মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনা শেষে তারা এ ঈদ উদযাপন করেন। ঈদগাহ মাঠে পারস্পারিক কুশল বিনিময় ও কোলাকুলি ঈদের অন্যতম আনন্দ। দোয়া করা হবে সারাবিশ্বের মুসলিমদের কল্যাণে। করোনাভাইরাসের কারণে বাধা নিষেধ থাকায় বিগত কয়েকটি ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে মসজিদে মসজিদে। করোনা পরবর্তী এবারই প্রথম ঈদের নামায আদায় করতে মুসল্লিরা ছুটবেন ঈদগাহ ময়দানে। তাই বেশ আনন্দ উৎসাহ নিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে জাতীয় ঈদ ময়দান।
গত ৫ এপ্রিল থেকে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত করতে দিন রাত পরিশ্রম করছেন পিয়ারু এন্ড সন্স ডেকোরেটরের হাজারো শ্রমিক। সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিচারপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে নামাজ আদায় করবেন সাধারণ মুসল্লিগণ।
এবার ময়দানের ভেতরে পুরুষ ও নারী মিলে প্রায় ৯০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন। এর মধ্যে পৃথক করে নারীদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিগত বছরের তুলানায় এবার প্রবেশ পথের সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় মাঠের ২ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি বর্গফুট জায়গা জুড়ে সামিয়ানা ও বৃষ্টি প্রতিরোধক ত্রিপল দেওয়া হবে। গরম থেকে আরামের জন্য লাগানো হবে ১০টি বড় এয়ারকুলার (শীতল বাতাসের জন্য) স্ট্যান্ড ফ্যান ১০০০ টি এবং ৭০০টি সিলিং ফ্যান।
জানতে চাইলে পিয়ারু এন্ড সন্স এর ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, এপ্রিলের ৫ তারিখ থেকে ময়দান প্রস্তুতের কাজ করছি। প্রতিদিন ১৫০ জন করে শ্রমিক কাজ করেছেন ময়দান প্রস্তুত করতে। শেষের দিকে কাজ করেছেন ১০০ জন করে। দুই/একদিনের মধ্যেই আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত করতে পারবো ঈদগাহ ময়দান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত প্রায় ৪০ বছর যাবত এই মাঠ প্রস্তুত করতে কাজ করছি। ভালোই লাগে ঈদগাহের কাজ করতে। এটি আমার একটি আবেগের জায়গা। মন থেকে ভালোবেসে সওয়াবের আশায় কাজ করি। বিগত কয়েক ঈদে ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করতে না পেরে মন খারাপ ছিল। কারণ তখন করোনাভাইরাস ছিল। ময়দানে নামাজ আদায় করা নিষেধ ছিল।
প্রধান জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো ময়দান লাগানো হবে সিসি ক্যামেরা। বিস্ফোরক দ্রব্য আছে কিনা তা দেখার জন্য প্রবেশ পথে থাকবে মেটাল ডিটেক্টর। নিরাপত্তার জন্য বিশেষ বাহিনীর সাথে থাকবে ডগ স্কোয়াড, মোবাইল ওয়াচ টাওয়ার, মোবাইল কমান্ড সেন্টার, বোম ডিসপোজাল ইউনিট। র্যাব ও পুলিশের আলাদা দুটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এতবড় আয়োজন সম্পন্ন করতে মাস খানেক সময় লাগে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের।
জানতে চাইলে ঈদগাহ ময়দানে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক ঢাকা মেইলকে বলেন, বিগত ১৪ থেকে ১৫ বছর যাবত আমরা এই ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতের কাজ করে আসছি। সবাই আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে কাজ করি। প্রায় এক মাস সময় লাগে এই ময়দান প্রস্তুত করতে। গত ৫ এপ্রিল থেকে আমরা এক হাজার শ্রমিক কাজ করছি।