মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপ মামলার একমাত্র আসামি নাঈম মল্লিককে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার নাঈম মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা গ্রামের মৃত নিজাম মল্লিকের ছেলে।
র্যাব জানায়, আড়াই বছর আগে গ্রেপ্তার নাঈমের সঙ্গে সাথীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সাথী বুঝতে পারে যে তার স্বামী প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তখন থেকেই সাথী নাঈমকে ভালোভাবে চলাফেরা ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। এসব কথা বলার পর থেকেই সাথীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন নাঈম।
এসব ঘটনার পরে উভয় পক্ষের মুরুব্বিরা একাধিক সালিশের মাধ্যমে এ সমস্যার মীমাংসা করে। তারা আবার সংসার শুরু করে। কিছু দিন যাবার পর নাঈম আবার আগের মতো আচরণ শুরু করে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর নাঈমকে তালাক নোটিশ দেয় সাথী। নোটিশ পাওয়ার পরেই নাঈম ক্ষিপ্ত হয়ে সাথীকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশসহ নানান রকম ভয়-ভীত ও হুমকি দিতে থাকে।
গত ২৯ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে নাঈম সাথীর বাবার বাড়িতে গিয়ে সাথীর শয়ন কক্ষের জানালা দিয়ে এসিড ছুড়ে মারে। নাঈমের ছোড়া অ্যাসিড সাথীর মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান, ছোট বোন ইতি আক্তার ও মা জুলেখা বেগমেরও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঝলসে যায়। নাঈম এই ঘটনার পর দৌড়ে পালানোর সময় সাথীর মা জুলেখা বেগম জালানা দিয়ে নাঈমকে দেখে। এ ঘটনায় সাথীর মামা লাল মিয়া সাটুরিয়া থানায় একটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে র্যাব-৪, সিপিসি ৩ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকে র্যাব আসামি নাঈমকে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। নাঈম ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ছদ্দবেশে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে থাকেন।
পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে সদর উপজেলার সাকরাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নাঈমকে। জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের কাছে এই এসিড সন্ত্রাসের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন নাঈম। গ্রেপ্তার আসামিকে প্রয়োজনীয় আইনি কার্যক্রমের জন্য সাটুরিয়া থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র্যাব।,