দেলোয়ার হোসেন লাইফ : বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি: জীবনের সবটুকু সময় ব্যয় করেছেন বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে। দলীয় সকল কার্যক্রমে রেখেছেন সক্রিয় ভূমিকা। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে সইতে হয়েছে হামলা এবং মামলা। আজ তিনি মৃত্যু শয্যায়। খোঁজ নেয়নি দলীয় কোন নেতা কর্মী। হ্যাঁ, বলছি বড়াইগ্রাম উপজেলার ০১নং জোয়াড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ভবানীপুর গ্রামের আলী আকবর মিন্টু এর কথা। তিনি একসময়ের বিশিষ্ট সম্পদশালী সিদ্দিক আলী মিয়া এর ৪র্থ পুত্র। তিনি উপজেলা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে। অবদান রেখেছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। যেকোনো বিষয়ে ছুটে গেছেন অসহায় মানুষের পাশে। আজ তিনি বার্ধক্য জনিত বিভিন্ন দূরারোগ্যে সয্যা শায় , গত দুই মাস রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থেকে বর্তমানে বাড়িতে বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে প্রতি নিয়ত। জীবনের এই অন্তিম লগ্নে পরিবার আর প্রতিবেশী ছাড়া খোঁজ নেয়নি কোন দলীয় নেতা।
বাবা সম্পদশালী হওয়ার সুবাদে আলী আকবর মিন্টু যৌবনে পড়াশোনার পাশাপাশি করতেন খেলাধুলা। দেশের প্রথম বিভাগ ফুটবলে দেশের সুনাম ধন্য ক্লাবসহ দেশ ও বিদেশের মাটিতে লাল সবুজের এই পতাকার সুনাম কুড়িয়েছেন। বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে কোচ এবং রেফারিং এর দায়িত্ব পালন করছেন সুনামের সাথে। বাংলাদেশের প্রথম বিভাগ ফুটবলের সাবেক খেলোয়াড়, কোচ এবং রেফারি হওয়ায় অবসরে সরকারি ভাবে সামান্য কিছু ভাতা পেতেন, সেটাও গত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্ধ হয়ে যায়।
আলী আকবর মিন্টু জীবনে কখনো অসৎ উপার্জন করেন নি, ক্ষতি করেনি কোন মানুষের। সৎ ভাবে জীবন যাপন করতে গিয়ে সংসার চলেছে টানা পড়ায়। বর্তমানে তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছে পরিবার। তবুও কোন অনুদান বা সাহায্য চাননা তিনি, একটু সহানুভূতি না পাওয়ার বেদনা কুরে কুরে খাচ্ছে বিছানায় পড়ে মৃত্যুর প্রহর গোনা এই মানুষটিকে।
আলী আকবর মিন্টুর একমাত্র ছেলে সোহাগ জানান, আমার বাবা সারাজীবন মানুষের উপকার করেছেন, সক্রীয় ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, গত কয়েক মাসে ২/১ জন ছাড়া আমার বাবার কেউ খোঁজ নেয়নি, এই দুঃসময়ে আমাদের পাশে কেউ নেই। বিষয়টি খুব হতাশা জনক। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বাবার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন।
ভবানীপুর (জিয়া নগর) এর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এনামুল হক জানান, মিন্টু ভাই বিএনপির একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা, ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর অসুস্থ শরীরে ৬ আগষ্ট আনন্দ মিছিলে যোগ দেয়, সারাজীবন বিএনপির সকল প্রোগ্রামে সক্রীয় ভূমিকা রেখেছেন। সে গত ৩/৪ মাস হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন অথচ দলীয় কোন নেতা তার খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি, এটা খুব দূঃখ জনক।
ভবানীপুরের বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও প্রবীণ ব্যক্তিত্ব আব্দুল মজিদ মোল্লা বলেন, আলী আকবর মিন্টু আমার সন্তানের মত, সুখে দুঃখে সব সময় পাশে থেকেছে, সৎ জীবন যাপন করেছে। আজ সে এবং তার পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে, আমি তার সুস্থতা কামনা করছি।
বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও জোয়াড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী বলেন, আমি নিজেও অসুস্থ, তবুও মিন্টুর খোঁজ নিয়েছি, অসুস্থতার কারণে সাক্ষাৎ করতে পারিনি, আমি তার পাশে থাকার চেষ্টা করবো।