রেস্তোরাঁ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা হলে আইসিটি আইনে মামলা

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, রেস্তোরাঁ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রচারণা মিথ্যা প্রমাণ হলে আইসিটি আইনে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

আজ (২১ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইমরান হাসান বলেন, সম্প্রতি রেস্তোরাঁ খাতে কিছু নেতিবাচক প্রচারণায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে মিডিয়া দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। ভোক্তা সমাজকে অনুরোধ করবো রেস্তোরাঁ সেক্টরের বিষয়ে যাচাই-েবাছাই করে মন্তব্য করার জন্য। রেস্তোরাঁর বিষয়ে প্রশাসন, ব্যবসায়ী এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।

 

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এর মধ্যে বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে রেস্তোরাঁ খাতে। ব্যবসায় টিকে থাকতে খাবারের দাম বৃদ্ধির বিকল্প নেই আমাদের। অন্যদিকে খাবারের দাম বৃদ্ধি করলে ভোক্তারাও রেস্তোরাঁয় খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। সবমিলিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে রেস্তোরাঁ খাতও বড় সংকটের দিকে ধাবিত হবে।

 

রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইমরান হাসান বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে হবে। মাহে রমজানের ইফতারি, সেহরিসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য যেন নিরাপদ হয় সে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। অধিক মুনাফা লাভের জন্য কোনোক্রমেই ব্যবসার নৈতিকতা হারানো যাবে না। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাইজেনিক উপায়ে ইফতারসহ অন্যান্য সব খাবার পরিবেশন করতে হবে। খোলা জায়গায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে খাবার ঢেকে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি সব সংস্থার প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা আমাদের প্রতি মানবিক হোন এবং আমাদের আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করুন।

 

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি বিশেষজ্ঞ কাউকে দিয়ে রেস্তোরাঁ সেক্টরটি একটু খতিয়ে দেখুন। মাঠপর্যায়ে যে অসন্তোষ বিরাজ করছে তা আপনার পর্যন্ত যাচ্ছে না। অবিলম্বে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিন, আমাদের একটা সহজ পন্থায় ব্যবসা করার সুযোগ দিন।

ইমরান হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার সারাদেশে নিরাপদ খাদ্যের বাস্তবায়ন। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কাজ করে যাচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা। ১২টি অধিদপ্তর আমাদের মনিটরিং করে যাচ্ছে, বছরের পর বছর আমরা বলে আসছি আমরা ১টি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে চাই। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং উল্টো দিন যত যাচ্ছে প্রত্যেকটা অধিদপ্তর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ/ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর।

 

তিনি বলেন, পান থেকে চুন খসলেই বিশাল শাস্তি, কোনো বিশেষজ্ঞ ছাড়াই, কোনো অভিজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতিসাধন করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিলাম, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা অনুরোধ করেছিলাম যে, আমাদের সেক্টরের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ ও স্বশিক্ষিত, তাদের আগে ট্রেনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসেন এবং আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে আমাদের একটি মন্ত্রণালয়/ অধিদপ্তর/সংস্থার অধীনে নিয়ে আসেন। আমাদের একটি গ্রহণযোগ্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি) দিয়ে গাইডলাইন করুন। আজ পর্যন্ত কোনো সংস্থাই আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো এসওপি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরের দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র তাদের টিম যারা আমাদের পরিচালনার/মনিটরিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও আইসিডিডিআরবিকে যুক্ত করেছে, কিন্তু প্রধান স্টেক হোল্ডার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনোদিনই সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এটা হয় আমরা বোঝাতে পারছি না, না হয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বুঝেও না বোঝার ভান করছে। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তিনি ছাড়া আমাদের এ সমস্যা থেকে কেউ উদ্ধার করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি, প্রতিবারের মতো এবারও রমজানে আমাদের ওপর বিশাল খড়গ নেমে আসবে।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির দাবি

সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। এর মধ্যে রয়েছে-

মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রাখা: সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। হাইকোর্টের অনেক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে মোবাইল কোর্ট চলছে। আমরা মোবাইল কোর্টের বিরুদ্ধে না, মোবাইল কোর্ট চলুক যৌক্তিকভাবে। জামিন অযোগ্য-কালাকানুন ধারা ও বিধি বাতিল করতে হবে।

 

করোনা মহামারিতে প্রায় ৩০ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়েছে। যারা টিকে আছে তারাও ধুঁকে ধুঁকে চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায় টিকে থাকতে এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি সরকারের সহযোগিতা জরুরি। বর্তমানে রেস্তোরা সেক্টরে ভ্যাট ও ট্যাক্স হচ্ছে- এসি ও নন এসি রেস্তোরাঁর ওপর ৫ শতাংশ, এটা কমাতে হবে।

 

গ্যাস সংকট: তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে যে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। অর্থাৎ পূর্বের তুলনায় গ্যাস পাচ্ছি ১০০ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ মাত্র, কিন্তু বিল আসছে দ্বিগুণ। এদিকে এলপিজি গ্যাসের দামও চড়া, তাই লাকড়ি দিয়ে রান্না করায় কিচেনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং তা ব্যয়সাপেক্ষ। তাই রেস্তোরাঁ সেক্টরে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া কোনো কারণ ছাড়াই রেস্তোরাঁয় গ্যাস লাইন ট্রান্সফার বন্ধ রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লাইন ট্রান্সফার এবং নাম পরিবর্তনের সব প্রতিবন্ধকতা তুলে নিতে হবে।

 

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য: প্রতি বছরই মাহে রমজান সমাগত হলে বিভিন্ন মৌসুমি-ফড়িয়া/ ব্যবসায়ীরা ইফতারের নামে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেন। এদের হাইজেনিক-নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, এ বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।

 

পবিত্র মাহে রমজানে ইফতারি ও সেহরি সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার সুযোগ প্রদানে আহ্বান জানাচ্ছি। যোগ করেন ইমরান হাসান।

সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

রেস্তোরাঁ নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা হলে আইসিটি আইনে মামলা

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, রেস্তোরাঁ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রচারণা মিথ্যা প্রমাণ হলে আইসিটি আইনে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

আজ (২১ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইমরান হাসান বলেন, সম্প্রতি রেস্তোরাঁ খাতে কিছু নেতিবাচক প্রচারণায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে মিডিয়া দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। ভোক্তা সমাজকে অনুরোধ করবো রেস্তোরাঁ সেক্টরের বিষয়ে যাচাই-েবাছাই করে মন্তব্য করার জন্য। রেস্তোরাঁর বিষয়ে প্রশাসন, ব্যবসায়ী এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।

 

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এর মধ্যে বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে রেস্তোরাঁ খাতে। ব্যবসায় টিকে থাকতে খাবারের দাম বৃদ্ধির বিকল্প নেই আমাদের। অন্যদিকে খাবারের দাম বৃদ্ধি করলে ভোক্তারাও রেস্তোরাঁয় খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। সবমিলিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে রেস্তোরাঁ খাতও বড় সংকটের দিকে ধাবিত হবে।

 

রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইমরান হাসান বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে হবে। মাহে রমজানের ইফতারি, সেহরিসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য যেন নিরাপদ হয় সে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। অধিক মুনাফা লাভের জন্য কোনোক্রমেই ব্যবসার নৈতিকতা হারানো যাবে না। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাইজেনিক উপায়ে ইফতারসহ অন্যান্য সব খাবার পরিবেশন করতে হবে। খোলা জায়গায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে খাবার ঢেকে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি সব সংস্থার প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা আমাদের প্রতি মানবিক হোন এবং আমাদের আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করুন।

 

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি বিশেষজ্ঞ কাউকে দিয়ে রেস্তোরাঁ সেক্টরটি একটু খতিয়ে দেখুন। মাঠপর্যায়ে যে অসন্তোষ বিরাজ করছে তা আপনার পর্যন্ত যাচ্ছে না। অবিলম্বে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিন, আমাদের একটা সহজ পন্থায় ব্যবসা করার সুযোগ দিন।

ইমরান হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার সারাদেশে নিরাপদ খাদ্যের বাস্তবায়ন। বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কাজ করে যাচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা। ১২টি অধিদপ্তর আমাদের মনিটরিং করে যাচ্ছে, বছরের পর বছর আমরা বলে আসছি আমরা ১টি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে চাই। কিন্তু এর কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং উল্টো দিন যত যাচ্ছে প্রত্যেকটা অধিদপ্তর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ/ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর।

 

তিনি বলেন, পান থেকে চুন খসলেই বিশাল শাস্তি, কোনো বিশেষজ্ঞ ছাড়াই, কোনো অভিজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতিসাধন করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিলাম, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা অনুরোধ করেছিলাম যে, আমাদের সেক্টরের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ ও স্বশিক্ষিত, তাদের আগে ট্রেনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসেন এবং আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে আমাদের একটি মন্ত্রণালয়/ অধিদপ্তর/সংস্থার অধীনে নিয়ে আসেন। আমাদের একটি গ্রহণযোগ্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি) দিয়ে গাইডলাইন করুন। আজ পর্যন্ত কোনো সংস্থাই আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো এসওপি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরের দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র তাদের টিম যারা আমাদের পরিচালনার/মনিটরিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও আইসিডিডিআরবিকে যুক্ত করেছে, কিন্তু প্রধান স্টেক হোল্ডার হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে যুক্ত করা হয়নি। এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোনোদিনই সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এটা হয় আমরা বোঝাতে পারছি না, না হয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বুঝেও না বোঝার ভান করছে। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তিনি ছাড়া আমাদের এ সমস্যা থেকে কেউ উদ্ধার করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি, প্রতিবারের মতো এবারও রমজানে আমাদের ওপর বিশাল খড়গ নেমে আসবে।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির দাবি

সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। এর মধ্যে রয়েছে-

মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রাখা: সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। হাইকোর্টের অনেক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে মোবাইল কোর্ট চলছে। আমরা মোবাইল কোর্টের বিরুদ্ধে না, মোবাইল কোর্ট চলুক যৌক্তিকভাবে। জামিন অযোগ্য-কালাকানুন ধারা ও বিধি বাতিল করতে হবে।

 

করোনা মহামারিতে প্রায় ৩০ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়েছে। যারা টিকে আছে তারাও ধুঁকে ধুঁকে চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায় টিকে থাকতে এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি সরকারের সহযোগিতা জরুরি। বর্তমানে রেস্তোরা সেক্টরে ভ্যাট ও ট্যাক্স হচ্ছে- এসি ও নন এসি রেস্তোরাঁর ওপর ৫ শতাংশ, এটা কমাতে হবে।

 

গ্যাস সংকট: তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ থেকে যে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। অর্থাৎ পূর্বের তুলনায় গ্যাস পাচ্ছি ১০০ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ মাত্র, কিন্তু বিল আসছে দ্বিগুণ। এদিকে এলপিজি গ্যাসের দামও চড়া, তাই লাকড়ি দিয়ে রান্না করায় কিচেনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং তা ব্যয়সাপেক্ষ। তাই রেস্তোরাঁ সেক্টরে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া কোনো কারণ ছাড়াই রেস্তোরাঁয় গ্যাস লাইন ট্রান্সফার বন্ধ রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লাইন ট্রান্সফার এবং নাম পরিবর্তনের সব প্রতিবন্ধকতা তুলে নিতে হবে।

 

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য: প্রতি বছরই মাহে রমজান সমাগত হলে বিভিন্ন মৌসুমি-ফড়িয়া/ ব্যবসায়ীরা ইফতারের নামে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেন। এদের হাইজেনিক-নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, এ বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।

 

পবিত্র মাহে রমজানে ইফতারি ও সেহরি সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার সুযোগ প্রদানে আহ্বান জানাচ্ছি। যোগ করেন ইমরান হাসান।

সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com