হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়…!

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা , বিভিন্ন মামলায় পলাতক আসামি হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে নানা ডালপালা ঘুরছে। সর্বশেষ তথ্য হচ্ছে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী বিভিন্ন সংবাদে নিশ্চিত করেছেন হারিছ চৌধুরী বাংলাদেশ ছেড়ে কখনো বের হননি। সব সময়ই দেশে ছিলেন, দেশেই মারা গেছেন, দেশেই কবর হয়েছে। গত কয়েকদিন মৃত্যুর মূল বিতর্ক হচ্ছে তিনি লন্ডনে না বাংলাদেশে মারা গেছেন সেটা নিয়ে।

 

লন্ডনে মারা গেছেন এটা যদি সত্যি হয় তাহলে হাসপাতালের ডেথ রেফারেন্স নিয়ে যেতে হবে স্থানীয় কাউন্সিলের রেজিস্টার অফিসে, তারপর ডেথ রেফারেন্স দিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট বের করতে হয়। বাংলাদেশে স্থানীয় ইউপি অফিস বা পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন থেকে ডেথ সার্টিফিকেট বের করতে হয়। সেটা কোর্টে নিয়ে গিয়ে উত্তরাধিকার মামলা পরিচালনা করে উত্তারিধকার ক্লেইম করতে হয়।

 

কিছু আত্মীয় বলছেন, লন্ডনে মারা গেছেন। মেয়েসহ কিছু আত্মীয় বলছেন, বাংলাদেশে মারা গেছেন। আপন ভাই কামাল চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে ইন্টারভিউতে মৃত্যুর স্থান লন্ডনের কথা বলেছেন।

 

হারিছ চৌধুরী মারা গেলে কী কী সুবিধা সেটা একটু দেখা যায়- যদি তিনি মারা যান, তাহলে তার ওপর সকল মামলার ফাইল ক্লোজ করতে হবে। সেইসঙ্গে সম্পত্তি যতটুকু অবশিষ্ট আছে সেটা উত্তরাধিকাররা ঝামেলা ছাড়া নিতে পারবে।

 

যদি লন্ডনে মারা যান তাহলে ঝামেলা হচ্ছে অন্য জায়গায়। ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি করার সুযোগ নেই। একেবারে আসল লাগবে। বাংলাদেশে মামলা থেকে শুরু করে যত কাজ আছে সব জায়গায় এই লন্ডনের ডেথ সার্টিফিকেট লাগবেই। যদি মৃত্যু বাংলাদেশে হয় তাহলে ডেথ সার্টিফিকেট ম্যানেজ করা কোনো ব্যাপার না…বাংলাদেশের হিসাবে।

 

এটা কি আদৌ মৃত্যু? নাকি চিরতরে অন্তর্ধান? নাকি লন্ডনে অন্য নামে অন্য পাসপোর্ট দিয়ে এসেছিলেন যে ডেথ সার্টিফিকেটে প্রমাণ করার সুযোগ নেই ইনি হারিছ চৌধুরী!

 

লন্ডনে হারিছ চৌধুরীর ভিন্ন নামের পাসপোর্টে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কথা অতীতে বিএনপি নেতাদের মুখেও শোনা গেছে। ব্রিটেনের ভিসার ক্ষেত্রে ২০০৮ সালের এপ্রিল থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হয়। বাংলাদেশে আবার হাতে লেখা ম্যানুয়াল পাসপোর্টের প্রচলন ছিল ২০১৪/২০১৫ পর্যন্ত। এরপরে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। সুতরাং ২০০৮ মার্চের পরে নতুন তথ্য নিয়ে নতুন পাসপোর্টে ব্রিটেনে আসা কোনো ব্যাপারই না। যদিও বিভিন্ন সূত্রমতে ২০১৭/২০১৮ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে আসেন। ভিন্ন নামের পাসপোর্টে যুক্তরাজ্যে এলে আর যদি যুক্তরাজ্যেই মারা যান তাহলে আইনিভাবে এটা প্রমাণের সুযোগই নেই! এমনকি বিভিন্ন সূত্রমতে, হারিছ চৌধুরী পালিয়ে ভারতে ছিলেন প্রথমে। ভারত থেকে ভারতীয় নাগরিকত্ব বের করে, সেখান থেকে পাসপোর্ট বের করাও ব্যাপার না!

 

আমি অনেক বাংলাদেশিকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি যাদের ভারতে আধার কার্ড, ট্যাক্স কার্ড সবই করা আছে! সুতরাং সেখানে পাসপোর্ট বের করাও অসম্ভব কিছু না। আর যুক্তরাজ্যে যেকোনো পুরাতন ট্রাভেলসে খবর নিলে জানতে পারবেন, ২০১৪ এর আগে আসল ছবি ব্যবহার করে আর নকল নাম, জন্ম তারিখ আর একটি ঠিকানা দিয়ে হাতে লেখা পাসপোর্ট বের করতে মাত্র ১০০-১৫০ পাউন্ড লাগতো! অনেকেই এটা করতেন ব্যাংকে ভুয়া তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট করে সেটা দিয়ে লোন তুলে মেরে দেওয়ার জন্য! সুতরাং নতুন তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট বানানো হারিছ চৌধুরীর জন্য কোনো ব্যাপার ছিল না ২০০৭ এ দেশ ছাড়ার পর!

এজন্যই কি লন্ডনে মারা যাওয়ার খবর সম্পূর্ণভাবে ঘুরিয়ে বাংলাদেশে স্টাবলিসড করার চিন্তা?

হারিছ চৌধুরীর পুরো বিষয়ে সরকারের কিছু জিনিস দেখা প্রয়োজন আছে, মেয়ে কি আসলেই ২৬ আগস্ট বাংলাদেশে গেছে?
কোন হাসপাতালে চিকিৎসা ও মৃত্যু হয়েছে। ইন্টিলিজেন্স কেন এত বড় তথ্য জানল না?

হারিছ চৌধুরীর রহস্যময় জীবন! হারিছ চৌধুরী নামটা রাজনীতি শুরু করেছিল সরবে, হারিয়ে গেল নীরবে…।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কবি মুক্তাদির চৌধুরী তরুণের ইন্তেকাল

» পুলিশের সোর্সকে চাকু মেরে হত্যা মামলার পলাতক দুই আসামি গ্রেফতার

» ব্যবহৃত অলংকারের জাকাত দিতে হবে কি?

» ফেসবুক দীর্ঘদিন লগ আউট না করলে কী হয়?

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৪০ জন গ্রেপ্তার

» শুক্রবার এলেই উত্তাপ বাড়ে মাছ-সবজির বাজারে

» দেশে ফিরেছেন স্পিকার

» আইপিএলের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের খেলা

» বিএনপির ৮০ ভাগ নিগৃহীত নেতাদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

» ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়…!

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা , বিভিন্ন মামলায় পলাতক আসামি হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে নানা ডালপালা ঘুরছে। সর্বশেষ তথ্য হচ্ছে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী বিভিন্ন সংবাদে নিশ্চিত করেছেন হারিছ চৌধুরী বাংলাদেশ ছেড়ে কখনো বের হননি। সব সময়ই দেশে ছিলেন, দেশেই মারা গেছেন, দেশেই কবর হয়েছে। গত কয়েকদিন মৃত্যুর মূল বিতর্ক হচ্ছে তিনি লন্ডনে না বাংলাদেশে মারা গেছেন সেটা নিয়ে।

 

লন্ডনে মারা গেছেন এটা যদি সত্যি হয় তাহলে হাসপাতালের ডেথ রেফারেন্স নিয়ে যেতে হবে স্থানীয় কাউন্সিলের রেজিস্টার অফিসে, তারপর ডেথ রেফারেন্স দিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট বের করতে হয়। বাংলাদেশে স্থানীয় ইউপি অফিস বা পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন থেকে ডেথ সার্টিফিকেট বের করতে হয়। সেটা কোর্টে নিয়ে গিয়ে উত্তরাধিকার মামলা পরিচালনা করে উত্তারিধকার ক্লেইম করতে হয়।

 

কিছু আত্মীয় বলছেন, লন্ডনে মারা গেছেন। মেয়েসহ কিছু আত্মীয় বলছেন, বাংলাদেশে মারা গেছেন। আপন ভাই কামাল চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে ইন্টারভিউতে মৃত্যুর স্থান লন্ডনের কথা বলেছেন।

 

হারিছ চৌধুরী মারা গেলে কী কী সুবিধা সেটা একটু দেখা যায়- যদি তিনি মারা যান, তাহলে তার ওপর সকল মামলার ফাইল ক্লোজ করতে হবে। সেইসঙ্গে সম্পত্তি যতটুকু অবশিষ্ট আছে সেটা উত্তরাধিকাররা ঝামেলা ছাড়া নিতে পারবে।

 

যদি লন্ডনে মারা যান তাহলে ঝামেলা হচ্ছে অন্য জায়গায়। ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি করার সুযোগ নেই। একেবারে আসল লাগবে। বাংলাদেশে মামলা থেকে শুরু করে যত কাজ আছে সব জায়গায় এই লন্ডনের ডেথ সার্টিফিকেট লাগবেই। যদি মৃত্যু বাংলাদেশে হয় তাহলে ডেথ সার্টিফিকেট ম্যানেজ করা কোনো ব্যাপার না…বাংলাদেশের হিসাবে।

 

এটা কি আদৌ মৃত্যু? নাকি চিরতরে অন্তর্ধান? নাকি লন্ডনে অন্য নামে অন্য পাসপোর্ট দিয়ে এসেছিলেন যে ডেথ সার্টিফিকেটে প্রমাণ করার সুযোগ নেই ইনি হারিছ চৌধুরী!

 

লন্ডনে হারিছ চৌধুরীর ভিন্ন নামের পাসপোর্টে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কথা অতীতে বিএনপি নেতাদের মুখেও শোনা গেছে। ব্রিটেনের ভিসার ক্ষেত্রে ২০০৮ সালের এপ্রিল থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হয়। বাংলাদেশে আবার হাতে লেখা ম্যানুয়াল পাসপোর্টের প্রচলন ছিল ২০১৪/২০১৫ পর্যন্ত। এরপরে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। সুতরাং ২০০৮ মার্চের পরে নতুন তথ্য নিয়ে নতুন পাসপোর্টে ব্রিটেনে আসা কোনো ব্যাপারই না। যদিও বিভিন্ন সূত্রমতে ২০১৭/২০১৮ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে আসেন। ভিন্ন নামের পাসপোর্টে যুক্তরাজ্যে এলে আর যদি যুক্তরাজ্যেই মারা যান তাহলে আইনিভাবে এটা প্রমাণের সুযোগই নেই! এমনকি বিভিন্ন সূত্রমতে, হারিছ চৌধুরী পালিয়ে ভারতে ছিলেন প্রথমে। ভারত থেকে ভারতীয় নাগরিকত্ব বের করে, সেখান থেকে পাসপোর্ট বের করাও ব্যাপার না!

 

আমি অনেক বাংলাদেশিকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি যাদের ভারতে আধার কার্ড, ট্যাক্স কার্ড সবই করা আছে! সুতরাং সেখানে পাসপোর্ট বের করাও অসম্ভব কিছু না। আর যুক্তরাজ্যে যেকোনো পুরাতন ট্রাভেলসে খবর নিলে জানতে পারবেন, ২০১৪ এর আগে আসল ছবি ব্যবহার করে আর নকল নাম, জন্ম তারিখ আর একটি ঠিকানা দিয়ে হাতে লেখা পাসপোর্ট বের করতে মাত্র ১০০-১৫০ পাউন্ড লাগতো! অনেকেই এটা করতেন ব্যাংকে ভুয়া তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট করে সেটা দিয়ে লোন তুলে মেরে দেওয়ার জন্য! সুতরাং নতুন তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট বানানো হারিছ চৌধুরীর জন্য কোনো ব্যাপার ছিল না ২০০৭ এ দেশ ছাড়ার পর!

এজন্যই কি লন্ডনে মারা যাওয়ার খবর সম্পূর্ণভাবে ঘুরিয়ে বাংলাদেশে স্টাবলিসড করার চিন্তা?

হারিছ চৌধুরীর পুরো বিষয়ে সরকারের কিছু জিনিস দেখা প্রয়োজন আছে, মেয়ে কি আসলেই ২৬ আগস্ট বাংলাদেশে গেছে?
কোন হাসপাতালে চিকিৎসা ও মৃত্যু হয়েছে। ইন্টিলিজেন্স কেন এত বড় তথ্য জানল না?

হারিছ চৌধুরীর রহস্যময় জীবন! হারিছ চৌধুরী নামটা রাজনীতি শুরু করেছিল সরবে, হারিয়ে গেল নীরবে…।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com