ইউক্রেনের চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের কাছে একটি হ্রদ থেকে পাওয়া গেছে দুই মাথা বিশিষ্ট এক আশ্চর্য মাছ। মাছটির দু’টি মুখ এবং ‘চারটি চোখ’ রয়েছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মাছটির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার।
বলা হচ্ছে, ২০১৭ সালে ওই হ্রদটিতে পারমাণবিক দূষণ ঘটেছিল। আর সেই দূষণের কারণেই উদ্ভটভাবে মাছটির শারীরিক বিকৃতি ঘটেছে। তবে, বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে নিশ্চিত নন। তাদের দাবি, দূষণের কারণেই মাছটির এরকম বিকৃতি ঘটেছে কি না জানতে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভিডিওতে মাছটিকে স্বাস্থ্যকর এবং সম্পূর্ণরূপে প্রাপ্তবয়স্ক বলে মনে হচ্ছে। কাজেই সম্ভবত পারমাণবিক দূষণের কারণে এটির এরকম অদ্ভুত শারীরিক বিকৃতির শিকার হয়নি। কারণ তেমন কিছু হলে শৈশবেই মাছটির মৃত্যু হতো।
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনার জীববিজ্ঞানী ড. টিমোথি মুসো বলেছেন, ‘বিকিরণ থেকে হওয়া অধিকাংশ অভিযোজনের ফলে আয়ু কমে যায়। ফলে তেমন কিছু হলে এতদিন বেঁচেই থাকার কথা নয় মাছটির। এই ধরনের অধিকাংশ অভিযোজিত প্রাণী এতদিন বাঁচে না যে সেটি এত বড় হবে।
ড. টিমোথি মুসো এর আগে চেরনোবিল এবং ফুকাশিমা – দুই জায়গাতেই প্রাণীদের ওপর পারমাণবিক দূষণের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলছেন, ‘গবেষণার সময় আমরা এরকম শত শত বা হাজার হাজার প্রাণী নিয়ে কাজ করি। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই মনে হতে পারে বিকিরণের কারণেই সেগুলোর বিকৃতি ঘটেছে। তবে, যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা ছাড়া তা নিশ্চিতভাবে বলা প্রায় অসম্ভব। যদি তেজস্ক্রিয়ভাবে দূষিত অন্য স্থানে এই ধরনের অভিযোজন আগে পরিলক্ষিত হয়, তাহলে অবশ্য বলা যায়।’
ভিডিওতে মাছটির দুটি মুখ ও চারটি চোখ আছে বলে মনে হলেও, বিজ্ঞানীদের অনেকে তা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, দ্বিতীয় যে মুখটি দেখা যাচ্ছে, সেটি আসলে একটি ক্ষত হতে পারে। পুরোপুরি নিরাময় না হওয়ায় ওই গর্তের মতো অংশ তৈরি হয়েছে।
তাদের মতে, মাথার ওপরে যে দ্বিতীয় জোড়া ‘চোখ’ দেখা যাচ্ছে, সেটি সম্ভবত চোখ নয়। সেগুলো মাছটির নাসারন্ধ্র। কারণ মাছটি এশিয়ান কার্প বলে মনে হচ্ছে। এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মাথার ওপরের দিকে নাসারন্ধ্র থাকে।
তবে বিজ্ঞানের এই তত্ত্ব বা পাল্টা তত্ত্বের মধ্যে ঢুকতে নারাজ অনলাইন ব্যবহারকারীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আশ্চর্য এই মাছটি নিয়ে আলোচনা চলছে। একজন লিখেছেন, ‘চেরনোবিলের কাছে মাছ ধরা বন্ধ করা উচিত।’
আরেকজন বলেছেন, ‘এটা আমার দেখা সবচেয়ে অস্বস্তিকর জিনিসগুলোর অন্যতম।