যে ভাবে আগুন লাগা বিমানের ১৮৫ যাত্রীর জীবন বাঁচালেন নারী পাইলট

ভারতের বিহার প্রদেশের পাটনা বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লিগামী স্পাইসজেটের ১৮৫ আরোহীকে নিয়ে উড্ডয়ন করা বিমানের ইঞ্জিনে মাঝ আকাশে আগুন ধরেছিল। পাইলট ক্যাপ্টেন মনিকা খান্না বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই সেটি পাটনা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করান। তার এই সাহসিকতাপূর্ণ এবং সময়োচিত সিদ্ধান্তে প্রায় দুইশ’ যাত্রীর জীবন অল্পের জন্য বেঁচে যায়।

 

রোববার  বিহারের পাটনা বিমানবন্দর থেকে আরোহীদের নিয়ে স্পাইসজেটের ওই বিমানটি দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর পরপরই এই ঘটনা ঘটে।

স্পাইস জেটের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিমানের কেবিন ক্রুরা বাম পাশের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার তথ্য জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে দেন পাইলট মনিকা খান্না। পাটনা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানে নিরাপদে বিমানটির জরুরি অবতরণ করান তিনি।

 

পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয় এবং এতে কেউ আহত হননি। স্থানীয়দের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানের বাম ইঞ্জিন থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বেরিয়ে আসছে।

 

স্পাইসজেটের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের প্রধান গুরচরণ অরোরার বরাত দিয়ে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ‘ক্যাপ্টেন মনিকা খান্না এবং ফার্স্ট অফিসার বলপ্রীত সিং ভাটিয়া এই ঘটনার সময় দক্ষতার সাথে কাজ করেছিলেন। তারা পুরো সময় শান্ত ছিলেন এবং বিমানটি ভালোভাবে পরিচালনা করেছিলেন। তারা অভিজ্ঞ অফিসার এবং আমরা তাদের জন্য গর্বিত।

 

উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পাইস জেটের ওই বিমানের বাম পাশের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। এটিসির সঙ্গে যোগাযোগের পর ক্যাপ্টেন মনিকা খান্না তাৎক্ষণিকভাবে বিমানের জ্বলতে থাকা ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিমানের স্টান্ডার্ড প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এক চক্কর দেওয়ার পর বিমানটি পাটনা বিমানবন্দরের দিকে দ্রুত ফিরে আসে। বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি ফিরে আসার সময় কেবল একটি ইঞ্জিন সচল ছিল।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, রানওয়ের কাছে আসার আগেই বিমানটির ইঞ্জিনে আগুন নিভে যায়। নিরাপদে অবতরণের পর এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি ও বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা করতালি দিয়ে ক্যাপ্টেন মনিকাকে স্বাগত জানান।

 

বিমান প্রকৌশলীদের মতে, পাখির আঘাতে বিমানটির একটি ফ্যানের ব্লেড ও ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) বিমানের ইঞ্জিনে আগুন লেগে যাওয়ার এই ঘটনা তদন্ত করছে।

 

ভারতের কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মনিকা খান্না স্পাইসজেট লিমিটেডের অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন একজন পাইলট। ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন খান্না। নিত্য-নতুন ফ্যাশন এবং ট্রেন্ডিংয়ের প্রতি গভীর আগ্রহ আছে তার।

 

জরুরি পরিস্থিতিতে ক্যাপ্টেন মনিকা খান্নার দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পায় স্পাইস জেটের ওই বিমান। আর অল্পের জন্য বেঁচে যায় অনেক প্রাণ।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ফেরত যাবে মিয়ানমারের ২৮৫ সেনা, ফিরবে ১৫০ বাংলাদেশি

» ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী তিন যুবক নিহত

» কৃষক লীগকে শহরে আটকে না রেখে গ্রামে নিয়ে যাওয়া ভালো: কাদের

» গণভবনের শাক-সবজি কৃষক লীগ নেতাদের উপহার দিলেন শেখ হাসিনা

» হাওরে কৃষকদের বোরো ধানের উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী

» বাসচাপায় সিএনজি যাত্রী নিহত

» ‌‌‘বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা’

» রাজধানীর শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

» বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রাজনৈতিক নয়: প্রধানমন্ত্রী

» রাজধানীর শিশু হাসপাতালের ভবনে আগুন

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে ভাবে আগুন লাগা বিমানের ১৮৫ যাত্রীর জীবন বাঁচালেন নারী পাইলট

ভারতের বিহার প্রদেশের পাটনা বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লিগামী স্পাইসজেটের ১৮৫ আরোহীকে নিয়ে উড্ডয়ন করা বিমানের ইঞ্জিনে মাঝ আকাশে আগুন ধরেছিল। পাইলট ক্যাপ্টেন মনিকা খান্না বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই সেটি পাটনা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করান। তার এই সাহসিকতাপূর্ণ এবং সময়োচিত সিদ্ধান্তে প্রায় দুইশ’ যাত্রীর জীবন অল্পের জন্য বেঁচে যায়।

 

রোববার  বিহারের পাটনা বিমানবন্দর থেকে আরোহীদের নিয়ে স্পাইসজেটের ওই বিমানটি দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর পরপরই এই ঘটনা ঘটে।

স্পাইস জেটের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিমানের কেবিন ক্রুরা বাম পাশের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার তথ্য জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে দেন পাইলট মনিকা খান্না। পাটনা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানে নিরাপদে বিমানটির জরুরি অবতরণ করান তিনি।

 

পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয় এবং এতে কেউ আহত হননি। স্থানীয়দের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানের বাম ইঞ্জিন থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বেরিয়ে আসছে।

 

স্পাইসজেটের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের প্রধান গুরচরণ অরোরার বরাত দিয়ে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ‘ক্যাপ্টেন মনিকা খান্না এবং ফার্স্ট অফিসার বলপ্রীত সিং ভাটিয়া এই ঘটনার সময় দক্ষতার সাথে কাজ করেছিলেন। তারা পুরো সময় শান্ত ছিলেন এবং বিমানটি ভালোভাবে পরিচালনা করেছিলেন। তারা অভিজ্ঞ অফিসার এবং আমরা তাদের জন্য গর্বিত।

 

উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পাইস জেটের ওই বিমানের বাম পাশের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। এটিসির সঙ্গে যোগাযোগের পর ক্যাপ্টেন মনিকা খান্না তাৎক্ষণিকভাবে বিমানের জ্বলতে থাকা ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিমানের স্টান্ডার্ড প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এক চক্কর দেওয়ার পর বিমানটি পাটনা বিমানবন্দরের দিকে দ্রুত ফিরে আসে। বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি ফিরে আসার সময় কেবল একটি ইঞ্জিন সচল ছিল।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, রানওয়ের কাছে আসার আগেই বিমানটির ইঞ্জিনে আগুন নিভে যায়। নিরাপদে অবতরণের পর এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি ও বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা করতালি দিয়ে ক্যাপ্টেন মনিকাকে স্বাগত জানান।

 

বিমান প্রকৌশলীদের মতে, পাখির আঘাতে বিমানটির একটি ফ্যানের ব্লেড ও ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) বিমানের ইঞ্জিনে আগুন লেগে যাওয়ার এই ঘটনা তদন্ত করছে।

 

ভারতের কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মনিকা খান্না স্পাইসজেট লিমিটেডের অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন একজন পাইলট। ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন খান্না। নিত্য-নতুন ফ্যাশন এবং ট্রেন্ডিংয়ের প্রতি গভীর আগ্রহ আছে তার।

 

জরুরি পরিস্থিতিতে ক্যাপ্টেন মনিকা খান্নার দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপের ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পায় স্পাইস জেটের ওই বিমান। আর অল্পের জন্য বেঁচে যায় অনেক প্রাণ।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com