যেসব পোশাক কখনোই ওয়াশিং মেশিনে দেবেন না

ওয়াশিং মেশিন মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে কতটা সহজ করে তুলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কঠিন দাগ-ছোপ দূর করা থেকে শুরু করে জিমে যাওয়ার পোশাক পর্যন্ত ধুয়ে ফেলতে পারবেন ওয়াশিং মেশিনে, যা হাতে ধুতে গেলে অনেকটা পরিশ্রম দরকার। তবে ওয়াশিং মেশিন আছে বলেই সব পোশাক সেখানে ঢুকিয়ে দিলাম, তা কিন্তু নয়! নির্দিষ্ট কিছু পোশাক আছে যা কখনোই ওয়াশিং মেশিনে দেওয়া উচিত নয়। এতে কাপড়ের ক্ষতি হতে পারে এবং টেকসই ক্ষমতা কমে যায়।

 

শুধু তাই নয়, ভুল উপায় অবলম্বনের কারণে কাপড়ের পাশাপাশি ওয়াশিং মেশিন নামক যন্ত্রটিরও ক্ষতি হতে পারে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক যেসব পোশাক ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যাবে না সে সম্পর্কে-

পোষা প্রাণীর পশম লেগে থাকা যে কোনো কাপড়
বাড়িতে যদি কুকুর-বিড়ালের মতো পোষা প্রাণী থাকে তাহলে ঘরের সবকিছুর মধ্যেই তাদের পশম খুঁজে পাওয়া অসম্ভব নয়, বিশেষ করে কাপড়ের মধ্যে তো থাকবেই। এসব কাপড় এক নিমিষে ওয়াশিং মেশিনের ভেতরে পুরে  দেওয়ার লোভ হলেও, তা করা যাবে না। কারণ কাপড় থেকে পশমগুলো উঠে গিয়ে কোথাও উধাও হয়ে যায় না। এগুলো ওয়াশিং মেশিনের মধ্যেই জড়িয়ে যায় কিংবা মেশিনের গায়ে লেগে থাকে যা অন্যান্য কাপড়ে লেগে যেতে পারে, অথবা ড্রেন আটকে যেতে পারে। তাই কাপড় ধোয়ার আগে কাপড়ে লেগে থাকা সব পশম তুলে ফেলতে হবে। এই  কাজে প্রাণীদের জন্য ব্যবহৃত ‘লিন্ট রোলারস’ ব্যবহার করতে পারেন।

ঢিলেঢালা অন্তর্বাস
ওয়াশিং মেশিনে অন্তর্বাস ধুতে দিলে সেগুলোর আকার-আকৃতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে এবং আরো ঢিলে হয় যায়। এছাড়া মেশিন ঘোরার সময় অন্তর্বাসের মেটালের আংটাগুলো ঘষা লেগে ক্ষয় হতে পারে, যা একই সঙ্গে মেশিনেরও ক্ষতি করে।

 

জিপার খোলা কাপড়
কোনো পোশাকের জিপার খুলে তা ধুতে দিতে জিপারের সঙ্গে অন্যান্য কাপড় আটকে যাবে এবং কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ওয়াশিং মেশিনের ড্রামের ভেতরেও স্ক্র্যাচ ফেলতে পারে। তাই জিপারযুক্ত কাপড় মেশিনে ধুতে দেওয়ার আগে জিপার লাগিয়ে দিন।

 

সাঁতারের পোশাক
আপনার সাঁতারের পোশাকের লেবেলে যদি লেখাও থাকে যে এটি মেশিনে ধোওয়া যাবে, তবুও তা হাতে ধোওয়া ভালো। কারণ এতে পোশাকটি বেশিদিন টেকসই হবে। অন্যদিকে, ওয়াশিং মেশিনে দিলে সাঁতারের পোশাক আরো ছড়িয়ে যাবে এবং ঢিলে হয়ে যাবে। অন্যান্য পোশাকের হুক-জিপারের সাথে লেগেও এটি নষ্ট হবার সম্ভাবনা বেশি।

 

জরি-পাথর বা লেসের কাজ করা পোশাক
সিক্যুইন্স, জরি-পাথর বসানো পোশাক ওয়াশিং মেশিনে দিলে তা নষ্ট হওয়া অনিবার্য। এমনকি আপনি পোশাকটি উল্টিয়ে মেশিনে দিলেও মেশিন ঘোরার সময় তা সোজা দিকে চলে আসতে পারে। এসব পাথর-জরি আঠা দিয়ে লাগানো থাকলে সেগুলো মেশিনের ঘষায় হালকা হয়ে উঠে যায়। লেসযুক্ত পোশাকের ক্ষেত্রেও একই কথা। এসব কাপড় ড্রাই ক্লিন করতে পারলেই সবচেয়ে ভালো।

 

ভারি কাপড়
কোনো একটি ব্যবহার্য বস্তুই যদি পানিতে ভিজে অনেক ভারি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে ভারসাম্য নষ্ট হয়। মেশিন ঠিকঠাক ঘুরতে পারে না এবং মেশিনেরই ক্ষতি হয়।

 

নরম তন্তুর সোয়েটার
পশমি সোয়েটার বা  এ ধরনের অন্য সব সোয়েটারই হাতে ধোওয়ার নিয়ম। মেশিনে দিলে এগুলো তন্তু দুর্বল হয়ে যায়। হাত দিয়ে টানলে সেসব কাপড় আরো লম্বা হয় এবং কাপড়ের স্বাভাবিক আকার নষ্ট হয়ে যায়। আবার মেশিনের তাপে সেই তন্তু সংকুচিতও হতে পারে।

 

টাই
গলায় বাঁধার টাই আমরা প্রায়ই পরিষ্কার করি না, কিন্তু যেহেতু প্রতিদিন ব্যবহার করতে হয়, এগুলো আসলে পরিষ্কার করা উচিত। কিন্তু টাই বেশিরভাগ সময়ই সিল্ক বা উলের তৈরি হয়ে বলে খুব নাজুক থাকে। এগুলো মেশিনে ধুলে সংকুচিত হতে পারে এবং নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সূত্র: টমস গাইড

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» শহীদ পরিবারের সম্মান প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করছি : নাহিদ ইসলাম

» ছিনতাই-বিরোধী বিশেষ অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ এলটিডি বয়েজ’ গ্রুপের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

» শ্যামপুরে বাসে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা : নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী গ্রেপ্তার

» জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করার প্রত্যাশা আলী রীয়াজের

» ঢাবি ছাত্রলীগের ১২৮ নেতা-কর্মী বহিষ্কার, বিচারের আওতায় আসছে ৩০০

» একই নারীকে বিয়ে করলেন দুই ভাই, বললেন— আমরা গর্বিত

» রাতের আঁধারে সড়ক অবরোধের চেষ্টা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের, বিএনপি দিল ধাওয়া

» ‘সহনশীল হন ধৈর্য্য ধরুন, নইলে বিপদ কিন্তু সবার’ : রাশেদ খাঁন

» ‘এখন আমি অনেকটাই সুস্থ’ : জামায়াত আমির

» সেনাবাহিনীকে কলঙ্কিত করার চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে : গোলাম মাওলা রনি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যেসব পোশাক কখনোই ওয়াশিং মেশিনে দেবেন না

ওয়াশিং মেশিন মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে কতটা সহজ করে তুলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কঠিন দাগ-ছোপ দূর করা থেকে শুরু করে জিমে যাওয়ার পোশাক পর্যন্ত ধুয়ে ফেলতে পারবেন ওয়াশিং মেশিনে, যা হাতে ধুতে গেলে অনেকটা পরিশ্রম দরকার। তবে ওয়াশিং মেশিন আছে বলেই সব পোশাক সেখানে ঢুকিয়ে দিলাম, তা কিন্তু নয়! নির্দিষ্ট কিছু পোশাক আছে যা কখনোই ওয়াশিং মেশিনে দেওয়া উচিত নয়। এতে কাপড়ের ক্ষতি হতে পারে এবং টেকসই ক্ষমতা কমে যায়।

 

শুধু তাই নয়, ভুল উপায় অবলম্বনের কারণে কাপড়ের পাশাপাশি ওয়াশিং মেশিন নামক যন্ত্রটিরও ক্ষতি হতে পারে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক যেসব পোশাক ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যাবে না সে সম্পর্কে-

পোষা প্রাণীর পশম লেগে থাকা যে কোনো কাপড়
বাড়িতে যদি কুকুর-বিড়ালের মতো পোষা প্রাণী থাকে তাহলে ঘরের সবকিছুর মধ্যেই তাদের পশম খুঁজে পাওয়া অসম্ভব নয়, বিশেষ করে কাপড়ের মধ্যে তো থাকবেই। এসব কাপড় এক নিমিষে ওয়াশিং মেশিনের ভেতরে পুরে  দেওয়ার লোভ হলেও, তা করা যাবে না। কারণ কাপড় থেকে পশমগুলো উঠে গিয়ে কোথাও উধাও হয়ে যায় না। এগুলো ওয়াশিং মেশিনের মধ্যেই জড়িয়ে যায় কিংবা মেশিনের গায়ে লেগে থাকে যা অন্যান্য কাপড়ে লেগে যেতে পারে, অথবা ড্রেন আটকে যেতে পারে। তাই কাপড় ধোয়ার আগে কাপড়ে লেগে থাকা সব পশম তুলে ফেলতে হবে। এই  কাজে প্রাণীদের জন্য ব্যবহৃত ‘লিন্ট রোলারস’ ব্যবহার করতে পারেন।

ঢিলেঢালা অন্তর্বাস
ওয়াশিং মেশিনে অন্তর্বাস ধুতে দিলে সেগুলোর আকার-আকৃতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে এবং আরো ঢিলে হয় যায়। এছাড়া মেশিন ঘোরার সময় অন্তর্বাসের মেটালের আংটাগুলো ঘষা লেগে ক্ষয় হতে পারে, যা একই সঙ্গে মেশিনেরও ক্ষতি করে।

 

জিপার খোলা কাপড়
কোনো পোশাকের জিপার খুলে তা ধুতে দিতে জিপারের সঙ্গে অন্যান্য কাপড় আটকে যাবে এবং কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ওয়াশিং মেশিনের ড্রামের ভেতরেও স্ক্র্যাচ ফেলতে পারে। তাই জিপারযুক্ত কাপড় মেশিনে ধুতে দেওয়ার আগে জিপার লাগিয়ে দিন।

 

সাঁতারের পোশাক
আপনার সাঁতারের পোশাকের লেবেলে যদি লেখাও থাকে যে এটি মেশিনে ধোওয়া যাবে, তবুও তা হাতে ধোওয়া ভালো। কারণ এতে পোশাকটি বেশিদিন টেকসই হবে। অন্যদিকে, ওয়াশিং মেশিনে দিলে সাঁতারের পোশাক আরো ছড়িয়ে যাবে এবং ঢিলে হয়ে যাবে। অন্যান্য পোশাকের হুক-জিপারের সাথে লেগেও এটি নষ্ট হবার সম্ভাবনা বেশি।

 

জরি-পাথর বা লেসের কাজ করা পোশাক
সিক্যুইন্স, জরি-পাথর বসানো পোশাক ওয়াশিং মেশিনে দিলে তা নষ্ট হওয়া অনিবার্য। এমনকি আপনি পোশাকটি উল্টিয়ে মেশিনে দিলেও মেশিন ঘোরার সময় তা সোজা দিকে চলে আসতে পারে। এসব পাথর-জরি আঠা দিয়ে লাগানো থাকলে সেগুলো মেশিনের ঘষায় হালকা হয়ে উঠে যায়। লেসযুক্ত পোশাকের ক্ষেত্রেও একই কথা। এসব কাপড় ড্রাই ক্লিন করতে পারলেই সবচেয়ে ভালো।

 

ভারি কাপড়
কোনো একটি ব্যবহার্য বস্তুই যদি পানিতে ভিজে অনেক ভারি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে ভারসাম্য নষ্ট হয়। মেশিন ঠিকঠাক ঘুরতে পারে না এবং মেশিনেরই ক্ষতি হয়।

 

নরম তন্তুর সোয়েটার
পশমি সোয়েটার বা  এ ধরনের অন্য সব সোয়েটারই হাতে ধোওয়ার নিয়ম। মেশিনে দিলে এগুলো তন্তু দুর্বল হয়ে যায়। হাত দিয়ে টানলে সেসব কাপড় আরো লম্বা হয় এবং কাপড়ের স্বাভাবিক আকার নষ্ট হয়ে যায়। আবার মেশিনের তাপে সেই তন্তু সংকুচিতও হতে পারে।

 

টাই
গলায় বাঁধার টাই আমরা প্রায়ই পরিষ্কার করি না, কিন্তু যেহেতু প্রতিদিন ব্যবহার করতে হয়, এগুলো আসলে পরিষ্কার করা উচিত। কিন্তু টাই বেশিরভাগ সময়ই সিল্ক বা উলের তৈরি হয়ে বলে খুব নাজুক থাকে। এগুলো মেশিনে ধুলে সংকুচিত হতে পারে এবং নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সূত্র: টমস গাইড

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com