ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়ক ভয় এখন ৯৭ কিমি নিয়ে

বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনে বেজায় খুশি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া এক্সপ্রেস হয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে একটানে ভাঙ্গা পৌঁছে খুশিতে উদ্বেলিত মানুষের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেন মহাসড়ক। সায়েদাবাদ থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার মহাসড়ক পৌঁছাতে এক ঘণ্টা সময় লাগলেও ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার পৌঁছাতে লাগছে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। এ অবস্থায় পদ্মা সেতুর সুফল পুরোপুরি পেতে বরিশাল পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সার্চ ইঞ্জিন গুগলের হিসাবে বরিশাল থেকে পদ্মা পার হয়ে সড়কপথে ঢাকার দূরত্ব ১৭৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে বরিশাল থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার এবং ভাঙ্গা থেকে ঢাকার দূরত্ব ৮২ কিলোমিটার। ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত পুরো সড়কটি ফোর লেন এক্সপ্রেসওয়ে। আগে সড়কপথে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতে সময় লাগত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। পদ্মার দুই তীরে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অলস সময় কাটত যানবাহনের। ২৬ জুন পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হওয়ায় এখন পৌঁছানো যাচ্ছে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায়। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে যানবাহন। কিন্তু ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটারে তাদের গড় গতিসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। এই ৯৭ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেন মহাসড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগছে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। এই রুটের বাস চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়কে গতি নিয়ে নিশ্চিন্তে গাড়ি চালানো যায়। ভাঙ্গার পর বরিশাল পর্যন্ত সড়কে প্রতিটি মুহূর্ত দুশ্চিন্তা ভর করে। সরু এই রাস্তায় পথচারীসহ বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন গতির যান চলাচল করে। যানাবাহনের অধিক চাপ। ওভারটেকিং কিংবা ক্রসিং করা ঝুঁকিপূর্ণ। সড়কের পাশে মাটি নেই। একটি রিকশা অতিক্রম করতে গেলেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এ কারণে মহাসড়কে গতি নিয়ে চলা যায় না। বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটের সৌদিয়া পরিবহনের স্থানীয় কাউন্টার ইনচার্জ মো. ইমাম হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে অবশ্যই বরিশালের মানুষ খুশি। সেতুর সুফল পুরোপুরি পেতে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক নির্মাণ করতে হবে। বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু বরিশালের মানুষের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। সড়কপথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে সময় অনেক কমেছে। বরিশাল থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক নির্মিত হলে ঢাকা যাতায়াতে আরও এক ঘণ্টা সময় কমবে। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী এই ফোর লেন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করেন তিনি। ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা সিক্স লেন প্রকল্পের বরিশাল অংশের মুখপাত্র এবং বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। চাপ সামলাতে সড়কের বাঁক-বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফোর লেনের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

 

ভূমি অধিগ্রহণের পর অর্থের জোগান পাওয়া গেলে টেন্ডারিং শুরু হবে।

 

এ বিষয়ে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন-উল আহসান বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ বাড়বে তা আগেই অনুমেয় ছিল। এই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা ফোর লেন বাস্তবায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সড়ক বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে। বিভাগীয় প্রশাসনও বিষয়টি মনিটর করছে।

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশনা রাজনৈতিক : ইসি আলমগীর

» রেললাইনে মোবাইলফোনে কথার সময় ট্রেনের ধাক্কায় রেল কর্মচারীর মৃত্যু

» ১৭ বছর বয়সে অভিনয়ে হাতেখড়ি, এখন তিনি কয়েকশো কোটি টাকার মালিক

» তীব্র গরমে উচ্চ আদালতে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না

» নিবন্ধন ও আবেদনের বাইরে থাকা পোর্টালগুলো বন্ধ করা হবে : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

» জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান আইজিপির

» ইরানে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে মুখে কুলুপ বাইডেন প্রশাসনের

» দেশীয় অস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেফতার

» দুইটি অভিযানে ১৮ কেজি গাঁজাসহ দুইজন গ্রেফতার

» তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল-কলেজে ৭ দিনের ছুটি ঘোষণা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়ক ভয় এখন ৯৭ কিমি নিয়ে

বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনে বেজায় খুশি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া এক্সপ্রেস হয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে একটানে ভাঙ্গা পৌঁছে খুশিতে উদ্বেলিত মানুষের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেন মহাসড়ক। সায়েদাবাদ থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার মহাসড়ক পৌঁছাতে এক ঘণ্টা সময় লাগলেও ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার পৌঁছাতে লাগছে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। এ অবস্থায় পদ্মা সেতুর সুফল পুরোপুরি পেতে বরিশাল পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সার্চ ইঞ্জিন গুগলের হিসাবে বরিশাল থেকে পদ্মা পার হয়ে সড়কপথে ঢাকার দূরত্ব ১৭৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে বরিশাল থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৯৭ কিলোমিটার এবং ভাঙ্গা থেকে ঢাকার দূরত্ব ৮২ কিলোমিটার। ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত পুরো সড়কটি ফোর লেন এক্সপ্রেসওয়ে। আগে সড়কপথে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতে সময় লাগত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। পদ্মার দুই তীরে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অলস সময় কাটত যানবাহনের। ২৬ জুন পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হওয়ায় এখন পৌঁছানো যাচ্ছে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায়। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে যানবাহন। কিন্তু ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটারে তাদের গড় গতিসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। এই ৯৭ কিলোমিটার সিঙ্গেল লেন মহাসড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগছে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। এই রুটের বাস চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়কে গতি নিয়ে নিশ্চিন্তে গাড়ি চালানো যায়। ভাঙ্গার পর বরিশাল পর্যন্ত সড়কে প্রতিটি মুহূর্ত দুশ্চিন্তা ভর করে। সরু এই রাস্তায় পথচারীসহ বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন গতির যান চলাচল করে। যানাবাহনের অধিক চাপ। ওভারটেকিং কিংবা ক্রসিং করা ঝুঁকিপূর্ণ। সড়কের পাশে মাটি নেই। একটি রিকশা অতিক্রম করতে গেলেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এ কারণে মহাসড়কে গতি নিয়ে চলা যায় না। বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটের সৌদিয়া পরিবহনের স্থানীয় কাউন্টার ইনচার্জ মো. ইমাম হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে অবশ্যই বরিশালের মানুষ খুশি। সেতুর সুফল পুরোপুরি পেতে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক নির্মাণ করতে হবে। বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু বরিশালের মানুষের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। সড়কপথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে সময় অনেক কমেছে। বরিশাল থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক নির্মিত হলে ঢাকা যাতায়াতে আরও এক ঘণ্টা সময় কমবে। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী এই ফোর লেন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি করেন তিনি। ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা সিক্স লেন প্রকল্পের বরিশাল অংশের মুখপাত্র এবং বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। চাপ সামলাতে সড়কের বাঁক-বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফোর লেনের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

 

ভূমি অধিগ্রহণের পর অর্থের জোগান পাওয়া গেলে টেন্ডারিং শুরু হবে।

 

এ বিষয়ে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন-উল আহসান বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ বাড়বে তা আগেই অনুমেয় ছিল। এই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা ফোর লেন বাস্তবায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সড়ক বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে। বিভাগীয় প্রশাসনও বিষয়টি মনিটর করছে।

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com