমন্বিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল ঘোষণা

» রায় শুনতে ট্রাইব্যুনালে ছাত্রনেতারা

» প্রায় দেড় কোটি টাকার প্রসাধনী জব্দ,গ্রেফতার ১

» দেশের বাজারে কমেছে স্বর্ণের দাম

» সালমান-তামান্নার নাচকে ‘অস্বস্তিকর’ বলছেন নেটিজেনরা

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সন্তানকে আলাদা ঘরে শোয়ানোর সেরা উপায়: বিশেষজ্ঞদের ৫ পরামর্শ

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক : বাঙালি সংস্কৃতিতে এখনও অনেক মা সন্তানকে কোলের কাছেই রাখতে চান, এমনকি অনেক সময় বড় হওয়া পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে একই ঘরে রাখে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে, সন্তানকে তার আলাদা ঘরে শোয়ানো একটি অতি প্রাকৃতিক নিয়ম, যা তাদের নিজস্বতা এবং স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।

তবে কখন থেকে সন্তানের জন্য আলাদা ঘর প্রয়োজন, সে বিষয়ে এখনও নানা জনের নানা মত রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সেরা ৫টি পরামর্শ।

 

১. কখন থেকে শিশুকে আলাদা ঘরে শোয়ানো উচিত?

 

সাধারনত শিশু যখন তিন মাস বয়সে পৌঁছায়, তখন মায়ের সঙ্গে এক বিছানায় শোয়ার পরিবর্তে তাকে আলাদা করে দোলনায় শোয়ানো যেতে পারে। এর ফলে শিশু ভালোভাবে ঘুমাতে সুবিধা পায়। এরপর, শিশুকে ক্রিব বা ছোট বিছানায় শোয়ানো শুরু করা যেতে পারে, বিশেষ করে ৬-৭ মাস বয়সে। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের সম্পূর্ণ আলাদা ঘরে শোয়াতে দেওয়ার ক্ষেত্রে ১-৩ বছর বয়সের মধ্যে ধীরে ধীরে তাকে অভ্যস্ত করানো উচিত।

২. ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করা

 

আলাদা ঘরে ঘুমানোর ব্যাপারটি কোনোভাবেই হঠকারী হওয়া উচিত নয়। প্রথমে শিশুকে তার নিজের বিছানায় শুয়ানো শেখার আগে বিছানায় বসে তাকে গান গাওয়া বা গল্প শোনানো যেতে পারে। এ সময় শিশুকে ঘুম পাড়ানোর পর, ধীরে ধীরে তার বিছানার পাশে থাকা কমিয়ে দিতে হবে। এভাবে অভ্যস্ত হলে, পরবর্তীতে তার একা ঘুমানোর অভ্যস্ততা গড়ে উঠবে।

 

৩. শাস্তির পরিবর্তে পুরস্কার

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো– সন্তানকে শাস্তিস্বরূপ আলাদা ঘরে শোয়ানোর ধারণা একেবারেই ভুল। এটি শিশুর কাছে যেন শাস্তি না মনে হয়, এজন্য তাকে বুঝাতে হবে যে একা ঘুমানোর মাধ্যমে সে একটি পুরস্কার পেয়েছে। শিশুকে তার পছন্দের খাবার, খেলনা বা স্টিকার দিয়ে পুরস্কৃত করা যেতে পারে, যাতে সে স্বাভাবিকভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।

 

৪. নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ

আলাদা ঘরে শোয়ানোর সময় শিশুর ঘরটি যেন শব্দহীন ও নিরাপদ থাকে, সেটি খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাপমাত্রা সঠিক থাকা, বিছানা এবং বালিশ চেক করা, এবং ঘরের অন্যান্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত। এছাড়া, সিসি ক্যামেরা বা বেবি মনিটরের মাধ্যমে নজরদারি চালানো যেতে পারে, যাতে সন্তান একা ঘুমাতে থাকলেও তার পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়।

 

৫. অসুস্থতার সময় শিশুর পাশে থাকা

 

যদি শিশুটি অসুস্থ বা একা ঘুমাতে ভয় পায়, সেক্ষেত্রে মা-বাবা তাদের বিছানার কাছেই একটি আলাদা শোয়ার ব্যবস্থা করে রাখতে পারেন। এতে শিশু একদিকে সুরক্ষিত থাকে, অন্যদিকে মা-বাবাও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন।

 

শিশুরা হলো কাদা মাটির মতো, ছোটবেলা থেকে তাদেরকে যা শেখানো হয়, তা খুব সহজেই আয়ত্ত করতে পারে। তাই শিশুকে একটি নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আলাদা ঘরে শোয়ানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য তা ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করা শুরু করলে তারা খুব অল্প সময়ে মানিয়ে নিতে পারে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com