সিজদায় মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে করণীয়

আমাদের মুসলিমদের নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ইসলামের দ্বিতীয় রোকন। নামাজে অবহেলা এবং অনাদায়ে কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। নামাজ পড়তে গিয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতি ও মাসয়ালার মুখোমুখি হতে হয়।

 

এর মধ্যে রাকাত সংখ্যা ভুলে যাওয়া, সুরা কেরাত পাঠে বিলম্ব, কোনো বৈঠক ভুলে যাওয়া ইত্যাদি। সব পরিস্থিতির জন্য ভিন্ন ভিন্ন সমাধান রয়েছে। অনেক সময় নামাজ পড়তে গিয়ে মাথা থেকে টুপি পড়ে যায়। এতে অনেকেই সন্দেহে পড়ে যান টুপি উঠিয়ে নেবেন নাকি খালি মাথায় নামাজ শেষ করবেন।

এ বিষয়ে ইসলামী সমাধান হলো, নামাজে টুপি মাথায় দেওয়া সুন্নাত। টুপি নেই এমন পরিস্থিতিতে টুপি ছাড়া নামাজ পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে টুপি আছে এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাশন অথবা খালি মাথায় নামাজ পড়া সুন্নাতের বিপরীত এবং মাকরূহ কাজ।

নামাজের মধ্যে টুপি পড়ে গেলে করণীয়

নামাজের সময় হঠাৎ মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে যদি নামাজ আদায়কারী দাঁড়ানো অথবা রুকু অবস্থায় থাকে তাহলে টুপি উঠানোর চেষ্টা করবে না, কারণ এতে ‘আমলে কাসির’ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর আমলে কাসিরের কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায়।

 

নামাজে টুপি পড়ে গেলে তা উঠাতে গিয়ে যদি আমলে কাসির হয়ে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তাই এমন পরিস্থিতিতে উপরে বর্ণিত মাসয়ালার প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি

আর সিজদা বা বৈঠকের সময় মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে যদি এক হাতে তা উঠিয়ে পরে নেয়া সম্ভব হয় তাহলে উঠিয়ে পরে নেয়াই উত্তম। তবে এক হাতে উঠাতে না পারলে নামাজে কোনো ক্ষতি হবে না।

 

আর যদি দুই হাত ব্যবহার করা ছাড়া টুপি উঠানো সম্ভব না হয় তাহলে সেক্ষেত্রে টুপি না উঠানোই উচিত। কারণ এতে ‘আমলে কাসির’ হয়ে গেলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। -(ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২০৩; শরহুল মুনইয়া ৪৪২; দুরারুল হুক্কাম ১/১১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০২; রদ্দুল মুহতার ১/৬২৫)

আমলে কাসির বলা হয়

ফুকাহায়ে কেরামের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মত অনুযায়ী ‘আমলে কাসির’ বলা হয়, নামাজে এমন নড়াচড়াকে যে কারণে নামাজের বাইরের কেউ দেখলে মুসল্লি সম্পর্কে তার নিশ্চিত ধারণা জন্মে যে, এই মুসল্লি এখন আর নামাজে নেই। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে যদি নামাজের বাইরের কেউ মুসাল্লিকে দেখে তার সম্পর্কে নামাজরত বলে ধারণা করা যায়, তাহলে এমতাবস্থায় মুসল্লির কাজকে ‘আমলে কালীল’ বলা হবে, এবং তখন নামাজ নষ্ট হবে না।

 

সুতরাং নামাজে টুপি পড়ে গেলে তা উঠাতে গিয়ে যদি আমলে কাসির হয়ে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তাই এমন পরিস্থিতিতে উপরে বর্ণিত মাসয়ালার প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি।

 

তথ্যসূত্র : ফাতাওয়ায়ে শামী-২/৩৮৫(মাকতাবায়ে যাকারিয়া) ফাতাওয়ায়ে কাযিখান-১/৬৩ আল-ফিকহুল হানাফি ফি ছাওবিহিল জাদীদ-১/২৪৮ ফাতাওয়া আন-নাওয়াযিল(আবুল লেইছ সামারকন্দি)-৮৯ আল-ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা’আহ-১/৩০৫ তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব-১/১৬৫ খুলাসাতুল ফাতাওয়া-১/১৩০)

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সিজদায় মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে করণীয়

আমাদের মুসলিমদের নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ইসলামের দ্বিতীয় রোকন। নামাজে অবহেলা এবং অনাদায়ে কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। নামাজ পড়তে গিয়ে বিভিন্ন পরিস্থিতি ও মাসয়ালার মুখোমুখি হতে হয়।

 

এর মধ্যে রাকাত সংখ্যা ভুলে যাওয়া, সুরা কেরাত পাঠে বিলম্ব, কোনো বৈঠক ভুলে যাওয়া ইত্যাদি। সব পরিস্থিতির জন্য ভিন্ন ভিন্ন সমাধান রয়েছে। অনেক সময় নামাজ পড়তে গিয়ে মাথা থেকে টুপি পড়ে যায়। এতে অনেকেই সন্দেহে পড়ে যান টুপি উঠিয়ে নেবেন নাকি খালি মাথায় নামাজ শেষ করবেন।

এ বিষয়ে ইসলামী সমাধান হলো, নামাজে টুপি মাথায় দেওয়া সুন্নাত। টুপি নেই এমন পরিস্থিতিতে টুপি ছাড়া নামাজ পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে টুপি আছে এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাশন অথবা খালি মাথায় নামাজ পড়া সুন্নাতের বিপরীত এবং মাকরূহ কাজ।

নামাজের মধ্যে টুপি পড়ে গেলে করণীয়

নামাজের সময় হঠাৎ মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে যদি নামাজ আদায়কারী দাঁড়ানো অথবা রুকু অবস্থায় থাকে তাহলে টুপি উঠানোর চেষ্টা করবে না, কারণ এতে ‘আমলে কাসির’ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর আমলে কাসিরের কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায়।

 

নামাজে টুপি পড়ে গেলে তা উঠাতে গিয়ে যদি আমলে কাসির হয়ে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তাই এমন পরিস্থিতিতে উপরে বর্ণিত মাসয়ালার প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি

আর সিজদা বা বৈঠকের সময় মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে যদি এক হাতে তা উঠিয়ে পরে নেয়া সম্ভব হয় তাহলে উঠিয়ে পরে নেয়াই উত্তম। তবে এক হাতে উঠাতে না পারলে নামাজে কোনো ক্ষতি হবে না।

 

আর যদি দুই হাত ব্যবহার করা ছাড়া টুপি উঠানো সম্ভব না হয় তাহলে সেক্ষেত্রে টুপি না উঠানোই উচিত। কারণ এতে ‘আমলে কাসির’ হয়ে গেলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। -(ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২০৩; শরহুল মুনইয়া ৪৪২; দুরারুল হুক্কাম ১/১১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০২; রদ্দুল মুহতার ১/৬২৫)

আমলে কাসির বলা হয়

ফুকাহায়ে কেরামের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মত অনুযায়ী ‘আমলে কাসির’ বলা হয়, নামাজে এমন নড়াচড়াকে যে কারণে নামাজের বাইরের কেউ দেখলে মুসল্লি সম্পর্কে তার নিশ্চিত ধারণা জন্মে যে, এই মুসল্লি এখন আর নামাজে নেই। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে যদি নামাজের বাইরের কেউ মুসাল্লিকে দেখে তার সম্পর্কে নামাজরত বলে ধারণা করা যায়, তাহলে এমতাবস্থায় মুসল্লির কাজকে ‘আমলে কালীল’ বলা হবে, এবং তখন নামাজ নষ্ট হবে না।

 

সুতরাং নামাজে টুপি পড়ে গেলে তা উঠাতে গিয়ে যদি আমলে কাসির হয়ে যায় তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তাই এমন পরিস্থিতিতে উপরে বর্ণিত মাসয়ালার প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি।

 

তথ্যসূত্র : ফাতাওয়ায়ে শামী-২/৩৮৫(মাকতাবায়ে যাকারিয়া) ফাতাওয়ায়ে কাযিখান-১/৬৩ আল-ফিকহুল হানাফি ফি ছাওবিহিল জাদীদ-১/২৪৮ ফাতাওয়া আন-নাওয়াযিল(আবুল লেইছ সামারকন্দি)-৮৯ আল-ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা’আহ-১/৩০৫ তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব-১/১৬৫ খুলাসাতুল ফাতাওয়া-১/১৩০)

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com