মিতু হত্যা: বাবার মামলার প্রতিবেদন গ্রহণের শুনানি ২২ ফেব্রুয়ারি

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণবিষয়ক শুনানি পিছিয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি এ শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

 

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী শুনানির জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

 

তিনি বলেন, মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গত ২৫ জানুয়ারি আদালতে দাখিল করেছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেটির গ্রহণবিষয়ক শুনানি ছিল আজ। কিন্তু মামলার বাদী মোশাররফ হোসেন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত ২২ ফেব্রুয়ারি শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।

 

এদিকে বাবুল আক্তারের পক্ষে আদালতে পৃথক দুটি আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া মোশাররফ হোসেনের মামলার ডকেট বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য পিবিআই যে আবেদন করেছে, তা খারিজ করার জন্য বাবুল আক্তারের পক্ষে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলার ডকেট প্রথম মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়টি আইনগতভাবে বৈধ নয় বলে বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদন করেছি। এ দুটি আবেদনের শুনানিও ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

 

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই। পিবিআই জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবা মোশাররফের মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলাতে পারে না। সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলবে।

 

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার ও মিতুর বাবা বাদী হয়ে পৃথক সময়ে দুটি মামলা করেন পাঁচলাইশ থানায়। এ দুটি মামলা তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। এর মধ্যে বাবুল আক্তারের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে। অধিকতর তদন্ত চলাকালে আদালতের আদেশে ৯ জানুয়ারি বাবুল আক্তারকে নিজের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন না নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। মিতুর বাবার করা মামলাটিও তদন্ত করছে পিবিআই।

 

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার (১১ মে) ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

 

পরে ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। স্ত্রী মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। তারপর তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মিতু হত্যা: বাবার মামলার প্রতিবেদন গ্রহণের শুনানি ২২ ফেব্রুয়ারি

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণবিষয়ক শুনানি পিছিয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি এ শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

 

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী শুনানির জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

 

তিনি বলেন, মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গত ২৫ জানুয়ারি আদালতে দাখিল করেছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেটির গ্রহণবিষয়ক শুনানি ছিল আজ। কিন্তু মামলার বাদী মোশাররফ হোসেন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত ২২ ফেব্রুয়ারি শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।

 

এদিকে বাবুল আক্তারের পক্ষে আদালতে পৃথক দুটি আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া মোশাররফ হোসেনের মামলার ডকেট বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য পিবিআই যে আবেদন করেছে, তা খারিজ করার জন্য বাবুল আক্তারের পক্ষে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলার ডকেট প্রথম মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়টি আইনগতভাবে বৈধ নয় বলে বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদন করেছি। এ দুটি আবেদনের শুনানিও ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

 

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই। পিবিআই জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবা মোশাররফের মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলাতে পারে না। সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলবে।

 

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার ও মিতুর বাবা বাদী হয়ে পৃথক সময়ে দুটি মামলা করেন পাঁচলাইশ থানায়। এ দুটি মামলা তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। এর মধ্যে বাবুল আক্তারের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে। অধিকতর তদন্ত চলাকালে আদালতের আদেশে ৯ জানুয়ারি বাবুল আক্তারকে নিজের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন না নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। মিতুর বাবার করা মামলাটিও তদন্ত করছে পিবিআই।

 

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার (১১ মে) ডেকে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

 

পরে ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। স্ত্রী মাহমুদা খানম (মিতু) হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। তারপর তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com