সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে মনে আছে? কোন কারাগারে তিনি? শাস্তি কত দূর?

গ্রামের যুবক রসু খাঁর নেশা ছিল নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বা নানা প্ররোচনায় ডেকে নিয়ে হত্যা করা। গলা টিপে কিংবা পানিতে চুবিয়ে ওই নারীদের হত্যা করতেন এই সিরিয়াল কিলার। হত্যা করার আগে নিজে অথবা সহযোগীদের নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণ করার প্রবণতা ছিল রসু খাঁর। এই সিরিয়াল কিলারের নৃশংসতার কথা যারা পড়েছেন, তাদের পক্ষে তাকে ভুলে যাওয়া কঠিনই।

এখন পর্যন্ত তিনটিং মামলায় ফাঁসির আদেশ হয়েছে সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর। যার মধ্যে একটি মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এখনো আটটি মামলা বিচারাধীন।

 

প্রেমের ফাঁদে ফেলে নারীদের ডেকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রসু খাঁ এখন চাঁদপুর কারাগারে বন্দী। তার প্রথম মৃত্যুদণ্ডের রায় হয় ২০১৫ সালে। সেই থেকে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অপেক্ষা- কবে হবে রসু খাঁর ফাঁসি?

 

২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় টঙ্গী থেকে রসু খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার মোবাইল ফোনের সূত্রে স্থানীয় এক কিশোরী হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তিন দিনের রিমান্ডে মুখ খোলেন রসু খাঁ। বেরিয়ে আসে গা শিউরে ওঠা তার সব ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা।

 

রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দিতে ১১টি খুনের কথা উঠে আসে। আরও ১০১ জন নারীকে হত্যা করার পরিকল্পনার কথাও স্বীকার করেন এই কুখ্যাত ক্রণিক খুনি।

 

চাঁদপুরের রসু খাঁর বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে খুলনার পোশাককর্মী শাহিদা হত্যা মামলায় প্রথম মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় আসে আদালত থেকে। ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুণাভ চক্রবর্তী ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রসু খাঁর মৃত্যুদ- কার্যকর করার রায় দেন।

 

এই মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর খুলনার দৌলতপুর এলাকার পোশাককর্মী শাহিদাকে কৌশলে চাঁদপুর সদর উপজেলার সোহবানপুর এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে নিয়ে হাত-পা বেঁধে হত্যা করে ফেলে যান রসু খাঁ। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করেন তিনি।

 

এরপর কারখানার শ্রমিক পারভীন ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ২০১৮ সালের ৬ মার্চ রায়ে রসু খাঁর দ্বিতীয়বারের মতো মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় হয়। রায়ে রসু, তার ভাগ্নে জহিরুল ইসলামসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ইউসুফ নামের অন্য সাজাপ্রাপ্ত আসামি এখনো পালাতক।

 

এরই মধ্যে রসু খাঁর একের পর এক লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের খবর বেরিয়ে আসে গণমাধ্যমে। ডজন খানেক নারীকে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের আত্মস্বীকৃত এই খুনির ফাঁসির রায় হয়েছে সাত বছর প্রায়।

 

চাঁদপুর জেলা কারাগারে থাকা রসু খাঁর বিরুদ্ধে ১১টি মামলার মধ্যে শাহিদা ও পারভীন হত্যা মামলার রায় হয়েছে। অন্য একটি হত্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে চাঁদপুরে দায়রা জজ আদালত। এর আগে ২০১১ সালে পপি হত্যা মামলা থেকেও রসু খাঁ খালাস পান প্রমাণ না থাকায়।

 

চাঁদপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ও চাদঁপুর জেলা আদালতে এখন রসু খাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলার বিচার কাজ কাজ চলছে।

 

এ ব্যাপারে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর সাইয়েদুল ইসলাম বাবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, রসু খাঁর বিরুদ্ধে অধিকাংশ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলার রায় হয়েছে। অন্যগুলো আদালতে বিচারাধীন।

 

মুত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মামলাগুলোর বিষয়ে সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, এসব মামলা উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা। সেখানে বিচারিক আদালতের রায় বহাল থাকলে আসামি আবার আপিলের সুযোগ পাবেন। যদি আসামির আইনজীবী নিয়োগের সমর্থ না হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার আইনজীবী নিয়োগ করে সহযোগিতা করে।

 

২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার পারভীন বেগম, রুনা বেগম, পপি, জাহানারা বেগম, রুনা বেগম, মাসরুরা খাতুন, শাহানারা খাতুন ও পপির লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের পরিচয় উদঘাটন ও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিটি মামলায় লাশ ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। পরে চুরির ঘটনায় টঙ্গী থেকে রসু খাঁ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এসব হত্যাকা-ের রহস্য বেরিয়ে আসে।

 

মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি রসুর বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর কারাগারের জেলার মো. এনায়েতউল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, রসু খাঁর বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলায় দুটিতে মৃত্যুদদণ্ডের আদেশ হয়েছে, একটিতে খালাস পেয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে মামলায় তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন। এসব মামলায় আপিল বিভাগ হয়ে রাষ্ট্রপতি অফিসের আদেশ আসার পরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে। এ ছাড়া অন্য মামলাগুলোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে হবে।

চাঁদপুর কারাগার সূত্রে জানা গেছে, রসুর বিরুদ্ধে পারভীন হত্যা মামলার রায় হাইকোর্টে বহাল আছে। তিনি সর্বশেষ পারভীন হত্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।

যেভাবে সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠেন রসু

গ্রামের এক সাধারণ চোর থেকে রসু খাঁ হয়ে উঠলেন একজন ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার। জবানবন্দি থেকে জানা যায়, বিয়ের পর অন্য এক নারীর প্রেমে পড়েন রসু খাঁ। সেই নারীর ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে মার খেয়ে ১০১টা হত্যা করার পরিকল্পনা নেন তিনি। তবে পুলিশের হাতে আটকের আগ পর্যন্ত ১১ জন নারীকে হত্যা ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন রসু খাঁ।

 

পরকীয়া করার অপরাধে নিজ শ্যালক মান্নানের স্ত্রী রীনাকেও মান্নানের সহযোগিতায় হত্যা করেন রসু খাঁ। রীনাকে তার বাড়ি হাতিয়া থেকে মিথ্যে প্ররোচনায় ফরিদগঞ্জের ভাটিয়ালপুরে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ফেলে যায়।

 

মূলত রীনাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে রসু খাঁ নারী নির্যাতন ও হত্যায় পৈশাচিক আনন্দ পেতে শুরু করেন। এরপর একে একে আরও দশজন নারীকে কখনো প্রেমের ফাঁদে ফেলে, কখনো ধর্ষণ করে, কখনো বা কন্ট্রাক্ট কিলিং করেন রসু খাঁ।   সূএ:ঢাকাটাইমস ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ফেরত যাবে মিয়ানমারের ২৮৫ সেনা, ফিরবে ১৫০ বাংলাদেশি

» ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী তিন যুবক নিহত

» কৃষক লীগকে শহরে আটকে না রেখে গ্রামে নিয়ে যাওয়া ভালো: কাদের

» গণভবনের শাক-সবজি কৃষক লীগ নেতাদের উপহার দিলেন শেখ হাসিনা

» হাওরে কৃষকদের বোরো ধানের উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী

» বাসচাপায় সিএনজি যাত্রী নিহত

» ‌‌‘বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা’

» রাজধানীর শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

» বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রাজনৈতিক নয়: প্রধানমন্ত্রী

» রাজধানীর শিশু হাসপাতালের ভবনে আগুন

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সিরিয়াল কিলার রসু খাঁকে মনে আছে? কোন কারাগারে তিনি? শাস্তি কত দূর?

গ্রামের যুবক রসু খাঁর নেশা ছিল নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বা নানা প্ররোচনায় ডেকে নিয়ে হত্যা করা। গলা টিপে কিংবা পানিতে চুবিয়ে ওই নারীদের হত্যা করতেন এই সিরিয়াল কিলার। হত্যা করার আগে নিজে অথবা সহযোগীদের নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণ করার প্রবণতা ছিল রসু খাঁর। এই সিরিয়াল কিলারের নৃশংসতার কথা যারা পড়েছেন, তাদের পক্ষে তাকে ভুলে যাওয়া কঠিনই।

এখন পর্যন্ত তিনটিং মামলায় ফাঁসির আদেশ হয়েছে সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর। যার মধ্যে একটি মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এখনো আটটি মামলা বিচারাধীন।

 

প্রেমের ফাঁদে ফেলে নারীদের ডেকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রসু খাঁ এখন চাঁদপুর কারাগারে বন্দী। তার প্রথম মৃত্যুদণ্ডের রায় হয় ২০১৫ সালে। সেই থেকে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অপেক্ষা- কবে হবে রসু খাঁর ফাঁসি?

 

২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় টঙ্গী থেকে রসু খাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার মোবাইল ফোনের সূত্রে স্থানীয় এক কিশোরী হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তিন দিনের রিমান্ডে মুখ খোলেন রসু খাঁ। বেরিয়ে আসে গা শিউরে ওঠা তার সব ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা।

 

রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দিতে ১১টি খুনের কথা উঠে আসে। আরও ১০১ জন নারীকে হত্যা করার পরিকল্পনার কথাও স্বীকার করেন এই কুখ্যাত ক্রণিক খুনি।

 

চাঁদপুরের রসু খাঁর বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর মধ্যে খুলনার পোশাককর্মী শাহিদা হত্যা মামলায় প্রথম মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় আসে আদালত থেকে। ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুণাভ চক্রবর্তী ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রসু খাঁর মৃত্যুদ- কার্যকর করার রায় দেন।

 

এই মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর খুলনার দৌলতপুর এলাকার পোশাককর্মী শাহিদাকে কৌশলে চাঁদপুর সদর উপজেলার সোহবানপুর এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে নিয়ে হাত-পা বেঁধে হত্যা করে ফেলে যান রসু খাঁ। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করেন তিনি।

 

এরপর কারখানার শ্রমিক পারভীন ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ২০১৮ সালের ৬ মার্চ রায়ে রসু খাঁর দ্বিতীয়বারের মতো মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় হয়। রায়ে রসু, তার ভাগ্নে জহিরুল ইসলামসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ইউসুফ নামের অন্য সাজাপ্রাপ্ত আসামি এখনো পালাতক।

 

এরই মধ্যে রসু খাঁর একের পর এক লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের খবর বেরিয়ে আসে গণমাধ্যমে। ডজন খানেক নারীকে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের আত্মস্বীকৃত এই খুনির ফাঁসির রায় হয়েছে সাত বছর প্রায়।

 

চাঁদপুর জেলা কারাগারে থাকা রসু খাঁর বিরুদ্ধে ১১টি মামলার মধ্যে শাহিদা ও পারভীন হত্যা মামলার রায় হয়েছে। অন্য একটি হত্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে চাঁদপুরে দায়রা জজ আদালত। এর আগে ২০১১ সালে পপি হত্যা মামলা থেকেও রসু খাঁ খালাস পান প্রমাণ না থাকায়।

 

চাঁদপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ও চাদঁপুর জেলা আদালতে এখন রসু খাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলার বিচার কাজ কাজ চলছে।

 

এ ব্যাপারে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর সাইয়েদুল ইসলাম বাবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, রসু খাঁর বিরুদ্ধে অধিকাংশ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলার রায় হয়েছে। অন্যগুলো আদালতে বিচারাধীন।

 

মুত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মামলাগুলোর বিষয়ে সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, এসব মামলা উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা। সেখানে বিচারিক আদালতের রায় বহাল থাকলে আসামি আবার আপিলের সুযোগ পাবেন। যদি আসামির আইনজীবী নিয়োগের সমর্থ না হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার আইনজীবী নিয়োগ করে সহযোগিতা করে।

 

২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার পারভীন বেগম, রুনা বেগম, পপি, জাহানারা বেগম, রুনা বেগম, মাসরুরা খাতুন, শাহানারা খাতুন ও পপির লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের পরিচয় উদঘাটন ও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিটি মামলায় লাশ ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। পরে চুরির ঘটনায় টঙ্গী থেকে রসু খাঁ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এসব হত্যাকা-ের রহস্য বেরিয়ে আসে।

 

মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি রসুর বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর কারাগারের জেলার মো. এনায়েতউল্লাহ ঢাকাটাইমসকে বলেন, রসু খাঁর বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলায় দুটিতে মৃত্যুদদণ্ডের আদেশ হয়েছে, একটিতে খালাস পেয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে মামলায় তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন। এসব মামলায় আপিল বিভাগ হয়ে রাষ্ট্রপতি অফিসের আদেশ আসার পরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে। এ ছাড়া অন্য মামলাগুলোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে হবে।

চাঁদপুর কারাগার সূত্রে জানা গেছে, রসুর বিরুদ্ধে পারভীন হত্যা মামলার রায় হাইকোর্টে বহাল আছে। তিনি সর্বশেষ পারভীন হত্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।

যেভাবে সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠেন রসু

গ্রামের এক সাধারণ চোর থেকে রসু খাঁ হয়ে উঠলেন একজন ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার। জবানবন্দি থেকে জানা যায়, বিয়ের পর অন্য এক নারীর প্রেমে পড়েন রসু খাঁ। সেই নারীর ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে মার খেয়ে ১০১টা হত্যা করার পরিকল্পনা নেন তিনি। তবে পুলিশের হাতে আটকের আগ পর্যন্ত ১১ জন নারীকে হত্যা ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন রসু খাঁ।

 

পরকীয়া করার অপরাধে নিজ শ্যালক মান্নানের স্ত্রী রীনাকেও মান্নানের সহযোগিতায় হত্যা করেন রসু খাঁ। রীনাকে তার বাড়ি হাতিয়া থেকে মিথ্যে প্ররোচনায় ফরিদগঞ্জের ভাটিয়ালপুরে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ফেলে যায়।

 

মূলত রীনাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে রসু খাঁ নারী নির্যাতন ও হত্যায় পৈশাচিক আনন্দ পেতে শুরু করেন। এরপর একে একে আরও দশজন নারীকে কখনো প্রেমের ফাঁদে ফেলে, কখনো ধর্ষণ করে, কখনো বা কন্ট্রাক্ট কিলিং করেন রসু খাঁ।   সূএ:ঢাকাটাইমস ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com