বাণিজ্যের স্বার্থে সমুদ্রপথকে নিরাপদ রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

অবাধ বাণিজ্যের স্বার্থে সমুদ্রপথকে নিরাপদ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

আজ (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের ইনানীতে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় আন্তর্জাতিক নৌ-মহড়ার উদ্বোধনের সময় এই আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ হয় সমুদ্রপথে। তাই অবাধ বাণিজ্যের স্বার্থে এই পথকে নিরাপদ রাখতে হবে। সমুদ্রের অপার সম্ভাবনা উপলব্ধি করে সরকার এই খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সব সদস্য ও বীর শহিদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শান্তি বজায় ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমরা সর্বদা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহবস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। সেই নীতি মেনেই আমরা সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এই নীতিমালা মেনে চলি। আমাদের নিকট প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি সংঘাত নয়, সমঝোতা ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে যুদ্ধ করার জন্য নয়। আমাদের লক্ষ্য শান্তি বজায় রাখা, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

 

বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, শান্তি চায় এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধ যে মানবজাতির জন্য কী ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা তা নিজেরা দেখেছি। আর বর্তমানে চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা আপনারা অবলোকন করতে পারেন, অনুভব করতে পারেন। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আন্তর্জাতিক মহলেও সকলকে এই আহ্বান জানিয়েছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে’।

 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড হরাইজন’ এই উপজীব্যকে ধারণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত আইএফআর ২০২২ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যা সব সামুদ্রিক দেশের মধ্যে পরস্পর আস্থা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 

বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনার দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আইএফআর ২০২২ এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সমুদ্র ও সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা এবং পর্যটন সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন।

 

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে ইনানী সৈকতে পৌঁছান তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

 

সেখানে কর্মসূচি শেষে দুপুর ২টার পর শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জনসভায় যোগ দেবেন।

মঙ্গলবার ইনানীতে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সংস্থার অংশগ্রহণে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ আইএফআর-২০২২ শুরু হয়েছে।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আইএফআরের আয়োজন করে।

 

আইএফআর ২০২২ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্বের নৌ বাহিনীদের তাদের সক্ষমতা, নৌ-কূটনীতি, সদিচ্ছা ও সহযোগিতা প্রদর্শনের একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।

 

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কোনো সমস্যা হলে ট্রিপল নাইনে জানাতে বললেন আইজিপি

» নোয়াখালীর সেই পুকুরে এবার মিলল ৪০ রুপালি ইলিশ

» রমজানের তৃতীয় জুমায় বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ঢল

» রাজার আমন্ত্রণে ভুটান সফরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী

» কারিনা-কারিশমার রাজনীতিতে নামার গুঞ্জন

» ‘জিয়া মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানের দোসর ছিলেন’

» কবি মুক্তাদির চৌধুরী তরুণের ইন্তেকাল

» পুলিশের সোর্সকে চাকু মেরে হত্যা মামলার পলাতক দুই আসামি গ্রেফতার

» ব্যবহৃত অলংকারের জাকাত দিতে হবে কি?

» ফেসবুক দীর্ঘদিন লগ আউট না করলে কী হয়?

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বাণিজ্যের স্বার্থে সমুদ্রপথকে নিরাপদ রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

অবাধ বাণিজ্যের স্বার্থে সমুদ্রপথকে নিরাপদ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

আজ (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের ইনানীতে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় আন্তর্জাতিক নৌ-মহড়ার উদ্বোধনের সময় এই আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ হয় সমুদ্রপথে। তাই অবাধ বাণিজ্যের স্বার্থে এই পথকে নিরাপদ রাখতে হবে। সমুদ্রের অপার সম্ভাবনা উপলব্ধি করে সরকার এই খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সব সদস্য ও বীর শহিদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শান্তি বজায় ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমরা সর্বদা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহবস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। সেই নীতি মেনেই আমরা সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এই নীতিমালা মেনে চলি। আমাদের নিকট প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক সব দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি সংঘাত নয়, সমঝোতা ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হচ্ছে যুদ্ধ করার জন্য নয়। আমাদের লক্ষ্য শান্তি বজায় রাখা, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

 

বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, শান্তি চায় এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধ যে মানবজাতির জন্য কী ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা তা নিজেরা দেখেছি। আর বর্তমানে চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা, বীভৎসতা আপনারা অবলোকন করতে পারেন, অনুভব করতে পারেন। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আন্তর্জাতিক মহলেও সকলকে এই আহ্বান জানিয়েছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে’।

 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ফ্রেন্ডশিপ বিয়ন্ড হরাইজন’ এই উপজীব্যকে ধারণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত আইএফআর ২০২২ ইভেন্টটি আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। যা সব সামুদ্রিক দেশের মধ্যে পরস্পর আস্থা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 

বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনার দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আইএফআর ২০২২ এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সমুদ্র ও সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা এবং পর্যটন সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন।

 

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে ইনানী সৈকতে পৌঁছান তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

 

সেখানে কর্মসূচি শেষে দুপুর ২টার পর শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জনসভায় যোগ দেবেন।

মঙ্গলবার ইনানীতে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সংস্থার অংশগ্রহণে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ আইএফআর-২০২২ শুরু হয়েছে।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আইএফআরের আয়োজন করে।

 

আইএফআর ২০২২ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্বের নৌ বাহিনীদের তাদের সক্ষমতা, নৌ-কূটনীতি, সদিচ্ছা ও সহযোগিতা প্রদর্শনের একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।

 

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com