মানুষ সন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না : হানিফ

আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিএনপির দুর্নীতিবাজ নেতাদের কথায় এই বাংলাদেশ আর পিছনে ফিরবে না। দেশের মানুষ দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়াই দেশের মানুষের লক্ষ্য।

 

সোমবার চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

 

হানিফ বলেন, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াত। বিএনপি-জামায়াতকে উৎখাতের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল। আন্দোলন, সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।

 

টানা ১৪ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়ন, অগ্রগতিতে এগিয়ে কোথায় নিয়ে এসেছেন। সেই বিষয়ে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে জানিয়ে হানিফ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর এক বছর বাকি আছে। ২০০৯ সালে জনগণের নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট নিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই বাংলাদেশকে আজ কোথায় নিয়ে এসেছেন। আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে। জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। কী ছিল আর কোথায় এসেছি, মানুষকে জানাতে হবে।

 

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ৬০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। আমাদের এতো অর্থ ছিল না আমদানির। রিলিফ আনতে হতো। রিলিফ মানেই ভিক্ষা, সাহায্য। বিশ্বের মানুষ আমাদের ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে চিনতো। মধ্যপ্রাচ্যে পরিচিত ছিলাম মিসিকিনের জাতি হিসেবে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। মাত্র তিন বছরে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আজ আমরা ভিক্ষুকের জাতি নই; আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে পরিচিত। আমাদের এই পরিচয় এনে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

 

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, বিএনপি নেতারা আজ অনেক সুরে কথা বলেন। সরকার হঠাতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন। তারা বলছেন- ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। বাংলাদেশকে পিছনে নিয়ে যাও। হত্যা, খুন ও জঙ্গিদের পৃষ্টপোষকতা করা তাদের পলাতক নেতা তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে চলে গিয়েছিল। এখন আবার খায়েশ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হবার।

 

বাংলাদেশকে বিএনপি নেতা কোন পিছনে নিয়ে যেতে চান এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় যখন ছিলেন দেশকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন আপনারা? আপনারা কি আমাদের আবার খাদ্য ঘাটতির দেশে নিয়ে যেতে চান? মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র বানাতে দিবে না।

 

আওয়ামী লীগ সরকার রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে, দেশ শেষ করে দিয়েছে- বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনাদের (বিএনপি) সময়ে দেশের রিজার্ভ কত ছিল? রিজার্ভের কথা বলার আগে লজ্জা হওয়া উচিত। মাত্র মাত্র ৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল। তখন দেশ ধ্বংস হয়নি, আর এখন দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের মাথাপিছু আয় কতো ছিল? ৬শ’ ডলারের নিচে আর আজ মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ২৯০০ ডলার। বিএনপির সময়ে রফতানি আয় ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে। আজ দেশের রফতানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

ফরেন রেমিটেন্স বেড়েছে। চরম দরিদ্র দেশকে বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। এসব উন্নয়ন বিএনপির ভালো লাগে না- বলেন তিনি।

 

বিএনপির সময়ে বাংলাদেশ কোন অবস্থায় ছিল স্মরণ করার জন্য দেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, দুর্নীতির বরপুত্র ছিল তারেক রহমান। যত আন্তর্জাতিক টেন্ডার হতো সবকিছুর কমিশন হাওয়া ভবনে দিতে হতো। কমিশন ছাড়া কোনো কাজ হয়নি। এই তারেক সন্ত্রাসীদর গডফাদার ছিল। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানিয়ে ছিল। বাংলা ভাইসহ জেএমবির সদস্যরা প্রত্যেকে কাঁদে অস্ত্র নিয়ে পুলিশ প্রটেকশনে প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। দেশকে উগ্র জঙ্গিবাদ, মৌলবাদে চারণভূমি বানিয়েছিল। ২০০৬ সালে বিবিসি অনলাইন এক রিপোর্টে বলেছিল- বাংলাদেশে ছোট-বড় ১২৫টি জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব আছে। জঙ্গিদের অনেকে সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেছিলেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তারেক রহমান।

 

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দেশের দুই-এক জায়গা গোলযোগ করে দলের কর্মী মারা যাওয়ার ঘটনায় মির্জা ফখরুল সাহেব কান্না করে বলছেন, সরকার নাকি নির্যাতন করছে। ২০০১-০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব তখন কোথায় ছিল গণতন্ত্র, মানবতা। ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্যাতন করেছেন।

 

বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কার জন্য মায়াকান্না করেন? ক্ষমতায় থাকতে যে পাপ কাজ করেছেন। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। আপনার নেত্রী খালেদা জিয়া একটি মামলায় দণ্ড হয়ে কারাগারে। শেখ হাসিনার মানবতায় তিনি এখন বাসায় আছেন। আর এই খালেদাই আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন। হামলা পর বলেছিলেন- শেখ হাসিনাকে কে মারতে যাবে। খালেদা জিয়ার মতো নিষ্ঠুর, পিশাচিনী বাংলার মাটিতে আর নেই।

 

বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতির মূল কাণ্ডারি আওয়ামী লীগ উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশীদার। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছিল। ৯ মাস যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। স্বাধীনতার একক কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের।

 

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্নত, বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। বাংলাদেশকে চরম দরিদ্র থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।

 

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ প্রমুখ।

 

সম্মেলন উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দীন আহমেদ। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাঈম পাটওয়ারী দুলাল।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিশ্ববিদ্যালয়ে যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়নের তাগিদ রাষ্ট্রপতির

» অনলাইন নিউজপোর্টালের বিজ্ঞাপন নীতিমালা শিগগিরই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

» চিড়িয়াখানায় হাতির আক্রমণে মৃত্যু, নিহতের পরিবারের পাশে এমপি নিখিল

» লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ৩ পদে ১৬ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল 

» দীর্ঘ ২৭ বছর পর বাড়ি ফিরলেও আশাহত শাহীদা

» হত্যা মামলার ৬ পলাতক আসামিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার

» সরকারের অব্যবস্থাপনায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে: মির্জা ফখরুল

» উচ্ছেদ নিয়ে ব্যবসায়ীরা মিথ্যা বলছে : বঙ্গবাজার মালিক সমিতি

» বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দর্জির মৃত্যু

» তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল করার তৎপরতা চলছে: হানিফ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মানুষ সন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না : হানিফ

আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিএনপির দুর্নীতিবাজ নেতাদের কথায় এই বাংলাদেশ আর পিছনে ফিরবে না। দেশের মানুষ দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়াই দেশের মানুষের লক্ষ্য।

 

সোমবার চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

 

হানিফ বলেন, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াত। বিএনপি-জামায়াতকে উৎখাতের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল। আন্দোলন, সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।

 

টানা ১৪ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়ন, অগ্রগতিতে এগিয়ে কোথায় নিয়ে এসেছেন। সেই বিষয়ে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে জানিয়ে হানিফ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর এক বছর বাকি আছে। ২০০৯ সালে জনগণের নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট নিয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই বাংলাদেশকে আজ কোথায় নিয়ে এসেছেন। আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে। জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। কী ছিল আর কোথায় এসেছি, মানুষকে জানাতে হবে।

 

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ৬০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। আমাদের এতো অর্থ ছিল না আমদানির। রিলিফ আনতে হতো। রিলিফ মানেই ভিক্ষা, সাহায্য। বিশ্বের মানুষ আমাদের ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে চিনতো। মধ্যপ্রাচ্যে পরিচিত ছিলাম মিসিকিনের জাতি হিসেবে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। মাত্র তিন বছরে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আজ আমরা ভিক্ষুকের জাতি নই; আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে পরিচিত। আমাদের এই পরিচয় এনে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

 

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, বিএনপি নেতারা আজ অনেক সুরে কথা বলেন। সরকার হঠাতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন। তারা বলছেন- ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। বাংলাদেশকে পিছনে নিয়ে যাও। হত্যা, খুন ও জঙ্গিদের পৃষ্টপোষকতা করা তাদের পলাতক নেতা তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি থেকে চলে গিয়েছিল। এখন আবার খায়েশ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হবার।

 

বাংলাদেশকে বিএনপি নেতা কোন পিছনে নিয়ে যেতে চান এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় যখন ছিলেন দেশকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন আপনারা? আপনারা কি আমাদের আবার খাদ্য ঘাটতির দেশে নিয়ে যেতে চান? মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র বানাতে দিবে না।

 

আওয়ামী লীগ সরকার রিজার্ভ খেয়ে ফেলেছে, দেশ শেষ করে দিয়েছে- বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনাদের (বিএনপি) সময়ে দেশের রিজার্ভ কত ছিল? রিজার্ভের কথা বলার আগে লজ্জা হওয়া উচিত। মাত্র মাত্র ৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল। তখন দেশ ধ্বংস হয়নি, আর এখন দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের মাথাপিছু আয় কতো ছিল? ৬শ’ ডলারের নিচে আর আজ মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ২৯০০ ডলার। বিএনপির সময়ে রফতানি আয় ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে। আজ দেশের রফতানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

ফরেন রেমিটেন্স বেড়েছে। চরম দরিদ্র দেশকে বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। এসব উন্নয়ন বিএনপির ভালো লাগে না- বলেন তিনি।

 

বিএনপির সময়ে বাংলাদেশ কোন অবস্থায় ছিল স্মরণ করার জন্য দেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, দুর্নীতির বরপুত্র ছিল তারেক রহমান। যত আন্তর্জাতিক টেন্ডার হতো সবকিছুর কমিশন হাওয়া ভবনে দিতে হতো। কমিশন ছাড়া কোনো কাজ হয়নি। এই তারেক সন্ত্রাসীদর গডফাদার ছিল। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানিয়ে ছিল। বাংলা ভাইসহ জেএমবির সদস্যরা প্রত্যেকে কাঁদে অস্ত্র নিয়ে পুলিশ প্রটেকশনে প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। দেশকে উগ্র জঙ্গিবাদ, মৌলবাদে চারণভূমি বানিয়েছিল। ২০০৬ সালে বিবিসি অনলাইন এক রিপোর্টে বলেছিল- বাংলাদেশে ছোট-বড় ১২৫টি জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব আছে। জঙ্গিদের অনেকে সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেছিলেন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে তারেক রহমান।

 

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দেশের দুই-এক জায়গা গোলযোগ করে দলের কর্মী মারা যাওয়ার ঘটনায় মির্জা ফখরুল সাহেব কান্না করে বলছেন, সরকার নাকি নির্যাতন করছে। ২০০১-০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব তখন কোথায় ছিল গণতন্ত্র, মানবতা। ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্যাতন করেছেন।

 

বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কার জন্য মায়াকান্না করেন? ক্ষমতায় থাকতে যে পাপ কাজ করেছেন। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। আপনার নেত্রী খালেদা জিয়া একটি মামলায় দণ্ড হয়ে কারাগারে। শেখ হাসিনার মানবতায় তিনি এখন বাসায় আছেন। আর এই খালেদাই আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন। হামলা পর বলেছিলেন- শেখ হাসিনাকে কে মারতে যাবে। খালেদা জিয়ার মতো নিষ্ঠুর, পিশাচিনী বাংলার মাটিতে আর নেই।

 

বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতির মূল কাণ্ডারি আওয়ামী লীগ উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম। বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশীদার। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছিল। ৯ মাস যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। স্বাধীনতার একক কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের।

 

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার উন্নত, বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। বাংলাদেশকে চরম দরিদ্র থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।

 

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ প্রমুখ।

 

সম্মেলন উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দীন আহমেদ। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নাঈম পাটওয়ারী দুলাল।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com