ভাগ্য খুলতে পারে লক্ষাধিক বাংলাদেশিসহ ৮০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টের

কংগ্রেসে বাংলাদেশি তথা ইমিগ্র্যান্টদের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে পরিচিত গ্রেস মেং-সহ ৪৯ কংগ্রেসম্যান সম্মিলিতভাবে সম্প্রতি ‘দ্য রিনিউইং ইমিগ্রেশন প্রভিশন্স অব দ্য ইমিগ্রেশন এ্যাক্ট অব ১৯২৯’ নামক একটি বিল উঠিয়েছেন। এই বিল পাশ হলে লক্ষাধিক বাংলাদেশিসহ ৮০ লাখ কাগজপত্রহীন ইমিগ্র্যান্ট গ্রীণকার্ড পাবেন।

 

উল্লেখ্য, ১৯২৯ সাল অর্থাৎ ৯৩ বছর আগের এই বিধিতে বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারিদের নথিভুক্ত হয়ে গ্রীণকার্ডের আবেদনের যোগ্য হবার সর্বশেষ সময় ছিল ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। এরপর আর কখনোই এ সুবিধা বাড়ানো হয়নি। তবে ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের এক নির্দেশে বেশ কয়েক লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট গ্রীণকার্ড পেয়েছিলেন। তবে সেটি ছিল নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্যে। এর ১২ বছর পর প্রেসিডেন্ট বুশের আরেক নির্দেশে ২৪৫(আই) আরো কিছু ইমিগ্র্যান্ট ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্টের সুযোগ পেয়েছিলেন। অর্থাৎ বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর এসাইলাম/রিফ্যুজি হিসেবে আবেদন করে কোন সুবিধা পায়নি এমন ব্যক্তিবর্গের স্ত্রী/সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন হলে স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্টের সুযোগ পেয়েছেন।

 

বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশীও সেই বিশেষ নির্দেশের আওতায় গ্রীণকার্ডের পথ বেয়ে সিটিজেনশিপ পেয়েছেন। এরপর আর কোন সুযোগ আসেনি অবৈধদের স্বার্থে। এমনকি, ২৫/২৬ বছর আগে অর্থাৎ ছোট্টকালে মা-বাবার হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর এখন পর্যন্ত যেসব মা-বাবা গ্রীণকার্ড পাননি, সেই সব সন্তানেরাও ‘ড্যাকা’ নামক কর্মসূচিতে ঝুলে রয়েছেন। অথচ, এসব সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের আলো-বাতাসে বড় হয়েছেন।

 

ডেমক্র্যাটিক পার্টির এই কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত বিলটি হাউসে পাশ হলেও সিনেটে পাশের কোনো সম্ভাবনা কেউই দেখছে না। তবে, ইস্যুটি মানবিক হওয়ায় প্রেসিডেন্ট বুশের ন্যায় জো বাইডেনও বিশেষ নির্বাহী আদেশের কথা ভাবতে পারেন-এমনটি বলাবলি হচ্ছে। কারণ, ইমিগ্রেশনের আইনগুলো ঢেলে সাজাতে রাজপথ সরব রয়েছে ২০ বছর ধরেই। ডেমক্র্যাটরা বারবার অঙ্গিকার করেও তা বাস্তবায়নে আন্তরিক কোন উদ্যোগ নেয়নি। রিপাবলিকানরা অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের স্বার্থে কিছু করার অঙ্গিকার কখনো না করলেও ১৯৮৬ থেকে এখন পর্যন্ত দুই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টই কিছুটা হলেও করেছেন। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

 

২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমক্র্যাটরা হোয়াইট হাউজ এবং কংগ্রেসের আধিপত্য ধরে রাখার স্বার্থেই এমন একটি বিশেষ নির্বাহী আদেশের বিকল্প নেই বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। জানা গেছে, কংগ্রেসে যদি এই বিল পাশ হয় তাহলে যারা বহুদিন যাবত যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন, কোন অপরাধে দণ্ডিত হননি, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, ক্ষেত-খামারে শ্রম দিয়ে খাবার টেবিল সাজাতে সহায়তা দিচ্ছেন, শিক্ষা দিচ্ছেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজের জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে রনাঙ্গনে গেছেন, করোনাকালেও রোগীর সেবা করেছেন অথবা লকডাউনের সময় অসহায় মানুষের পাশে ছিলেন, পুলিশ, আর্মি ছাড়াও দমকল বাহিনীর মত অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস দিচ্ছেন, যাদের স্ত্রী/স্বামী যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারি সন্তান রয়েছে-তারাই পাবেন গ্রীণকার্ড। বিল উত্থাপনকারিরা মনে করছেন, প্রায় ৮০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টের সুযোগ সৃষ্টি হবে গ্রীণকার্ড পাবার।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিডিএস বাস্তবায়িত হলে ম্যাপ সংযুক্ত মালিকানা ভিত্তিক খতিয়ান চালু করা সম্ভব হবে – ভূমিমন্ত্রী

» বিএটি বাংলাদেশের ৫১তম এজিএম অনুষ্ঠিত

» ইসলামপুরে কৃষকরা পেল উন্নত মানের বীজ

» ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের কাস্টোডিয়াল সার্ভিস চুক্তি

» এপেক্স ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট কাউন্সিল”এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কমিটি গঠিত

» ২ লাখ টাকার ফ্যামিলি ট্রিপের সেরা ঈদ অফার দিচ্ছে রিয়েলমি

» ঘূর্ণিঝড়ে আলফাডাঙ্গার ২২ গ্রাম বিধ্বস্ত

» প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আগামীকাল

» আইপিইউর এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের চেয়ারম্যান হলেন স্পিকার

» এক শহরের মধ্যে দুই দেশ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ভাগ্য খুলতে পারে লক্ষাধিক বাংলাদেশিসহ ৮০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টের

কংগ্রেসে বাংলাদেশি তথা ইমিগ্র্যান্টদের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে পরিচিত গ্রেস মেং-সহ ৪৯ কংগ্রেসম্যান সম্মিলিতভাবে সম্প্রতি ‘দ্য রিনিউইং ইমিগ্রেশন প্রভিশন্স অব দ্য ইমিগ্রেশন এ্যাক্ট অব ১৯২৯’ নামক একটি বিল উঠিয়েছেন। এই বিল পাশ হলে লক্ষাধিক বাংলাদেশিসহ ৮০ লাখ কাগজপত্রহীন ইমিগ্র্যান্ট গ্রীণকার্ড পাবেন।

 

উল্লেখ্য, ১৯২৯ সাল অর্থাৎ ৯৩ বছর আগের এই বিধিতে বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারিদের নথিভুক্ত হয়ে গ্রীণকার্ডের আবেদনের যোগ্য হবার সর্বশেষ সময় ছিল ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। এরপর আর কখনোই এ সুবিধা বাড়ানো হয়নি। তবে ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের এক নির্দেশে বেশ কয়েক লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট গ্রীণকার্ড পেয়েছিলেন। তবে সেটি ছিল নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্যে। এর ১২ বছর পর প্রেসিডেন্ট বুশের আরেক নির্দেশে ২৪৫(আই) আরো কিছু ইমিগ্র্যান্ট ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্টের সুযোগ পেয়েছিলেন। অর্থাৎ বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর এসাইলাম/রিফ্যুজি হিসেবে আবেদন করে কোন সুবিধা পায়নি এমন ব্যক্তিবর্গের স্ত্রী/সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন হলে স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্টের সুযোগ পেয়েছেন।

 

বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশীও সেই বিশেষ নির্দেশের আওতায় গ্রীণকার্ডের পথ বেয়ে সিটিজেনশিপ পেয়েছেন। এরপর আর কোন সুযোগ আসেনি অবৈধদের স্বার্থে। এমনকি, ২৫/২৬ বছর আগে অর্থাৎ ছোট্টকালে মা-বাবার হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর এখন পর্যন্ত যেসব মা-বাবা গ্রীণকার্ড পাননি, সেই সব সন্তানেরাও ‘ড্যাকা’ নামক কর্মসূচিতে ঝুলে রয়েছেন। অথচ, এসব সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের আলো-বাতাসে বড় হয়েছেন।

 

ডেমক্র্যাটিক পার্টির এই কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত বিলটি হাউসে পাশ হলেও সিনেটে পাশের কোনো সম্ভাবনা কেউই দেখছে না। তবে, ইস্যুটি মানবিক হওয়ায় প্রেসিডেন্ট বুশের ন্যায় জো বাইডেনও বিশেষ নির্বাহী আদেশের কথা ভাবতে পারেন-এমনটি বলাবলি হচ্ছে। কারণ, ইমিগ্রেশনের আইনগুলো ঢেলে সাজাতে রাজপথ সরব রয়েছে ২০ বছর ধরেই। ডেমক্র্যাটরা বারবার অঙ্গিকার করেও তা বাস্তবায়নে আন্তরিক কোন উদ্যোগ নেয়নি। রিপাবলিকানরা অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের স্বার্থে কিছু করার অঙ্গিকার কখনো না করলেও ১৯৮৬ থেকে এখন পর্যন্ত দুই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টই কিছুটা হলেও করেছেন। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

 

২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমক্র্যাটরা হোয়াইট হাউজ এবং কংগ্রেসের আধিপত্য ধরে রাখার স্বার্থেই এমন একটি বিশেষ নির্বাহী আদেশের বিকল্প নেই বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। জানা গেছে, কংগ্রেসে যদি এই বিল পাশ হয় তাহলে যারা বহুদিন যাবত যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন, কোন অপরাধে দণ্ডিত হননি, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, ক্ষেত-খামারে শ্রম দিয়ে খাবার টেবিল সাজাতে সহায়তা দিচ্ছেন, শিক্ষা দিচ্ছেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিজের জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে রনাঙ্গনে গেছেন, করোনাকালেও রোগীর সেবা করেছেন অথবা লকডাউনের সময় অসহায় মানুষের পাশে ছিলেন, পুলিশ, আর্মি ছাড়াও দমকল বাহিনীর মত অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস দিচ্ছেন, যাদের স্ত্রী/স্বামী যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারি সন্তান রয়েছে-তারাই পাবেন গ্রীণকার্ড। বিল উত্থাপনকারিরা মনে করছেন, প্রায় ৮০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টের সুযোগ সৃষ্টি হবে গ্রীণকার্ড পাবার।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com