রুশ বাহিনীর টার্গেটে ওডেসা

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ১১তম দিনে গতকাল রুশ বাহিনী রাজধানী কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র লড়াইয়ের পর ঐতিহাসিক হস্তোমেল বিমান ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। তবে সেখানে তুমুল গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া রুশ বাহিনী আগের দিনগুলোর মতোই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আছে। তারা নতুন করে অগ্রাভিযান না চালালেও সামরিক সূত্রগুলো বলছে, তারা এখন ইউক্রেনের দক্ষিণ অংশ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তাদের প্রধান টার্গেট ওডেসা। এই এলাকাটি দখলে নিলেই খেরসন থেকে মালদোভা সীমান্ত হয়ে ট্রান্সনিস্টিরিয়া পর্যন্ত পুরো এলাকা রাশিয়ার কবজায় চলে আসবে। এদিকে অবরুদ্ধ মারিয়াপোল থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নিতে সেখানে আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা, স্কাই নিউজ, সিএনএন, স্পুটনিক।

 

ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা গতকাল বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধ কমান্ড দেশটিকে কৃষ্ণ সাগর থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য দক্ষিণ ফ্রন্টে মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছে। কিয়েভ, খারকিভ, মারিয়াপোল, মাইকোলাইভ, চেরনিহিভ এবং ওডেসা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং রুশ সৈন্যরা শহরগুলো ঘেরাও এবং ইউক্রেন সেনাদের চলাচলের পথ বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে। এ বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ বাহিনী ভয়াবহ বোমা হামলার জন্য ওডেসাকে টার্গেট করেছে। পাশাপাশি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন পশ্চিমাদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কেবল রুশ বাহিনী যুদ্ধ বন্ধ করবে।

 

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কভ জানিয়েছেন, তার  দেশের সেনারা গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের চারটি সুখোই-২৭ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। রুশ বাহিনী দীর্ঘপাল্লার হাই প্রিসিশন ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের স্টারোকোস্তিয়ানতিনিভ বিমান ঘাঁটি অকার্যকর করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত একটি এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস এবং ১০টি বিমান ও  হেলিকপ্টার ভূপাতিত করা হয়েছে। অন্যদিকে পাল্টা দাবি করে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৮৮টি বিমান ও হেলিকপ্টার হারিয়েছে রাশিয়া। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন রাশিয়ান পাইলটকেও আটক করা হয়েছে। মাইকোলিয়াভ অঞ্চলে রাশিয়ার বেশ কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ইউক্রেন বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তবে যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনা হতাহতের সংখ্যা মন্ত্রণালয় জানায়নি।

 

মারিয়াপোলে ফের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা : ইউক্রেনের মারিয়াপোল শহরে নতুন করে গতকাল আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা থেকে রাত ১টা) পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার কথা। ঘোষণায় বলা হয়, বেসামরিক বাসিন্দারা এই সময় শহর ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে এ যুদ্ধবিরতি কতটুকু কার্যকর হয়েছে- তা জানা যায়নি।

 

উল্লেখ্য, এর আগের দিনও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে লোকজনকে শহর ছাড়াতে মানবিক করিডোর চালু করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার তরফ থেকে দাবি করা হয়, ইউক্রেন সেনারা কোনো লোকজনকেই শহর ছাড়তে দেয়নি। তাদের গুলি করা হবে বলে ভয় দেখানো হয়। পাশাপাশি ইউক্রেন সমর্থক গেরিলারা একটি ভবন উড়িয়ে দিয়ে যুদ্ধবিরতি ভ-ুল করে দেয়। রাশিয়ার অভিযোগ, জনসাধারণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার জন্যই তাদের আটকে রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেন সেনাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রুশ সেনারা যুদ্ধবিরতি মানেনি। তারা গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

 

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, রুশ সেনারা ব্যাপক প্রাণহানি ঠেকাতেই জনসাধারণকে সরে যাওয়ার জন্য বলছে। তারা সরে গেলেই বড় হামলা চালানো হবে। অন্যদিকে এই হামলা ঠেকিয়ে রাখতে ইউক্রেন সেনারা নাগরিকদের বের হতে দিচ্ছে না।

 

এর আগে শনিবার রাতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কভ বলেন, ঘোষিত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইউক্রেনের উগ্র জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র ব্যক্তিরা রাশিয়ার সেনাদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে এবং তাদের হামলা করা থেকে বিরত রাখতে কিয়েভ ব্যর্থ হয়। এ কারণে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনী আবার অভিযান শুরু করে। রুশ সেনাদের অগ্রাভিযানের সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে পড়ে যাতে বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু না হয়- সে জন্য রাশিয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। মস্কো বলেছিল, যুদ্ধবিরতির এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের শহর দুটি থেকে বের করে নিতে হবে যাতে পরবর্তীতে অভিযান চালানোর সময় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নিতে না হয়। কিন্তু রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, দেশটির ঘোষিত নিরাপদ করিডোর দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের বেরিয়ে যাওয়ার কাজে বাধা সৃষ্টি করে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।

 

পুতিন বললেন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধ ঘোষণা করার শামিল : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে- তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে- এখনো সেই সময় আসেনি।

 

পুতিন সতর্ক করে আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর নো-ফ্লাই জোন সৃষ্টির যে কোনো প্রচেষ্টাকে সশস্ত্র সংঘাতে অংশগ্রহণ হিসেবে দেখা হবে।’ গত  শনিবার মস্কোর কাছে একটি অ্যারোফ্লট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একদল মহিলা ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন এসব মন্তব্য করেন। তিনি উল্লেখ করেন, তিনি ইউক্রেনে রুশভাষী সম্প্রদায়কে ন্যায্যতার ভিত্তিতে রক্ষা করতে চাইছেন। ‘পশ্চিমা প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের অভিযোগ- রাশিয়ান সামরিক অভিযান প্রত্যাশার চেয়ে কম’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী সব কাজ সম্পন্ন করবে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। বিশেষ এ সামরিক অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ীই চলছে।

 

জনসাধারণকে যুদ্ধে নামার ডাক জেলেনস্কির : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি ভাষণ শনিবার দিনগত রাতে কিয়েভ টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। এতে তিনি কিয়েভসহ ইউক্রেনের জনসাধারণকে দেশ রক্ষার জন্য যুদ্ধে নামার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। তাই আপনাদের বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে এবং আমাদের শহরগুলো থেকে শত্রুদের তাড়াতে হবে।’ জেলেনস্কির এই ভাষণ কোথা থেকে রেকর্ড করা হয়েছে- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিয়েভ টেলিভিশন থেকে দাবি করা হয়, তিনি কিয়েভ থেকেই এ ভাষণ দিয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, জেলেনস্কি পালিয়ে পোল্যান্ডে অবস্থান করছেন।

 

এর আগে গত শুক্রবার ইউক্রেনের বিরোধী আইনপ্রণেতা ইলিয়া কিভা গণমাধ্যমকে জানান, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং তিনি ওয়ারশতে মার্কিন দূতাবাসে অবস্থান করছেন।

 

আরেক খবরে বলা হয়, জেলেনস্কিকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৫০ ইউএস নেভি সিল এবং ৭০টিরও বেশি ব্রিটিশ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস কমান্ডো নিয়ে গঠিত একটি এলিট কমান্ডো বাহিনী লিথুয়ানিয়ার একটি ঘাঁটিতে অবস্থান করছে।

 

তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসছে ইউক্রেন-রাশিয়া : চলমান যুদ্ধের মধ্যে আজ সোমবার তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। তবে এবারের বৈঠকটি কোথায় হচ্ছে- সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। দেশ দুটির মধ্যে প্রথম বৈঠকটি হয় ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে। তৃতীয় দফার বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও ইউক্রেনের আলোচক ডেভিড আরাখামিয়া ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাশিয়ার তরফ থেকে শুধু বলা হয়েছিল সোমবার বৈঠক হতে পারে।

 

যুদ্ধ থামাতে ইসরায়েলের উদ্যোগ : ইউক্রেন নিয়ে যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক উদ্যোগে নেমেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। তিনি গতকাল মস্কো যান এবং ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানির সঙ্গে আলোচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী বেনেট। বেনেটের মুখপাত্র বলেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে বার্লিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।

এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশে মস্কো যাওয়ার আগে তার সঙ্গে কথা বলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। পুতিনের সঙ্গে ম্যাক্রোঁর কী কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে বেনেটকে সংক্ষেপে জানান তিনি। এলিসি প্রাসাদের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে নিবিড় যোগাযোগ থাকবে তাদের মধ্যে। এর সঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলরও থাকবেন।

 

খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির পক্ষ হয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সামরিক সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তবে বেনেটের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে তেমন কোনো সাফল্য আসবে না বলেই মনে করছেন কর্মকর্তারা। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ইসরায়েল ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে। কিয়েভের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইউক্রেনে মানবিক সাহায্যও পাঠিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, ইউক্রেনে সংঘাত নিরসনের লক্ষ্যে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে মস্কোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» লঞ্চঘাট থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে পরিবহন শ্রমিকের মৃত্যু

» গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত

» মারধর করে ‘পঙ্গু’ বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা

» ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে আজ

» ১৩ অঞ্চলের নদীবন্দরে এক নম্বর সংকেত

» প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আজ

» আজ শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» বিডিএস বাস্তবায়িত হলে ম্যাপ সংযুক্ত মালিকানা ভিত্তিক খতিয়ান চালু করা সম্ভব হবে – ভূমিমন্ত্রী

» বিএটি বাংলাদেশের ৫১তম এজিএম অনুষ্ঠিত

» ইসলামপুরে কৃষকরা পেল উন্নত মানের বীজ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

রুশ বাহিনীর টার্গেটে ওডেসা

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ১১তম দিনে গতকাল রুশ বাহিনী রাজধানী কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র লড়াইয়ের পর ঐতিহাসিক হস্তোমেল বিমান ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। তবে সেখানে তুমুল গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া রুশ বাহিনী আগের দিনগুলোর মতোই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আছে। তারা নতুন করে অগ্রাভিযান না চালালেও সামরিক সূত্রগুলো বলছে, তারা এখন ইউক্রেনের দক্ষিণ অংশ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তাদের প্রধান টার্গেট ওডেসা। এই এলাকাটি দখলে নিলেই খেরসন থেকে মালদোভা সীমান্ত হয়ে ট্রান্সনিস্টিরিয়া পর্যন্ত পুরো এলাকা রাশিয়ার কবজায় চলে আসবে। এদিকে অবরুদ্ধ মারিয়াপোল থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নিতে সেখানে আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা, স্কাই নিউজ, সিএনএন, স্পুটনিক।

 

ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা গতকাল বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধ কমান্ড দেশটিকে কৃষ্ণ সাগর থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য দক্ষিণ ফ্রন্টে মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছে। কিয়েভ, খারকিভ, মারিয়াপোল, মাইকোলাইভ, চেরনিহিভ এবং ওডেসা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং রুশ সৈন্যরা শহরগুলো ঘেরাও এবং ইউক্রেন সেনাদের চলাচলের পথ বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে। এ বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ বাহিনী ভয়াবহ বোমা হামলার জন্য ওডেসাকে টার্গেট করেছে। পাশাপাশি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন পশ্চিমাদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কেবল রুশ বাহিনী যুদ্ধ বন্ধ করবে।

 

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কভ জানিয়েছেন, তার  দেশের সেনারা গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের চারটি সুখোই-২৭ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। রুশ বাহিনী দীর্ঘপাল্লার হাই প্রিসিশন ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের স্টারোকোস্তিয়ানতিনিভ বিমান ঘাঁটি অকার্যকর করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত একটি এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস এবং ১০টি বিমান ও  হেলিকপ্টার ভূপাতিত করা হয়েছে। অন্যদিকে পাল্টা দাবি করে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৮৮টি বিমান ও হেলিকপ্টার হারিয়েছে রাশিয়া। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন রাশিয়ান পাইলটকেও আটক করা হয়েছে। মাইকোলিয়াভ অঞ্চলে রাশিয়ার বেশ কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ইউক্রেন বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তবে যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনা হতাহতের সংখ্যা মন্ত্রণালয় জানায়নি।

 

মারিয়াপোলে ফের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা : ইউক্রেনের মারিয়াপোল শহরে নতুন করে গতকাল আবারও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা থেকে রাত ১টা) পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার কথা। ঘোষণায় বলা হয়, বেসামরিক বাসিন্দারা এই সময় শহর ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে এ যুদ্ধবিরতি কতটুকু কার্যকর হয়েছে- তা জানা যায়নি।

 

উল্লেখ্য, এর আগের দিনও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে লোকজনকে শহর ছাড়াতে মানবিক করিডোর চালু করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার তরফ থেকে দাবি করা হয়, ইউক্রেন সেনারা কোনো লোকজনকেই শহর ছাড়তে দেয়নি। তাদের গুলি করা হবে বলে ভয় দেখানো হয়। পাশাপাশি ইউক্রেন সমর্থক গেরিলারা একটি ভবন উড়িয়ে দিয়ে যুদ্ধবিরতি ভ-ুল করে দেয়। রাশিয়ার অভিযোগ, জনসাধারণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার জন্যই তাদের আটকে রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে ইউক্রেন সেনাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রুশ সেনারা যুদ্ধবিরতি মানেনি। তারা গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।

 

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, রুশ সেনারা ব্যাপক প্রাণহানি ঠেকাতেই জনসাধারণকে সরে যাওয়ার জন্য বলছে। তারা সরে গেলেই বড় হামলা চালানো হবে। অন্যদিকে এই হামলা ঠেকিয়ে রাখতে ইউক্রেন সেনারা নাগরিকদের বের হতে দিচ্ছে না।

 

এর আগে শনিবার রাতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেঙ্কভ বলেন, ঘোষিত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইউক্রেনের উগ্র জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র ব্যক্তিরা রাশিয়ার সেনাদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে এবং তাদের হামলা করা থেকে বিরত রাখতে কিয়েভ ব্যর্থ হয়। এ কারণে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনী আবার অভিযান শুরু করে। রুশ সেনাদের অগ্রাভিযানের সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে পড়ে যাতে বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু না হয়- সে জন্য রাশিয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। মস্কো বলেছিল, যুদ্ধবিরতির এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের শহর দুটি থেকে বের করে নিতে হবে যাতে পরবর্তীতে অভিযান চালানোর সময় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নিতে না হয়। কিন্তু রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, দেশটির ঘোষিত নিরাপদ করিডোর দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের বেরিয়ে যাওয়ার কাজে বাধা সৃষ্টি করে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।

 

পুতিন বললেন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধ ঘোষণা করার শামিল : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে- তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে- এখনো সেই সময় আসেনি।

 

পুতিন সতর্ক করে আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর নো-ফ্লাই জোন সৃষ্টির যে কোনো প্রচেষ্টাকে সশস্ত্র সংঘাতে অংশগ্রহণ হিসেবে দেখা হবে।’ গত  শনিবার মস্কোর কাছে একটি অ্যারোফ্লট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একদল মহিলা ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন এসব মন্তব্য করেন। তিনি উল্লেখ করেন, তিনি ইউক্রেনে রুশভাষী সম্প্রদায়কে ন্যায্যতার ভিত্তিতে রক্ষা করতে চাইছেন। ‘পশ্চিমা প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের অভিযোগ- রাশিয়ান সামরিক অভিযান প্রত্যাশার চেয়ে কম’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী সব কাজ সম্পন্ন করবে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। বিশেষ এ সামরিক অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ীই চলছে।

 

জনসাধারণকে যুদ্ধে নামার ডাক জেলেনস্কির : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কির একটি ভাষণ শনিবার দিনগত রাতে কিয়েভ টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। এতে তিনি কিয়েভসহ ইউক্রেনের জনসাধারণকে দেশ রক্ষার জন্য যুদ্ধে নামার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। তাই আপনাদের বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে এবং আমাদের শহরগুলো থেকে শত্রুদের তাড়াতে হবে।’ জেলেনস্কির এই ভাষণ কোথা থেকে রেকর্ড করা হয়েছে- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিয়েভ টেলিভিশন থেকে দাবি করা হয়, তিনি কিয়েভ থেকেই এ ভাষণ দিয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, জেলেনস্কি পালিয়ে পোল্যান্ডে অবস্থান করছেন।

 

এর আগে গত শুক্রবার ইউক্রেনের বিরোধী আইনপ্রণেতা ইলিয়া কিভা গণমাধ্যমকে জানান, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং তিনি ওয়ারশতে মার্কিন দূতাবাসে অবস্থান করছেন।

 

আরেক খবরে বলা হয়, জেলেনস্কিকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৫০ ইউএস নেভি সিল এবং ৭০টিরও বেশি ব্রিটিশ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস কমান্ডো নিয়ে গঠিত একটি এলিট কমান্ডো বাহিনী লিথুয়ানিয়ার একটি ঘাঁটিতে অবস্থান করছে।

 

তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসছে ইউক্রেন-রাশিয়া : চলমান যুদ্ধের মধ্যে আজ সোমবার তৃতীয় দফায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। তবে এবারের বৈঠকটি কোথায় হচ্ছে- সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। দেশ দুটির মধ্যে প্রথম বৈঠকটি হয় ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে। তৃতীয় দফার বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও ইউক্রেনের আলোচক ডেভিড আরাখামিয়া ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাশিয়ার তরফ থেকে শুধু বলা হয়েছিল সোমবার বৈঠক হতে পারে।

 

যুদ্ধ থামাতে ইসরায়েলের উদ্যোগ : ইউক্রেন নিয়ে যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক উদ্যোগে নেমেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। তিনি গতকাল মস্কো যান এবং ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানির সঙ্গে আলোচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী বেনেট। বেনেটের মুখপাত্র বলেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে বার্লিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।

এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলিসি প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশে মস্কো যাওয়ার আগে তার সঙ্গে কথা বলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। পুতিনের সঙ্গে ম্যাক্রোঁর কী কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে বেনেটকে সংক্ষেপে জানান তিনি। এলিসি প্রাসাদের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে নিবিড় যোগাযোগ থাকবে তাদের মধ্যে। এর সঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলরও থাকবেন।

 

খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির পক্ষ হয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সামরিক সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তবে বেনেটের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে তেমন কোনো সাফল্য আসবে না বলেই মনে করছেন কর্মকর্তারা। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ইসরায়েল ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে। কিয়েভের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইউক্রেনে মানবিক সাহায্যও পাঠিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, ইউক্রেনে সংঘাত নিরসনের লক্ষ্যে তাদের সরকারের পক্ষ থেকে মস্কোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com