সেবা প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন,মানুষ বিপদে পড়লে আইনি সেবা নিতে পুলিশের কাছে যায়। আপনারা তাদের সমস্যা এবং অভিযোগগুলি খুব মনোযোগ সহকারে শুনবেন এবং তাদের আন্তরিকভাবে আইনি পরিষেবা দিতে দ্বিধা করবেন না। সেবা প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে পুলিশ কর্মীদের খেয়াল রাখতে হবে।

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২২’ উপলক্ষে বঙ্গভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে রাখা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‘দক্ষ পুলিশ, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি- ২০২২ পুলিশ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনি ‘বন্ধু’ হিসাবে জনগণের পাশে থাকবেন। মানবিক পুলিশ হোন এবং জনগণকে সেবা প্রদান করে এবং সত্যিকারের শক্তিতে পরিণত হওয়ার জন্য তাদের আস্থা অর্জন করে আপনার দায়িত্ব পালন করুন।

 

রাষ্ট্রপ্রধান মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও পরম নিষ্ঠার সাথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক ও উন্নত দেশের উপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির (আইটি) প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সেবায় প্রবেশও সহজতর হয়েছে।

 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, সময়োপযোগী পুলিশি সেবা প্রদানের জন্য ইতিমধ্যে নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এর ফলে পুলিশের কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে এবং জনগণ সহজেই ভালো পুলিশি সেবা পাবে। কমিউনিটি পুলিশিং এবং বিট পুলিশিংয়ে জনগণের আরো সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশের একার পক্ষে সমাজ থেকে অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়।

 

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে একটি ‘জনবান্ধব পুলিশ ও মানবিক পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে আপনাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশ ইতিমধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছে। গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে এগিয়ে যেতে হবে।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনে সমৃদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের জন্য একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রযুক্তি বিকাশের ধারায় বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য অপরাধের মধ্যে দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে সাইবার ক্রাইম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় আমাদের পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।

 

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম বড় সাফল্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

 

মাদকের অপব্যবহারকে একটি বড় সামাজিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের যুব সমাজের একটি অংশ পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

 

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশকে আরো সক্রিয় হতে হবে। এ ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিবেচনা করতে হবে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারিতে সম্মুখ-সারির যোদ্ধা হিসেবে জনগণের সেবা করার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি দেশের জনগণের সেবা, নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল নির্ভীক পুলিশ সদস্যদের বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করেন।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।,

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মূল্যহ্রাস-মূল্যফাঁস

» র‍্যাবের নতুন মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত

» গ্রিসে অনুপ্রবেশের সময় সীমান্তে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু

» গাজা যুদ্ধ নিয়ে প্রতিবাদ করায় নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আটক ১৩৩

» মাছের ড্রাম থেকে ৮০ হাজার ইয়াবা জব্দ, আটক ১

» বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা,বাবা-ছেলে আহত

» রোহিঙ্গা নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

» পিতার চাকুর আঘাতে শিশু কন্যা নিহত

» থাইল্যান্ডের পথে প্রধানমন্ত্রী

» আজ বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সেবা প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন,মানুষ বিপদে পড়লে আইনি সেবা নিতে পুলিশের কাছে যায়। আপনারা তাদের সমস্যা এবং অভিযোগগুলি খুব মনোযোগ সহকারে শুনবেন এবং তাদের আন্তরিকভাবে আইনি পরিষেবা দিতে দ্বিধা করবেন না। সেবা প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে পুলিশ কর্মীদের খেয়াল রাখতে হবে।

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২২’ উপলক্ষে বঙ্গভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে রাখা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‘দক্ষ পুলিশ, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি- ২০২২ পুলিশ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনি ‘বন্ধু’ হিসাবে জনগণের পাশে থাকবেন। মানবিক পুলিশ হোন এবং জনগণকে সেবা প্রদান করে এবং সত্যিকারের শক্তিতে পরিণত হওয়ার জন্য তাদের আস্থা অর্জন করে আপনার দায়িত্ব পালন করুন।

 

রাষ্ট্রপ্রধান মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও পরম নিষ্ঠার সাথে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক ও উন্নত দেশের উপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির (আইটি) প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সেবায় প্রবেশও সহজতর হয়েছে।

 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, সময়োপযোগী পুলিশি সেবা প্রদানের জন্য ইতিমধ্যে নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এর ফলে পুলিশের কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে এবং জনগণ সহজেই ভালো পুলিশি সেবা পাবে। কমিউনিটি পুলিশিং এবং বিট পুলিশিংয়ে জনগণের আরো সম্পৃক্ততার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশের একার পক্ষে সমাজ থেকে অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়।

 

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে একটি ‘জনবান্ধব পুলিশ ও মানবিক পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে আপনাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। দেশ ইতিমধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছে। গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে এগিয়ে যেতে হবে।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনে সমৃদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের জন্য একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রযুক্তি বিকাশের ধারায় বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য অপরাধের মধ্যে দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে সাইবার ক্রাইম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় আমাদের পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ, প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।

 

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম বড় সাফল্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

 

মাদকের অপব্যবহারকে একটি বড় সামাজিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের যুব সমাজের একটি অংশ পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

 

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশকে আরো সক্রিয় হতে হবে। এ ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিবেচনা করতে হবে।

 

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারিতে সম্মুখ-সারির যোদ্ধা হিসেবে জনগণের সেবা করার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি দেশের জনগণের সেবা, নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল নির্ভীক পুলিশ সদস্যদের বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করেন।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।,

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com